Thank you for trying Sticky AMP!!

ট্রাম্পের জন্য আর হয়তো আত্মবিসর্জন দেবেন না কোহেন

মাইকেল ডি কোহেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল ডি কোহেন নিজেকে বরাবরই ট্রাম্পের একান্ত অনুগত বলে দাবি করে থাকেন। এমনকি তিনি ট্রাম্পের জন্য ‘বুক পেতে গুলি খেতে’ প্রস্তুত বলেও জানান। কিন্তু সম্প্রতি এএফবিআই মাইকেল কোহেনের বাড়ি ও অফিস তল্লাশি করে কম্পিউটারসহ বিভিন্ন নথিপত্র জব্দ করার পর অনেকেই মনে করছেন চাপের মুখে কোহেন মুখ খুলতে পারেন।

ট্রাম্প ও কোহেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়ে অবগত অন্তত ছয়জন বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন বছরের পর বছর ট্রাম্প কোহেনের সঙ্গে নানা বিষয়ে খারাপ আচরণ করে গেছেন। অন্তত দুবার তাঁকে বরখাস্তের হুমকিও দিয়েছেন। তাই এবার আইনি জটিলতার মুখে কোহেনের এই আনুগত্য কতটা থাকে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বছরের পর বছর ধরে ট্রাম্প টাওয়ারের কর্মীদের মধ্যে একটি রসিকতা প্রচলিত ছিল, বলা হতো তাদের বসের দিকে ম্যানহাটনের ফার্স্ট অ্যাভিনিউর মতো সব ট্রাফিক ছুটে। সব আক্রমণের লক্ষ্য ছিলেন তিনি। তবে এবারই মনে হয় প্রথম কোহেনের দিকে সেই আক্রমণের মোড় ঘুরছে।

কোহেনের মতো ট্রাম্পের অনানুষ্ঠানিক ও দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা রজার জে স্টোন বলেন, ‘ডোনাল্ড তাঁর চলার পথে কোহেনকে আবর্জনার মতো মনে করেছেন। ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের খুব কাছের পাঁচজনের একজন ছিলেন রজার।

কোহেন নামে আইনজীবী হলেও তাঁর আসল কাজ হচ্ছে ট্রাম্পের বিভিন্ন বৈধ-অবৈধ কার্যকলাপ নির্বিঘ্নে শেষ করা। তাঁর নিজের কথামতে, তিনি হলেন ট্রাম্পের ‘ফিক্সার’। এই কাজ তিনি করছেন প্রায় দুই দশক ধরে। ট্রাম্পের সঙ্গে গোপন প্রণয়ে জড়িত দুই নারীর মুখ বন্ধ রাখতে কোহেন মোটা অর্থ উৎকোচ হিসেবে দেওয়ার ব্যবস্থা করে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনার কেন্দ্রে এসেছেন। তিনি বেআইনি কাজে লিপ্ত, এটা টের পেয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আঁতাতের প্রশ্নে তদন্তরত বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট ম্যুলার ব্যাপারটি বিচার বিভাগের নজরে আনেন। এরপরই তল্লাশিতে পড়েন কোহেন।

কয়েক সপ্তাহ আগে ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ক্লাব মার-অ্যা-লাগোতে একসঙ্গে ট্রাম্প-কোহেন নৈশভোজ করেছেন। অথচ তল্লাশির পর যেন কোহেন অনেকটাই একা হয়ে পড়েছেন। ঘটনার চার দিন পর গত শুক্রবার ট্রাম্প কোহেনকে ডেকেছেন। তবে তাঁদের মধ্যে খুব কমই কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আশপাশের লোকজন।

ট্রাম্প নিজ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কোহেনকে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করেছেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা মনে করছেন এই তল্লাশির ঘটনা সবকিছু পাল্টে দিয়েছে।

ট্রাম্পের সাবেক সহযোগী স্যাম নুনবার্জ বলেন, এখন পাশা উল্টে গেছে। কোহেন এখন ট্রাম্পের কাছ থেকে সুবিধা নিতে পারেন।

নুনবার্জ বলেন, প্রেসিডেন্টের দুর্বলতা হলো, কোহেনের প্রতি তাঁর মায়া রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘যখন কেউ আমার কাছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করে, তখন আমার মনে হয় কোহেনের সঙ্গে তুলনা করলে তাদের অভিযোগ কিছুই না।’

বছরের পর বছর ধরে ট্রাম্পের প্রতি নিজের আনুগত্যের কথা বলে এসেছেন কোহেন। তিনি স্কুলজীবন থেকেই ট্রাম্পের ভক্ত। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি কোনো দিনও ট্রাম্পকে ভুল কিছু বলতে বা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করতে শোনেননি। তিনি ট্রাম্পকে নিয়ে অন্তত তিন হাজার বার টুইট করেছেন।

গত বছর ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কোহেন বলেছিলেন, ট্রাম্পকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সব করবেন তিনি। সেপ্টেম্বরে ভ্যানিটি ফেয়ারকে বলেন, ‘আমি সেই ব্যক্তি, যিনি প্রয়োজনে ট্রাম্পের জন্য বুক পেতে দিতে পারি।’ ‘আমি কোনো দিন তাকে ছেড়ে যাব না।’ সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস