Thank you for trying Sticky AMP!!

'বাংলাদেশি সব চ্যানেল দেখানোর কথা ভাবা উচিত ভারতের'

কলকাতায় ‘ইন্দো-বাংলা সামিট ২০১৯’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের বেসরকারি চ্যানেলের অপারেটরদের বাংলাদেশের সব চ্যানেল দেখানোর কথা ভাবা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতের কলকাতায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, এখন পুরো বিশ্বে আকাশ অবারিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মানুষের জন্য খুলে দিয়েছে সেই আকাশ।

ইন্দো-বাংলা কাউন্সিল ফর কমার্শিয়াল, কালচারাল, এডুকেশনাল কো-অপারেশন আয়োজিত ‘ইন্দো-বাংলা সামিট ২০১৯’ শীর্ষক আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয় কলকাতার উপশহর নিউ টাউনের রবীন্দ্রতীর্থ মিলনায়তনে। এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন এই সংগঠন যাত্রা শুরু করেছে।

অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ভারত সরকার এবার সমগ্র ভারতে আমাদের বাংলাদেশ টেলিভিশন দেখানো শুরু করেছে। এতে আমরা খুশি। তবে ভারতের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল অপারেটররা বাংলাদেশি চ্যানেল দেখাচ্ছেন না। একেকটি বাংলাদেশি চ্যানেল দেখানোর জন্য পাঁচ কোটি রুপি দাবি করছেন। এটা কি সম্ভব? ভারতে বাংলাদেশি চ্যানেল দেখানো না হলেও বাংলাদেশে ভারতের চ্যানেল দেখানো হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ভারতের বেসরকারি চ্যানেলের অপারেটরদের বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত। এখন বিশ্বের আকাশ অবারিত। মানুষকে তো আর আটকে রাখা যাচ্ছে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম খুলে দিয়েছে আকাশ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ আর বাংলাদেশের ভাষা, সাহিত্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি এক। এখানের মানুষ বাংলায় কথা বলে। আমরা বাংলায় কথা বলি। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি এক হয়ে রয়েছে। তাই তো কলকাতায় এলে মনে করতে পারি না, আমি বাংলাদেশের বাইরের একটি দেশে আছি।’

বাংলা ভাষাকে অন্যতম সেরা উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি বিশ্বের অন্যতম সেরা। মেধার দিক থেকেও বাঙালিরা আজ বিশ্বজুড়ে মাথা তুলে আছে। শুধু বাঙালিদের জন্য বিশ্বে একটি দেশ হয়েছে, সেটি বাংলাদেশ। আর এই বাংলাদেশের বাংলা ভাষার আন্দোলনের জন্য আজ বিশ্বে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবাহী একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পেয়েছে। জাতিসংঘ সেই মর্যাদা দিয়েছে। আর স্বাধীন বাংলাদেশ হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অক্লান্ত সংগ্রামের ফসল।

ইন্দো–বাংলা সামিটে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে সম্মাননা দেওয়া হয়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

মন্ত্রী বলেন, আজ বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। স্বাবলম্বী হচ্ছে। ভারতও এগিয়ে আছে। এই অঞ্চলের সমৃদ্ধির জন্য দেশ দুটিকে আরও এগোতে হবে। তিনি বলেন, শিল্প, বাণিজ্য, শিক্ষা, পর্যটনক্ষেত্রে বাংলাদেশ দ্রুত এগোচ্ছে। বাংলাদেশে রয়েছে মনকাড়া বহু পর্যটনকেন্দ্র। কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত বিশ্বের সর্ব বৃহৎ সমুদ্রসৈকত। দেশজুড়ে ঐতিহাসিক নানা পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। এসব পর্যটনকেন্দ্রে ভারতের পর্যটকেরা এলে খুশি হবেন। বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন ধারণা নিতে পারবেন।

ভুয়া খবর নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এ সমস্যা আজ শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বজুড়ে। আর সোশ্যাল মিডিয়াই মূলত ভুয়া খবর বেশি ছড়ায়। আমরা চেষ্টা করছি ভুয়া খবর নিয়ন্ত্রণের।’

আয়োজক সংস্থার সভাপতি বনমালী ভৌমিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরী, পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি আবু তাহের কমরুদ্দিন, কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তারা।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ আজ শনিবার দুপুরে কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবাহী বেকার হোস্টেলে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকক্ষে যাবেন। সেখানে তিনি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে মাল্যদান করবেন। বিকেলে তিনি কলকাতা প্রেসক্লাবে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সেখান থেকে তিনি কলকাতার আইসিসিআরের বেঙ্গল গ্যালারিতে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ঘিরে তিন দিনব্যাপী এই চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উপহাইকমিশন।