Thank you for trying Sticky AMP!!

ট্রাম্পের অভিযোগে বিশ্বাস নেই মেয়ে ইভাঙ্কারও

২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলা চালান ট্রাম্পের সমর্থকেরা

যুক্তরাষ্ট্রে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে বলে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে অভিযোগ তুলেছিলেন, তা বিশ্বাস করেননি তাঁর মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্পও। ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় কংগ্রেসের শুনানির প্রথম দিনে তদন্ত প্যানেল উপস্থাপিত ভিডিও জবানবন্দিতে এমনটা দেখা গেছে। শুধু ইভাঙ্কাই নন, তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অনেকে এ দাবি মানতে পারেননি। খবর রয়টার্সের।

২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন জয়ী হলে নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর পরাজয় মানতে অস্বীকৃতি জানান। বাইডেনের জয়ের সত্যায়নে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন বসে। এ প্রক্রিয়া ঠেকাতে ট্রাম্পের উসকানিতে তাঁর উগ্র সমর্থকেরা কংগ্রেস ভবনে (ক্যাপিটল হিল) সহিংস হামলা চালান।

এ ঘটনা তদন্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে একটি কমিটি গঠন করা হয়। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে মার্কিন কংগ্রেসে এ নিয়ে শুনানি শুরু হয়েছে। শুনানিতে কিছু ভিডিও জবানবন্দি উপস্থাপন করে তদন্ত কমিটি। সেখানে দেখা যায়, ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা, অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বারসহ ট্রাম্পের নিজ প্রশাসনের কর্মকর্তারাই সাবেক এ প্রেসিডেন্টের দাবি মানতে পারেননি।

শুরুতেই বিল বারের ভিডিও সাক্ষ্য উপস্থাপন করা হয়। সেখানে তিনি ট্রাম্পের মিথ্যা দাবিকে ‘বুলশিট’ বলে উল্লেখ করেন। তাঁর এ বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন ইভাঙ্কা। ‘আমি অ্যাটর্নি জেনারেল বারকে শ্রদ্ধা করি। সুতরাং তিনি যা বলছেন তা আমি মেনে নিচ্ছি।’—ভিডিও সাক্ষ্যে বলেন ইভাঙ্কা ট্রাম্প।

ট্রাম্প প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের চিফ অব স্টাফসহ অন্য কর্মকর্তাদের ভিডিও সাক্ষ্যও উপস্থাপন করেছেন তদন্ত প্যানেল। শুনানির শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে কমিটির চেয়ারম্যান ও ডেমোক্রেটিক প্রতিনিধি বেনি থম্পসন বলেন, ‘৬ জানুয়ারি ছিল একটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সর্বোচ্চ সীমা, একটি নির্লজ্জ প্রচেষ্টা। ৬ জানুয়ারির পরপরই একজন লেখক বলেছিলেন, সরকারকে উৎখাত করতে এ প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এ সহিংসতা কোনো আকস্মিক ঘটনা ছিল না। এটি ছিল ট্রাম্পের টিকে থাকার সবশেষ প্রচেষ্টা।’

ডেমোক্রেটিক নেতৃত্বাধীন ওই তদন্ত প্যানেলে দুই রিপাবলিকান সদস্যও আছেন। কমিটিতে ভাইস চেয়ারপারসন হিসেবে নিযুক্ত আছেন রিপাবলিকান লিজ চেনি। তিনি উল্লেখ করেন, সমাবেশে সমর্থকেরা মাইক পেন্সের বিরুদ্ধে যে দাবি তুলেছিলেন, তার ভয়াবহতা এড়িয়ে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। সত্যায়নে মাইক পেন্সের সভাপতিত্ব করার কথা ছিল। সমাবেশ থেকে ট্রাম্পের সমর্থকেরা জোরালো দাবি তুলেছিলেন, ‘পেন্সকে ফাঁসিতে ঝোলানো হোক’। ট্রাম্প তখন বলেছিলেন, ‘ভালো কথা, সম্ভবত আমাদের সমর্থকদের ভাবনাই ঠিক।’

সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল বার বলেন, ‘আমরা এমন কোনো বিশ্বে বসবাস করতে পারি না, যেখানে কিনা ক্ষমতাসীন প্রশাসন নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। এ প্রশাসন অসমর্থিত প্রমাণের ভিত্তিতে নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে বলে অভিযোগ করে।’ ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব ছাড়ার আগেই অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে পদত্যাগ করেছিলেন বার।

এ ছাড়া ট্রাম্পের যে ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলেছেন, তাঁরা হলেন ট্রাম্পের ছেলে ডোনাল্ড জুনিয়র, জামাতা জ্যারেড কুশনার, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ্রে রোজেন, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের জ্যেষ্ঠ সহযোগীরা।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, শুনানিতে তদন্ত কমিটির প্রধান বলেছেন, যে ষড়যন্ত্রের কারণে ক্যাপিটল হিলে হামলা হয়েছিল, তা এখনো মার্কিন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।
এ মাসে ছয়টি শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। শুনানিতে দুজন প্রত্যক্ষদর্শীরও বক্তব্য নেওয়া হবে। তাঁরা হলেন ক্যাপিটল পুলিশের কর্মকর্তা ক্যারোলিন এডওয়ার্ডস ও চলচ্চিত্র নির্মাতা নিক কোয়েস্টেড।