Thank you for trying Sticky AMP!!

খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি

ডোনাল্ড ট্রাম্প

ঘরের ভেতর নানা চ্যালেঞ্জে জড়িয়ে নিজেকে আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্কের পাত্রে পরিণত করা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লম্বা এশিয়া সফর শেষ হলো। গত ৩ নভেম্বর স্থানীয় সময় সকাল থেকে শুরু করা তাঁর এ সফর গতকাল ১৪ নভেম্বর শেষ হয়। সফরে তিনি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইন গেছেন। গত ২৫ বছরে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য এটাই দীর্ঘতম এশিয়া সফর। কিন্তু এ লম্বা সফরে ট্রাম্প কাজের কাজ খুব কমই করতে পেরেছেন।

ট্রাম্পের এ সফর যে খুব সুখকর বা ফলপ্রসূ হবে না, তেমনটা সফরের আগেই অনুমান করেছিলেন বিশ্লেষকেরা। সফর শেষে তাঁদের সে ধারণাই সঠিক হয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা। এ সফরে তিনি এমন সব দেশে গেছেন, যাদের অনেকের সঙ্গেই তাঁর টানাপোড়েন সম্পর্ক। তাই সফর তাঁর জন্য ছিল সত্যিকার অর্থে দর-কষাকষি ও কূটনৈতিক দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষা।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের সফরে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেনি। তবে তাঁকে খাতির করার আয়োজনের কমতি ছিল না। তাঁকে তুষ্ট করতে আঞ্চলিক নেতাদের প্রতিযোগিতায় নামাও ছিল দেখার মতো। যাহোক, কার্যকর কিছু অর্জন ছাড়া সফর শেষ করেছেন তিনি। এ যে ‘খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি’!

টোকিওতে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে উষ্ণ বৈঠক শেষে জাঁকজমকপূর্ণ নৈশভোজ হয় ট্রাম্পের। চীন সফরে ট্রাম্প ‘নিষিদ্ধ শহর’-এও গেছেন। সেটা ছিল রাষ্ট্রীয় সফরের অতিরিক্ত কিছু্। তাঁর জন্য ছিল পিকিং অপেরার আয়োজনও। ট্রাম্পের সিউল সফরে দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনও ছিলেন না পিছিয়ে। আমেরিকাকে আবার ‘মহান করতে থাকা’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে তিনি দিয়েছেন এক বীরোচিত সংবর্ধনা।

টোকিও থেকে ম্যানিলা—সফরের মাঝখানে ছিল সিউল, বেইজিং, দানাং ও হ্যানয়। দীর্ঘ যাত্রাপথে ৭১ বছর বয়সী ট্রাম্পের নজর ছিল দুটি অগ্রাধিকারমূলক বিষয়ে। একটি পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে উত্তর কোরিয়ার ওপর চাপ বৃদ্ধি এবং এশিয়ার বাজারে মার্কিন কোম্পানিগুলোর প্রবেশের আরও সুযোগ।

স্বভাবসুলভ বাগাড়ম্বরপূর্ণ কথাবার্তা আর হাসিমুখে ছবি তোলার সুযোগের সদ্ব্যবহারের বাইরে এ দুই ইস্যুতেই ট্রাম্প কীই-বা অগ্রগতি আনতে পেরেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অন্য বিষয়গুলো না হয় বাদ থাক।

সিউলের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘আসান ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজ’-এর বিশ্লেষক গো মেয়ং-হিউন এএফপিকে বলেন, ‘ট্রাম্পের এশিয়া সফরের আগের ও পরের চিত্র যদি আপনি তুলনা করেন, দেখবেন, (উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে) প্রকৃতপক্ষে কোনো পরিবর্তন আসেনি।’ তিনি বলেন, পারমাণবিক কর্মসূচি বাদ দিতে উত্তর কোরিয়ার ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ওপর চাপ তৈরি করেছেন ট্রাম্প। কিন্তু পিয়ংইয়ংয়ের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার বেইজিং তার ব্যাপারে অবস্থান আগের মতোই রেখেছে।