Thank you for trying Sticky AMP!!

জিততে ভোটপ্রতি ওবামার ব্যয় সবচেয়ে বেশি

বারাক ওবামা

যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সবচেয়ে বেশি অর্থ জোগাড় করেন, ব্যতিক্রম বাদে প্রায় সব সময় তিনিই জেতেন। মার্কিন রাজনীতিতে এটা অনেকটা ধরাবাঁধা নিয়ম। আর প্রেসিডেন্ট পদে জিততে একেকটি ভোট কিন্তু অতটা সস্তা নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল নির্বাচন। ভোট গ্রহণের নির্ধারিত দিন আসতে এক মাসেরও কম সময় বাকি (ভোট গ্রহণ ৩ নভেম্বর)। এরই মধ্যে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন—দুজনই নির্বাচনী প্রচারে ৩৫ কোটি ডলারের ওপরে খরচ করে ফেলেছেন।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কোয়ার্টজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রার্থীরা যে পরিমাণ অর্থ ঢালেন, তার গুরুত্ব বোঝার অনেক উপায় আছে। এর একটি হচ্ছে নির্বাচনে জয়ী পক্ষ কয়েক বছরে ভোটের জন্য কত টাকা খরচ করেছে, তার একটা তুলনামূলক চিত্র বের করা। অর্থাৎ একটা ভোট পাওয়ার জন্য জয়ী প্রার্থীর কী পরিমাণ অর্থ গেছে, তার হিসাব মেলানো। হিসাবটা বের করতে একটা অঙ্ক কষতে হবে। জয়ী প্রার্থী যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছেন, সেই সংখ্যাকে তাঁর প্রাপ্ত মোট ভোটের সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা। অবশ্য কোনো প্রার্থীকে তাঁর রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক কর্ম কমিটি (পিএসি) যে তহবিল দেয়, তা ওই অঙ্কে অন্তর্ভুক্ত নয়।

মার্কিন নির্বাচনে যে বিপুল অঙ্কের টাকা ব্যয় করা হয়, প্রার্থীদের ব্যয় তার একটা ক্ষুদ্র অংশমাত্র। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে একটা নিরপেক্ষ গ্রুপের সমীক্ষার, যারা রাজনৈতিক ব্যয়ের ওপরে নজর রাখে। তাদের আন্দাজ, এবারের মার্কিন নির্বাচনে ব্যয় হবে ১ হাজার ৮০ কোটি ডলারের বেশি, যা রেকর্ড।

এক হিসাবে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৬ সালে নির্বাচনে জিততে প্রতিটি উইনিং ভোটের জন্য ব্যয় করেছেন ৫ দশমিক ৮ ডলার। তাঁর পূর্বসূরি ডেমোক্র্যাট বারাক ওবামা ২০১২ সালে ব্যয় করেন ১২ দশমিক ৮ ডলার। ওবামা প্রথম মেয়াদে (২০০৮) জয়ী হতে ব্যয় করেন ১৩ ডলার। ২০০০ ও ২০০৪ সালে রিপাবলিকান জর্জ বুশের ব্যয় ছিল ভোটপ্রতি যথাক্রমে সাড়ে ৫ ও ৮ ডলার। বুশের পূর্বসূরি ডেমোক্র্যাট বিল ক্লিনটনের ১৯৯২ ও ১৯৯৬ সালে ভোটপ্রতি ব্যয় ছিল যথাক্রমে ৪ দশমিক ৪ ও ৪ দশমিক ৩ ডলার।বিশ্বজুড়েই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্ণায়ক ভূমিকা রাখে অর্থ। তবে একটা ভোটের মূল্য দেশে দেশে উল্লেখযোগ্য হারে কমবেশি হতে পারে। রাজনীতিকেরা প্রচারণায় কতটা ব্যয় করতে পারবেন, তার সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে ফ্রান্স ও কানাডার মতো অনেক দেশ। যেমন কানাডায় সর্বোচ্চ ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার ব্যয় করা যায়। তার সঙ্গে সংগতি রেখে ২০১৯ সালের নির্বাচনে দেশটির লিবারেল পার্টি ব্যয় করেছিল ২ কোটি ৬১ লাখ ডলার।

কোনো প্রার্থী বেশি ব্যয় করলেই কি বেশি বেশি ভোট পাবেন? হতেও পারে, না-ও পারে। তহবিল জোগাড় ও বিজয়ের মধ্যে সম্পর্কটা জটিল। বাড়তি ব্যয় করলেই সব ভোটারকে পক্ষে টানা যাবে, বিষয়টা তেমন নয়। ডেটা বিশ্লেষণের ওয়েবসাইট ফাইভথার্টিএইটের এক বিশ্লেষণে সেটা পরিষ্কার। অনেক ভোটারই ব্যালটে সিল মারেন তাঁদের পছন্দের দল দেখে। হয়তো তাঁরা দশকের পর দশক, এমনকি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ওই দলকেই ভোট দিয়ে আসছেন। বিজ্ঞাপনে ভোটারের মন গলে না, এমন আরও কিছু তথ্য–প্রমাণ বা নিদর্শন রয়েছে। অথচ বিজ্ঞাপনের পেছনেই প্রার্থীরা উল্লেখযোগ্য অঙ্কের অর্থ ঢেলে ফেলেন।