Thank you for trying Sticky AMP!!

মুখতার আনসারি

এবার উত্তর প্রদেশে কারাবন্দী রাজনীতিবিদ মুখতারের মৃত্যু, বিষপ্রয়োগে হত্যার দাবি পরিবারের

ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের কারাবন্দী রাজনীতিবিদ মুখতার আনসারি মারা গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বান্দা শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

চিকিৎসকেরা বলছেন, মুখতার হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে পরিবারের দাবি, তাঁকে কারাগারে ধীরে ধীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। মুখতার আনসারির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন শহরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

৬৩ বছর বয়সী মুখতার উত্তর প্রদেশের মৌ সদর বিধানসভা আসন থেকে ৫ বার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ ৬০টির বেশি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন ছিল। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন আদালতে আটটি মামলায় তাঁর নানা মেয়াদে সাজা হয়।

২০০৫ সাল থেকে কারাবন্দী ছিলেন মুখতার আনসারি। গতকাল রাতে তিনি কারাগারে জ্ঞান হারান। তাঁকে তখন বান্দা শহরের রানি দুর্গাবর্তী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েক ঘণ্টা পর চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

কট্টর বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথের উত্তর প্রদেশের প্রায়াগরাজে পুলিশি পাহারায় সাবেক সংসদ সদস্য আতিক আহমেদ ও তাঁর ভাই আশরাফকে ২০২৩ সালের এপ্রিলে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। উত্তর প্রদেশের প্রায়াগরাজে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ক্যামেরার সামনে এই দুই ভাইকে গুলি করা হয়। এবার কারাগারে মুখতারের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুখতারের মৃত্যুর কারণ হৃদ্‌রোগ বলে উল্লেখ করলেও মুখতার আনসারির ছেলে ও ভাই তদন্ত দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, মুখতারকে ধীর ধীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে।

মুখতারের ছেলে উমর আনসারি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুদিন আগে আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। কিন্তু আমাকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। অসুস্থ থাকার পরও তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পেট ফুলে যাওয়া কীভাবে হৃদ্‌রোগ হতে পারে। যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, তাতে আপনারা দেখতে পাবেন, তাঁর পেট ফুলে আছে। তাঁর অবস্থা গুরুতর। তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। তবে ১২-১৪ ঘণ্টা পর তাঁকে আবারও জেলে পাঠানো হয়।’

আজ শুক্রবার পাঁচ সদস্যের চিকিৎসক দল মুখতারের ময়নাতদন্ত করবে। বান্দা শহরের যে হাসপাতালে মুখতার মারা গেছেন, সেটির বাইরে বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মুখতার আনসারি মৌয়ের বাসিন্দা হলেও সংলগ্ন গাজিপুর ও বারানসিতে তাঁর বেশ প্রভাব আছে বলে মনে করা হয়। বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) সাবেক এই বিধায়কের গাজিপুরের বাড়ির সামনে ইতিমধ্যে অনেক মানুষ জড়ো হয়েছেন।

উত্তর প্রদেশ পুলিশের মহাপরিচালক প্রশান্ত কুমার বলেছেন, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রাজ্যজুড়ে সিআরপিসির (ফৌজদারি কার্যবিধি) ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পুলিশকে সহযোগিতা করতে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীকেও ডাকা হয়েছে। বান্দা, মৌ, গাজিপুর ও বারনাসিতে সিআরপিএফ-এর বিভিন্ন দল মোতায়েন করা হয়েছে। অনলাইনে কেউ যেন উসকানিমূলক কিছু ছড়াতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে উত্তর প্রদেশ পুলিশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম শাখাকে উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।