Thank you for trying Sticky AMP!!

ইয়েলো ক্যাব চালকের স্বপ্নভঙ্গের দায় কার?

স্বদেশির সঙ্গে কথা বলছেন এক বাংলাদেশি ক্যাবচালক

নিউইয়র্ক সিটির ইয়েলো ক্যাব চালকদের আত্মহত্যার খবর নতুন কিছু নয়। গত বছরে তিনজন ট্যাক্সি মালিক এবং পাঁচজন ইয়েলো ক্যাব চালক আত্মহত্যা করেছে। নিউইয়র্ক সিটির ইয়েলো ক্যাব চালকদের আত্মহত্যার খবর আমেরিকার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। নিউইয়র্ক সিটির ট্যাক্সি কমিশনার মীরা জোসি ক্যাব চালকদের আত্মহত্যাকে মহামারির সঙ্গে তুলনা করেছেন। এ ব্যাপারে প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক যে, চালকেরা কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন?
এ প্রশ্নের যত না উত্তর আছে তার চেয়ে অনেক বেশি আছে প্রশ্ন। আর এর পেছনের কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান হলো, ইয়েলো ক্যাবে মেডালিয়ানের দাম কমে যাওয়া। যা এক সময় ছিল দশ লাখ ডলারেরও বেশি সেটাই এখন দুই লাখ ডলারেরও কম। এখানে আবার প্রশ্ন জাগে, একটি ট্যাক্সি ক্যাব মেডালিয়ানের দাম কীভাবে দশ লাখ ডলার হয়? আর যদি দাম দশ লাখ ডলার হয় তাহলে যে চালকদের বার্ষিক আয় বাইশ হাজার ডলার তারাই বা কীভাবে এই অর্থ ঋণ পায়। নিউইয়র্ক টাইমসের এক তদন্তে জানা যায়, মেডালিয়ানের এই দাম বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে ব্যাংকের কর্মকর্তা, মালিক ও ব্রোকাররা। তারা ইচ্ছে করে মেডালিয়ানের দাম বাড়িয়ে সাধারণ ক্যাব চালকদের কাছ থেকে লাখ লাখ ডলার হাতিয়ে নেয়। 

ইয়োলো ক্যাবের চালক মো. আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে ক্যাব চালিয়ে ভালোই আয় হতো। কিন্তু এখন কোনোমতে ক্যাব চালিয়ে পেট চালাই।’ ৪০ বছর বয়সী আলমগীর হতাশার সঙ্গে বলেন, ‘ক্যাব চালকেরা আত্মহত্যা না করে কি করবে। সংসারের খরচ মিটাতেই কষ্ট হয়ে যায় তার ওপর যারা আগে মেডালিয়ান কিনেছে তাদের ব্যাংকের টাকা অতিরিক্ত সুদে দিতে হয়।’
শেখ আনিসুল ইসলাম গত প্রায় ২০ বছর ধরে নিউইয়র্ক সিটিতে ইয়েলো ক্যাব চালাচ্ছেন। তিনি নিজ দেখেছেন, কীভাবে ব্যাংকের কর্মকর্তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে ধোঁকা দিয়ে লাখ লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার এক পরিচিত চারটি মেডালিয়ান কিনেছে। শেষের মেডালিয়ানটি কিনেছে ক্যাবের দাম পড়ার সময়। লোকসানে তিনটি মেডালিয়ান বিক্রি করে দিয়েছে। এখন উনি আমাকে মাঝে মাঝে বলে বাসার ভাড়া পর্যন্ত দিতে পারছেন না।’

৪৮ বছর বয়সী মোস্তফা কামাল ১৫ বছর ধরে ক্যাব চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘ভাই সংসার ঠিকমতো চালাতে পারছি না। আমি অনেককেই জানি যারা মেডালিয়ান কিনে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে। তার ওপর সিটি এখন কাস্টমার প্রতি ৩.৮০ ডলার কনজেসসান ফি নিয়ে যায়। দৈনিক ১০ ঘণ্টা কাজ করে ১০০ ডলারও বাড়িতে নিতে পারি না।’

মো. আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভাই উবার এসে আমাদের ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন ১ লাখ ৪০ হাজারের মতো উবার চালক আছে। কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু জ্যাকসন হাইটসে আত্মহত্যা করেছে। সে ইয়োলো ক্যাব চালাত।’ তাঁর অনুরোধ, ‘আমাদের একটু দেখেন।’