Thank you for trying Sticky AMP!!

আকাশ থেকে খুলে খুলে পড়ল উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ

অবতরণের আগে ডেনভারের আকাশে দুর্ঘটনাকবলিত উড়োজাহাজ

যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার থেকে হাওয়াই যাচ্ছিল উড়োজাহাজটি। পথে বিস্ফোরণ। আতঙ্কিত যাত্রীদের চিৎকার-চেঁচামেচি। উড়োজাহাজের দুই ইঞ্জিনের একটি থেকে তখন আগুন আর ধোঁয়া বের হতে শুরু করেছে। কিছুক্ষণ পর নিচে থাকা বাড়িঘরের ওপরে খসে পড়তে থাকে উড়োজাহাজের ইঞ্জিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। শেষ পর্যন্ত কোনো রকমে জরুরি অবতরণ করে উড়োজাহাজটি। বলা যায় ‘নিশ্চিত মৃত্যু’র মুখ থেকে রক্ষা উড়োজাহাজটির দুই শতাধিক আরোহীর।

গতকাল শনিবার ঘটেছে এ ঘটনা। ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটিতে এ সময় আরোহী ছিলেন মোট ২৪১ জন। এর মধ্যে ২৩১ জন যাত্রী ও ১০ ক্রু।
উড়োজাহাজটির ভেতরের ক্যামেরায় ধারণ করা একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আকাশে উড্ডয়নরত বোয়িং ৭৭৭-২০০–এর ডান পাখায় আগুন জ্বলছে। বের হচ্ছে সাদা ধোঁয়া। এ অবস্থায়ই সবেগ ছুটে চলেছে বিমানটি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ ঘটনায় উড়োজাহাজটির কোনো আরোহী বা নিচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়া ধ্বংসস্তূপে কেউ হতাহত হননি।

উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে আগুন লাগার পর মৃত্যুক্ষণ গুনতে থাকা যাত্রীদের একজন ডেভিড ডেলুসিয়া। দ্য ডেনভার পোস্ট পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘সত্যি বলছি, আমি ভেবেছিলাম আমরা কিছুক্ষণের মধ্যে মরতে চলেছি। কেননা বিস্ফোরণের পর বিমানটি ডান কাত হয়ে নিচের দিকে পড়তে থাকে। আমি স্ত্রীর হাত আঁকড়ে ধরি। বলি, এই আমাদের শেষ দেখা।’

ডেলুসিয়া বলেন, এ দুর্ঘটনা নিয়ে তাঁর সৎমেয়ে একটি ভিডিও টুইট করেছেন। আরেক যাত্রী করেছেন ভিডিওটি।

ইউনাইটেড এয়ারলাইনস এক বিবৃতিতে জানায়, ডেনভার থেকে ফ্লাইট ইউএ ৩২৮ হনুলুলু যাচ্ছিল। উড্ডয়নের অল্প পর এটির একটি ইঞ্জিন অকেজো হয়ে যায়। তবে ফ্লাইটটি নিরাপদে ডেনভার ফিরে জরুরি অবতরণ করেছে।

বিবৃতিতে সংস্থাটি আরও বলেছে, নিরাপদে অবতরণের পর উড়োজাহাজটির অধিকাংশ যাত্রীকে নতুন ফ্লাইটে গন্তব্যে পাঠানো হয়েছে। যাঁরা নতুন ফ্লাইটে করে গন্তব্যে যেতে চাননি, তাঁদের আবাসিক হোটেলে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

ইঞ্জিনে আগুন লাগার পর সহায়তা চেয়ে উড়োজাহাজটির ভেতর থেকে পাইলট জরুরি বার্তা পাঠান। এয়ার ট্রাফিক কমিউনিকেশন সম্প্রচারকারী ওয়েবসাইট লাইভএটিসি থেকে সংগৃহীত ওই বার্তায় উড়োজাহাজটিকে ডেনভারে ঘুরিয়ে তাঁকে জরুরি অবতরণ করার অনুমতি চাইতে শোনা যায়। শান্ত কণ্ঠে তিনি বলছিলেন, ‘থ্রি-টোয়েন্টি-এইট গুরুতর সমস্যায়। আমাদের ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেছে। মোড় ঘোরানো দরকার। মে ডে, মে ডে (সাহায্য করো)।’

পরে নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার থেকে পাইলটের কাছে আবার তাঁর পাঠানো বার্তা জানতে চাওয়া হয়। তখন তিনি বলেন, ‘মে ডে, বিমান, আহ, এইমাত্র ইঞ্জিন অকেজো হয়ে গেছে। দ্রুত মোড় ঘোরানো দরকার।’

ইতিমধ্যে ডেনভারের বাসিন্দাদের বাড়িঘরের ছাদে ও আশপাশে উড়োজাহাজটির ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। দ্য ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলেছে, বাড়িঘরে ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি সম্পর্কে তারা অবগত আছে। সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থা ও ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড এ দুর্ঘটনা তদন্ত করে দেখবে।

ডেনভারের একটি পার্কে ফুটবল দলকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন হিদার সোলার। তিনি বলেন, হঠাৎ একটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন। ওপরে তাকিয়ে দেখেন, বৃষ্টির মতো ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ছে।

দ্য ডেনভার পোস্টকে হিদার বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, আমাদের ওপর বোমা ফেলা হচ্ছে। আকাশে তখন ধ্বংসাবশেষের ছড়াছড়ি।’