Thank you for trying Sticky AMP!!

ভারতের লাদাখে অনশনরত বাস্তবের ‘র‌্যাঞ্চো’ সোনম ওয়াংচুক

লাদাখে চীন কত জমি দখল করেছে, দেখতে চান সেই ‘র‌্যাঞ্চো’

বলিউড সিনেমার নয়, বাস্তবের ‘র‌্যাঞ্চো’ সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) মিছিল করে গিয়ে দেখবেন, লাদাখের কত জমি ভারত হারিয়েছে। কত জমি চীন দখল করে রেখেছে। লাদাখের স্বার্থে রাজধানী লেহ্তে অনশনরত সোনম ওয়াংচুক গতকাল বুধবার এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

ম্যাগসাইসাই পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিবেশকর্মী ও শিক্ষাবিদ সোনম ওয়াংচুকের জীবনীর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছিল আমির খানের জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমা ‘থ্রি ইডিয়টস’। সিনেমায় তাঁর নাম ছিল ‘র‌্যাঞ্চো’। বাস্তবের সেই চরিত্র সোনম ওয়াংচুক লাদাখের স্বায়ত্তশাসন ও মর্যাদার দাবিতে ১৫ দিন ধরে অনশন করছেন। খোলা আকাশের নিচে তাঁর সঙ্গে অনশনে প্রতিদিন শামিল হচ্ছেন লাদাখের হাজার হাজার মানুষ।

ওয়াংচুক ও তাঁর সমর্থকদের দাবি, লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত করা হোক। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিধানসভা দেওয়া হোক। কেন্দ্রীয় সরকার লাদাখের পরিবেশ রক্ষায় উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

গতকাল বুধবার সোনম ওয়াংচুক বলেন, এলএসিতে মিছিল করে যেতে দুটি তারিখ ধার্য হয়েছে। ২৭ মার্চ ও ৭ এপ্রিল।

কেন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর মিছিল করতে চাইছেন লাদাখবাসী? সেই উত্তরও দিয়েছেন সোনম ওয়াংচুক। তিনি বলেন, ‘রাজ্যের মেষপালকেরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছেন যে আগে যত দূর পর্যন্ত তাঁরা যেতে পারতেন, ইদানীং তা পারছেন না। এলএসির কয়েক কিলোমিটার আগেই তাঁদের থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা সরেজমিনে দেখতে চাই, কতটা জমি হারিয়ে গেছে। কতটা সত্যিই বেদখল হয়ে গেছে।’

বিক্ষোভকারীরা চাইছেন প্যাংগং হ্রদের উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্ত, ডেমচুক, চুশুলসহ অন্যান্য এলাকায় মিছিল করে যেতে। তাঁদের কাছে খবর, ওই সব এলাকায় ‘সোলার পার্ক’ তৈরি করা হচ্ছে, যা ২০২০ সালের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আগপর্যন্ত মেষপালকদের চারণভূমি ছিল।

ওয়াংচুক বলেন, তাঁরা জানতে পেরেছেন যে ওই সব এলাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়তো তারা সেখানে খনন কাজ শুরু করবে। তিনি বলেন, মিছিল করে গিয়ে তাঁরা দেখতে চান, চীন কত জমি কবজা করে রেখেছে।

অবশ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একাধিকবার বলেছেন যে ভারতের এক ইঞ্চি জমিও কেউ দখল করেনি।

লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আক্রমণ করেছে কংগ্রেস। দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ‘এক্স’ হ্যান্ডলে লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী লাদাখবাসীর সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। দেখা যাচ্ছে, সেই প্রতিশ্রুতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা। ওই ভুয়া প্রতিশ্রুতির চরিত্র পুরোপুরি চীনা প্রকৃতির।

লাদাখের জমি যে চীন দখল করছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সে খবর সেখানকার মেষপালকেরাই দিয়ে আসছেন। কারগিলের ক্ষেত্রেও তা–ই হয়েছিল। পূর্ব লাদাখের গলওয়ানে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের পর ভারতের জমি চীন দখল করে রেখেছে, সে খবরও মেষপালকেরা প্রথম দিয়েছিলেন। এলএসিতে তাঁদের চারণভূমিতে যেতে বাধা দেওয়ার কথা তাঁরা বারবার বলেছেন।

লাদাখের বিজেপিদলীয় সংসদ সদস্য জামিয়াং শেরিং নামগিয়ালও একাধিকবার ওই অভিযোগ করেছেন। জমি হারানোর অভিযোগ তিনিও করেছিলেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিরোধী সদস্যরা লাদাখের অবস্থা খতিয়ে দেখতে প্রতিনিধিদল পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সরকার তা খারিজ করে দিয়েছে। ফলে লাদাখবাসীর এলএসিতে মিছিল করার অনুমতি কেন্দ্রীয় সরকার দেবে কি না, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে।