Thank you for trying Sticky AMP!!

অভিশংসন শুনানিতে সাক্ষীদের দুষলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

নিজের ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি গিলিয়ানিকে রক্ষায় বর্ম হয়ে দাঁড়ালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের অভিশংসন তদন্তের অংশ হিসেবে প্রতিনিধি পরিষদে হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটির চলমান উন্মুক্ত শুনানিকে ‘ডেমোক্র্যাট’ নেতৃত্বাধীন আখ্যা দিয়ে সেখানে দেওয়া বিভিন্ন সাক্ষীকে রীতিমতো কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি। রুডি গিলিয়ানির বিরুদ্ধে দেওয়া বিভিন্ন সাক্ষীর বক্তব্যকে ‘মিথ্যাচার’ অভিহিত করে গত শুক্রবার তিনি বলেছেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য অপরাধ তদন্তে বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন গিলিয়ানির প্রয়োজন ছিল।’

গত বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনের মতো উন্মুক্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন সাক্ষীর বয়ানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবীর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক হস্তক্ষেপের তথ্য উঠে আসে। অভিযোগ উঠেছে, রাষ্ট্র নয়, নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় রুডি গিলিয়ানিকে প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন।

বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটির সামনে সাক্ষ্য দেন ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা ডেভিড হোমস। সাক্ষ্যে তিনি বলেন, কিয়েভের একটি রেস্তোরাঁয় বসে তিনি গর্ডন সন্ডল্যান্ডের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফোনালাপ শুনতে পান। তাঁর ভাষায়, ট্রাম্প এত উচ্চ স্বরে কথা বলছিলেন যে, সন্ডল্যান্ডের পাশে বসেই তিনি তা শুনতে পান। ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ট্রাম্প বারবার চাপ প্রয়োগ করেন, যাতে ইউক্রেন জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত চালায়।

ডেভিড হোমসের দেওয়া এই সাক্ষ্যকেই ‘মিথ্যাচার’ বলছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফক্স নিউজকে তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘আমি গ্যারান্টি দিয়েই বলছি যে, এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এটা গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেভিড হোমসকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েই থামেননি। সন্ডল্যান্ডের সঙ্গে তাঁর ‘তেমন একটা আলাপ হয় না’ বলে পরোক্ষভাবে তাঁকেও ‘মিথ্যাবাদী’ বলতে ছাড়েননি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক কমিটিকে ১০ লাখ ডলারের তহবিল দেওয়ার বিনিময়ে ব্যবসায়ী সন্ডল্যান্ড ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব পান। তাঁদের মধ্যে মাঝেমধ্যেই আলাপ হতো বলেই এত দিন সবাই জানত। কিন্তু ফক্স নিউজকে শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, সন্ডল্যান্ডের সঙ্গে তাঁর খুব কমই কথা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তাঁকে এমনকি আমি ঠিকমতো চিনিও না।’

এদিকে আরেক বোমা ফাটিয়েছেন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। তিনি অভিযোগ করেছেন, গত সেপ্টেম্বরে হোয়াইট হাউস ত্যাগের পর তাঁর ব্যক্তিগত টুইটার অ্যাকাউন্টে তিনি ঢুকতে পারছিলেন না। এ জন্য হোয়াইট হাউসের কাছে বহুবার অনুরোধ করেও কাজ না হলে তিনি টুইটার কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হন। এ জন্য তিনি হোয়াইট হাউসকেই দায়ী করেছেন। তাঁর ভাষ্যমতে, ‘হোয়াইট হাউস সম্ভবত ভয় থেকেই এ কাজটি করেছিল। আমি কিছু বলে ফেলব কি না, এ ভয় ছিল তাদের।’

এ বিষয়ে রয়টার্সের সঙ্গে আলাপকালে সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন বোল্টনের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি। তবে এখন পর্যন্ত জন বোল্টন ট্রাম্পের বিপক্ষে সাক্ষ্য দিতে রাজি হননি। প্রেসিডেন্টের প্রতি তিনি এখনো বিশ্বস্ত রয়েছেন।

নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টের কর্তৃত্ব ফিরে পাওয়া নিয়ে শুক্রবার বোল্টন সাংবাদিকদের বলেন, ‘টুইটার অ্যাকাউন্টের কর্তৃত্ব আমরা ফিরে পেয়েছি। হোয়াইট হাউসের সঙ্গে (অ্যাকাউন্টের) সংশ্লিষ্টতা ছিন্ন করা হয়েছে।’ এ সময় তিনি সাক্ষ্য দেবেন কি না—জানতে চাইলে বোল্টন বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

এদিকে বোল্টনের টুইটার অ্যাকাউন্ট হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বন্ধ করা হয়েছিল কি না—জানতে চাইলে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফক্স নিউজকে কোনো উত্তর দেননি। এ বিষয়ে টুইটার কর্তৃপক্ষের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে সিএনএন।