Thank you for trying Sticky AMP!!

গুম হওয়া পাকিস্তানি নারী সাংবাদিক মুক্ত

গুল বুখারি

পাকিস্তানে প্রকাশ্যেই সেনাবাহিনীর সমালোচনা করতেন নারী সাংবাদিক গুল বুখারি। এটাই মনে হয় তাঁর কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। লাহোরে গতকাল বুধবার আচমকা মুখোশধারী কয়েকজন তাঁকে অপহরণ করে। তবে তাঁর পরিবার জানিয়েছে, কয়েক ঘণ্টা পরেই তিনি মুক্তি পেয়েছেন।

গুল বুখারির একজন সহকর্মী জানান, অপহরণের সময় সাদাপোশাকের লোকজনের সঙ্গে সেখানে ‘সেনা পোশাকে’ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।

বলা হয়, সাংবাদিকদের জন্য পাকিস্তান হলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে হরহামেশাই সাংবাদিকদের বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়। এমনকি অপহরণ ও হত্যাও করা হয়।

আসন্ন গ্রীষ্মে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দিন দিন দেশটিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে ভয়ভীতি বাড়ছে।

বুখারির পাকিস্তান ও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে। একটি শো রেকর্ড করার জন্য তিনি রাত ১১টার দিকে টেলিভিশন স্টেশনে যাচ্ছিলেন। তখনই তিনি অপহৃত হন।

‘ওয়াক্ত শো’ নামের ওই অনুষ্ঠানের প্রযোজক মুহাম্মদ গুলশার রয়টার্সকে বলেন, কালো কাপড় দিয়ে বুখারির মুখ ঢেকে দুর্বৃত্তরা নিয়ে যায়। বুখারির গাড়ির চালক তাঁকে জানিয়েছেন, কয়েকটি পিকআপ তাঁদের গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। এরপর বুখারিকে তুলে নিয়ে যায়।

এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে সাংবাদিক মহল, মানবাধিকারকর্মীসহ সব স্তরে সমালোচনার ঢেউ ওঠে। সবাই বুখারির সাহসের প্রশংসা করেন। এমনকি পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম শরিফও এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে টুইট করেন। তিনি এটিকে নিষ্ঠুর নির্যাতন বলে উল্লেখ করেন।

তবে কয়েক ঘণ্টা পর বুখারির স্বামী জানান, তাঁর স্ত্রী নিরাপদে আছেন। কিছুক্ষণ পর বুখারি এক আত্মীয়ের মাধ্যমে টুইট করেন। সেখানে তিনি তাঁর দুঃসময়ে পাশে থাকায় সমাজের সবার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানান। এরপর বলেন, তিনি ভালো আছেন এবং কিছুটা সময় নিজের মতো একা থাকতে চান।

মানবাধিকার বিভিন্ন গোষ্ঠী ও পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সমালোচকেরা মনে করেন, সমালোচনাকারীদের কণ্ঠ থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অংশ এটি। এমন গুম হওয়ার পর ফিরে এসে অনেকে জানিয়েছেন সরকারি বাহিনীর তাদের কতটা নির্যাতন করেছে। অনেকে আবার ভয়ে অপহরণকারীর নামই মুখে আনেননি।

আবার অনেকে এখনো নিখোঁজই আছেন। যেমন রাজা খান। গত ডিসেম্বর থেকে তিনি নিখোঁজ।

তবে দেশটির সেনাবাহিনী বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। গত সোমবার বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গাফুর এক সংবাদ সম্মেলন এসব সমালোচনার জবাব দেন এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সমর্থন জোরদার করেন। তবে গাফুর সেখানেও সমালোচকদের প্রচ্ছন্ন এক হুমকি দেন। বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কে কী করছে, তা পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতা আমাদের আছে।’