Thank you for trying Sticky AMP!!

সিরিয়ায় বিমান হামলায় ২৯ তুর্কি সেনা নিহত

গতকাল বৃহস্পতিবার সারাকেব নিয়ন্ত্রণ নিতে দেখা যায় তুর্কি সমর্থিত সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনীকে। ছবি: এএফপি

সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ইদলিব প্রদেশে সিরীয় বাহিনীর বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৯ জন তুর্কি সেনা নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তুর্কি সমর্থিত বিদ্রোহীরা সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর হাত থেকে সারাকেব পুনরায় দখলে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আজ শুক্রবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, তুরস্কের হাতায় প্রদেশের গভর্নর রাহমি দোগান সেনা মৃত্যুর এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হামলায় ইদলিবে বহু আহত হয়েছে। আহত সেনাদের চিকিৎসার জন্য তুরস্কে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তবে অন্যান্য খবরে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, গতকাল সন্ধ্যায় বিমান হামলায় তুরস্কের ৩৪ জন সেনা নিহত হয়েছেন।

রাশিয়া সমর্থিত সিরীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে তুরস্ক প্রতিশোধমূলক হামলা চালাচ্ছে।

সিরীয় বাহিনী বিদ্রোহীদের কাছ থেকে ইদলিবকে পুনরায় দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

ইদলিবে সবশেষ এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি সিরিয়া কর্তৃপক্ষ। সারাকেবের আগে শুধু ইদলিব প্রদেশই বিরোধীদের দখলে ছিল।

তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় নিরাপত্তা পর্যায়ের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জরুরি বৈঠকের পর তুর্কি বাহিনী পাল্টা হামলা চালানো শুরু করে। এরদোয়ানের দাবি, তুরস্ক যেখানে সামরিক পর্যবেক্ষণচৌকি স্থাপন করেছে, সেখান থেকে সিরীয় বাহিনী সরে যাক। এর আগে তিনি সিরীয় বাহিনী আগে বাড়া বন্ধ না করলে হামলার হুমকি দেন।

তবে সিরিয়া সরকার এবং রাশিয়া ২০১৮ সালের চুক্তি অনুসারে যুদ্ধবিরতি রেখা থেকে সরে যাওয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। বরং আর্টিলারি অস্ত্র দিয়ে বিদ্রোহীদের সহায়তা করে তুরস্ক ২০১৮ সালের অস্ত্রবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া।

তুরস্কের যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক ফাহরেত্তিন আলতুনকে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদলু জানিয়েছে, সিরিয়া সরকারের ‘সব চেনা’ লক্ষ্যস্থলে আকাশ ও স্থল পথে হামলা চালানো হয়েছে। তবে হামলার ব্যাপারে তুরস্ক ‘সহনশীলতা’ দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট ন্যাটোর সদস্য তুরস্ক জানিয়েছে, হামলার বিষয়ে ইতিমধ্যে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসগলু নাটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেন্স স্টলটেনবার্গের সঙ্গে কথা বলেছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, এই হামলা ইদলিবে তুরস্ক ও সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাতের তীব্রতা নতুন ও বিপজ্জনকভাবে বাড়িয়ে তুলেছে। সবশেষ তুরস্কের এই হতাহতের ঘটনা এক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

রাশিয়ার বিমান শক্তি সিরিয়ার বাহিনীর জন্য বড় ধরনের সহায়তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন এটা যদি তুরস্কের সামরিক অবস্থানকে লক্ষ্যবস্তু ঠিক করে, তবে তা বড় ধরনের ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াবে। বিদ্রোহীরা কৌশলগত শহর সারাকেব পুনর্দখলে নেওয়ার কথা বলার পরপরই এ হামলার ঘটনা ঘটে।

গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতে থাকা ইদলিবের এই সংঘাতের কারণে সিরিয়ার প্রায় ১০ লাখ নাগরিক বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এই পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধের কারণে ওই অঞ্চলে ‘রক্তস্নান’ ঘটতে পারে বলে হুঁশিয়ার করেছে জাতিসংঘ।

একজন জ্যেষ্ঠ তুর্কি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তুরস্ক তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পাশে থাকা এবং ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টারত সিরিয়ার শরণার্থীদের না আটকানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো তথ্য জানানো হয়নি।