Thank you for trying Sticky AMP!!

আমেরিকান এয়ারলাইনসে নাশকতার অভিযোগে প্রকৌশলী আলানী গ্রেপ্তার

এএফপির ফাইল ছবি

আমেরিকান এয়ারলাইনসে নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে দেশটির আইন প্রয়োগকারী সংস্থা একজন প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তার করেছে। বিমানটি ১৫০ জন যাত্রী নিয়ে মায়ামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাহামা দ্বীপপুঞ্জে যাত্রা শুরুর আগেই নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে আবদুল-মাজিদ মারুফ আহমেদ আলানী নামের ওই প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তার কর হয়।

গত ১৭ জুলাই ঘটনাটি ঘটেছিল। এরপরই নাশকতার চেষ্টার কারণে ওই এয়ারলাইনসের বাণিজ্যিক বিমান রুটিন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ফ্লাইট নম্বর ২৮৩৩টি বাতিল করা হয়েছিল।

আমেরিকান এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ ফেডারেল আদালতে প্রকৌশলী আলানীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। আলানীর বিরুদ্ধে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে বিমানকে ক্ষতিগ্রস্ত করা, অক্ষম করা বা একেবারেই ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা’র অভিযোগ আনা হয়েছে। আলানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ককপিটের নিচে এয়ার ডেটা মডিউল (এডিএম) সিস্টেমটি ক্ষতিগ্রস্ত বা নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করেছেন। এডিএম সিস্টেম বিমানের গতি, পিচ এবং অন্যান্য সংবেদনশীল ডেটা সংগ্রহ করে এবং তা মূল সিস্টেমে রিপোর্ট করে।

অভিযোগের তদন্তকারীরা গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) আলানীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। আলানী স্বীকার করেছেন, তিনি এডিএমটি ব্যবহার করেছিলেন। তিনি এডিএমের খালি জায়গায় যেখানে একটি লাইন সংযুক্ত হয় সেখানে ফোমের একটি টুকরাকে সুপার গ্লু দিয়ে আটকে দিয়েছিলেন, যাতে ফোমটি ছুটে আসতে না পারে। আলানী তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, বিমান বা তার যাত্রীদের কোনোও ক্ষতি তার উদ্দেশ্য ছিল না। তদন্তকারীদের অভিযোগ সত্য নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

আদালতে আনা অভিযোগে বলা হয়েছে, আলানী তদন্তকারীদের বলেছিলেন ইউনিয়ন কর্মী এবং বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে একটি চুক্তির বিরোধের কারণে তিনি বিচলিত ছিলেন। এই বিরোধের ফলে তাঁকে অর্থ ব্যয় করতে হয়েছিল। আলানীর দাবি, তিনি এমন কিছু করতে চেয়েছিলেন যাতে ওভারটাইমে কাজ করতে পারেন। মানুষ হত্যা তার উদ্দেশ্য ছিল না।

বিমানটি রানওয়েতে টেক অফ করার সময় পাইলটেরা ইঞ্জিনের পাওয়ার বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এডিএম সিস্টেমের সঙ্গে সম্পর্কিত ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। যাকে বৈমানিক ভাষায় ‘এডিএম এরর’ বলা হয়। এই এরর ধরা পড়ার পরে বিমানটির টেক অফ বাতিল করা হয়। বিমানটি পরে নিরাপদে ফিরে গিয়েছে এবং এতে কোনো আরোহী আহত হয়নি। বিমান কর্তৃপক্ষ ভিডিও নজরদারি মাধ্যমে আলানীকে শনাক্ত করেছেন।

আমেরিকান এয়ারলাইনস জানিয়েছে, গ্রাহক এবং টিম সদস্যদের নিরাপত্তা সুরক্ষার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি অটল। তারা বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন।

আমেরিকান এয়ারলাইনস আরও জানায়, ঘটনার সময় বিমানটির সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়। পরে রক্ষণাবেক্ষণ করে এটি যাত্রী সেবার জন্য নিরাপদ বলে নিশ্চিত করা হয়। পুরোপুরি একটি তদন্তের পরে বিমানটিকে যাত্রী সেবার জন্য ফেরত দেওয়া হয়েছে।

আমেরিকান এয়ারলাইনসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকান ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আমেরিকান এয়ারলাইনসকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে। ফ্লোরিডার আদালতে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে আলানীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের শুনানি হবে।

আলানী আমেরিকান এয়ারলাইনসে ১৯৮৮ সাল থেকে কাজ করছেন। এর আগে তিনি আলাস্কা এয়ারলাইনে কাজ করতেন।

ফেডারেল প্রসিকিউটররা বলছেন, আলানীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আলানী দোষী সাব্যস্ত হলে ২০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

আদালত বা আমেরিকান এয়ারলাইনস বিমান কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত আলানীর ব্যক্তিগত পরিচয় গোপন রেখে চলেছেন।