Thank you for trying Sticky AMP!!

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্পেশাল এডুকেটররা

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে হারাচ্ছেন মানসিক শক্তি, কেউ করছেন আত্মহত্যা, কেউবা পরিবার হারিয়ে, হারাচ্ছেন নিজ প্রাণ। এই ভাইরাস প্রতিরোধে ঘোষণা করা হয়েছে ‘লকডাউন।’ এই লকডাউনে অনেকেই চাকরি হারালেও বোর্ড অব এডুকেশনের (ডিওই) শিক্ষকেরা নিজ পেশায় রয়েছেন। তাঁরা ঘরে বসেই অনলাইন রিমোট লার্নিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষকতা করছেন।

দূরত্ব বজায় রেখে প্রযুক্তির মাধ্যমে অনলাইনে শিক্ষকতা নতুন কোনো চ্যালেঞ্জ কিনা—তা নিয়ে প্রশ্ন রাখা হয় ডিস্ট্রিক্ট সেভেন্টি ফাইভ ও পিএস সেভেন্টি ফাইভের কিছু শিক্ষক ও সাইকোলজিস্ট কাউন্সিলরদের কাছে।

এ ব্যাপারে স্কুল সাইকোলজিস্ট ও কাউন্সেলর জোয়ানা বেকল বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ তো আছেই। শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতিও অনেক অনুভব করি। তবে গুগল ক্লাসে আমি তাদের সঙ্গে ভিডিও কলের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। শিক্ষার্থীদের জন্য এটা কঠিন, অনেক অভিভাবকও এতে সহযোগিতা করছেন।

শিক্ষক ভিক্টোরিয়া গার্টস বলেন, ‘অন্তত ঘরে বসে হলেও শিশুদের শিক্ষাদানে নিয়োজিত আছি-এটাই চ্যালেঞ্জ। আমার শিক্ষার্থীরা কিন্ডারগার্টেনে প্রথম শ্রেণির। তারা পড়তে বা লিখতে তেমন পারদর্শী নয়। কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে না। তবে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

কথা হয় স্কুল সাইকোলজিস্ট ও কাউন্সেলর মিশেল আর ব্রিটোর সঙ্গে। তিনি ধৈর্য, আন্তরিকতা ও সহনশীলতার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতিটি সমস্যার সমাধান দিচ্ছেন। অনলাইন লার্নিংয়ে হতাশ বোধ করছি। কারণ স্পেশাল নিড শিশুদের অনেক সময় নিরাপদ আলিঙ্গনের প্রয়োজন হয়। তবু দূর থেকে যতটা পারি কাজ করছি।

লকডাউনে কেমন আছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক জগদীশ চৌধুরী বলেন, গৃহবন্দী অবস্থায় আছি। কোথাও বের হতে পারছি না। শিক্ষার্থীদের জন্য রিমোট লার্নিং ব্যবহার ও পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া ছেলেকে গুগল ক্লাসে সাহায্য করা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই বাড়িতে। তিনি বলেন, ‘রিমোট লার্নিংয়ে ক্লাস নেওয়া শুরুতে কিছুটা কঠিন ছিল। তবে সহকর্মী ও প্রশাসন থেকে সহযোগিতা পেয়েছি এ ব্যাপারে।’

ইএনএল অর্থাৎ ইংলিশ ইজ অ্যা নিউ ল্যাংগুয়েজ শিক্ষক মিস্টার লুইস ড্যারিওঅর্টিজ। ঘরে বসে শিক্ষাদানের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে অপ্রস্তুত মনে হচ্ছিল ব্যাপারটা। তবে যত দিন যাচ্ছে এবং সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত তাদের কাজ জমা দিচ্ছে। অভিভাবকেরাও সহযোগিতা করছেন।

১৫ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন সামসুন্নাহার শীলা। তিনি বলেন, ‘গৃহবন্দী অবস্থায় রিমোট লার্নিং ও গুগল ক্লাস মন্দ লাগছে না। যদিও একেবারেই নতুন একটা পদ্ধতি, তবু আমরা সফল হচ্ছি।’

শিক্ষক অ্যান নুয়েন বলেন, ‘আমি শিশুদের পাশে বসে তাদের প্রয়োজন মেটাতে চাই। কারণ স্পেশাল শিশুরা যত্ন ও ভালোবাসা পেতে পছন্দ করে। তাদের জন্য গৃহবন্দী হয়ে থাকা কঠিন। তবু আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

হিলসাইডে বসবাসরত নিগার সাত্তার এই পেশায় আছেন প্রায় ১৭ বছর। তিনি বলেন, ‘আমি জানি শিশুদের জন্য রিমোট লার্নিং কষ্টসাধ্য। পারিবারিক সংকট এবং ডিভাইসগুলো ব্যবহারে অক্ষমতার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ভালো সাড়া দিচ্ছে না। বাড়িতে কাউকে তাদের সহায়তা করা খুব দরকার।’

রেইমন্ডা ডিলজ্যারি ১৬ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন। তিনি বলেন, ‘রিমোট লার্নিং শিশুদের জন্য কঠিন। বিষয়টা শুরুতে আমার জন্যও কঠিন ছিল। তবে এখন আমরা এভাবে শিক্ষাদানে সক্ষম হয়েছি। স্টুডেন্টরা ভালো করছে গুগল ক্লাসে।’

কুইন্স ভিলেজে বসবাসরত শাহিনা জামান বলেন, ‘রিমোট লার্নিং শিক্ষার্থী ও অভিভাবক উভয়ের জন্যই কঠিন। এটা আমাদের জন্যও একটা নতুন চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে সম্মিলিতভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’

১৩ বছর ধরে এই পেশায় নিষ্ঠার সঙ্গে কর্মরত রাবেয়া সুলতানা বলেন, ‘সবকিছুর ভালো মন্দ রয়েছে। রিমোট লার্নিং অবশ্যই চ্যালেঞ্জ। কারণ এটি নতুন একটি পদ্ধতি। তবে আমরা পারছি।’

শিক্ষার্থীদের প্রতি খুবই দায়িত্বশীল ও মনোযোগী নাসিমা বানু বলেন, ‘রিমোট লার্নিং পছন্দ করি না। কারণ এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে অসুবিধা হয়। তবু ঘোলাটে পরিস্থিতিতে করতে হচ্ছে।’

শিক্ষক নাজনীন হক রিমোট লার্নিং প্রসঙ্গে বলেন, এটা খুব বড় একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা তা মোকাবিলায় সক্ষম হয়েছি। নিয়মিত গুগল ক্লাস করছি, শিক্ষার্থীদের মনিটরিং করছি, সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ ভাগ করে শিক্ষার্থীদের রিমোট লার্নিংয়ে এগিয়ে নিচ্ছি।’

ক্যাথরিন কলিন নাচের শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘ঘরে বসে শিক্ষাদান একেবারেই পছন্দ করি না। তবু পরিস্থিতি মোকাবিলায় করতে হচ্ছে। রিমোট লার্নিংয়ে প্রশাসন আন্তরিকতার সঙ্গে সহযোগিতা করছে।’