Thank you for trying Sticky AMP!!

উগ্রবাদীদের হামলায় আহত এক শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে

গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

ভারতের গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে গত শনিবার রাতে তারাবিহর নামাজ পড়ার সময় পাঁচ বিদেশি ছাত্রের ওপরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন বলে প্রতিষ্ঠানর ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, বাইরে থেকে একদল লোক ক্যাম্পাসে ঢুকে হিন্দুত্ববাদী স্লোগান দেয় এবং হোস্টেলে নামাজ বন্ধের দাবিতে ছাত্রদের ওপরে হামলা চালায়।

গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলার সত্যতা স্বীকার করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পাঁচজন নয়, আহত হয়েছেন দুজন শিক্ষার্থী।

১৯৪৯ সালে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইবার নিরাপত্তার এক ছাত্র আহমেদ ওয়ারিশ সাখা গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কোনো মসজিদ না থাকায় ১২ এশীয় ও আফ্রিকার শিক্ষার্থী তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট হোস্টেলে তারাবিহর নামাজ পড়ছিলেন।

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘নামাজ শুরু হওয়ার কিছু সময় পর একদল লোক হোস্টেলে ঢুকে “জয় শ্রীরাম” ধ্বনি দিতে শুরু করে। এরপর গলায় গেরুয়া রুমাল বাঁধা কয়েকজন আমাদের ধাক্কা দিতে শুরু করে এবং জিজ্ঞাসা করে, হোস্টেলে নামাজ পড়ার অনুমতি আমাদের কে দিয়েছে। এসব কথাবার্তা চলাকালে তারা ছুরি, পাথর ও ক্রিকেটের ব্যাট নিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করে। তাদের হামলায় বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়।’

হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন—আফগানিস্তানের হারুন জব্বার, তুর্কমেনিস্তানের আজাদ এবং শ্রীলঙ্কার খ্রিষ্টধর্মের অনুসারী শিক্ষার্থী মারিও। বাকি দুই ছাত্র আফ্রিকার নাগরিক।

আহমেদ ওয়ারিশ বলেন, ‘একটা পর্যায়ে হামলাকারীর সংখ্যা বাড়তে বাড়তে অন্তত ২০০ হয়ে যায়।

আমরা আতঙ্কিত হয়ে পুলিশ ডাকি। এক ঘণ্টা পরে পুলিশ আসে। গাড়ির আওয়াজ শুনে বেশির ভাগ হামলাকারী পালিয়ে যায়। যারা ছিল, পুলিশ তাদের দেখেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

আক্রান্ত শিক্ষার্থীরা বিদেশি ছাত্রদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

ভারতে বিরাট সংখ্যায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীও পড়তে আসেন। তাঁরা ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান ছাত্রবিনিময় কর্মসূচিতে। গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সহিংসতার ঘটনার নিন্দা করেছেন হায়দরাবাদের নেতা ও সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফেও বিষয়টি নিয়ে গত রোববার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল লিখেছেন, ‘শনিবার আহমেদাবাদের গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। রাজ্য সরকার দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। সংঘর্ষে দুই বিদেশি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

গুজরাট পুলিশ বলছে, তদন্তের জন্য ৯ সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে। অন্তত ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।