Thank you for trying Sticky AMP!!

ট্রাম্পের টুইটার-যুদ্ধ

ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

নির্বাচনী প্রচারের সময় যেমন, ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পরও তেমনভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর টুইটারে ঝড় তোলা অব্যাহত রেখেছেন।

তবে ইদানীং ট্রাম্প তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে নিজের বিবাদ ফয়সালা করতে গিয়ে যে হারে এই হাতিয়ার (টুইটার) ব্যবহার করছেন, তাতে তাঁর নিজ দলের লোকেরাই শঙ্কিত।

গত রোববার সারা দিনে ট্রাম্প মোট ২৯টি টুইট করেন, যার বেশির ভাগই বিভিন্ন ব্যক্তির প্রতি ক্রুদ্ধ ও সমালোচনামূলক।

ট্রাম্পের সবশেষ রোষের শিকার হয়েছেন প্রয়াত রিপাবলিকান সিনেটর জন ম্যাককেইন। ‘আমেরিকার নায়ক’ হিসেবে বিবেচিত ভিয়েতনাম যুদ্ধের এই সাহসী পাইলটের বিরুদ্ধে ট্রাম্প কঠোরতম ভাষায় সমালোচনা করেছেন।

ওহাইওতে এক রাজনৈতিক সভায় ট্রাম্প বলেছেন, জন ম্যাককেইন লোকটাকে তিনি কোনো দিনই পছন্দ করতেন না। মৃত্যুর পর তাঁর জন্য যথাযথ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজনের নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন। কিন্তু সে জন্য কেউ তাঁকে ধন্যবাদ পর্যন্ত দেননি।

ভিন্নমতাবলম্বী হিসেবে পরিচিত ম্যাককেইনকে ট্রাম্পের অপছন্দের প্রধান কারণ হলো এই সিনেটর সিনেটে তাঁর শেষ ভোটটি ওবামাকেয়ার নামে পরিচিত স্বাস্থ্যবিমা কর্মসূচি বাতিলের বিরুদ্ধে দিয়েছিলেন।

অন্য কারণ—ট্রাম্পের অভিযোগ অনুসারে ম্যাককেইন তথাকথিত ‘স্টিল ডসিয়ে’ এফবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ গোয়েন্দা ক্রিস্টোফার স্টিল কর্তৃক প্রস্তুত করা এই অতি গোপনীয় দলিলে ট্রাম্প ও রাশিয়ার আঁতাতের নানা তথ্য-প্রমাণ রয়েছে, যার কোনো কোনোটি ট্রাম্পের জন্য মারাত্মক বলে ধারণা করা হয়।

এক টুইটে ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, ম্যাককেইন সামরিক স্কুলে সবচেয়ে খারাপ ছাত্র ছিলেন। তাঁর (ট্রাম্প) ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে তিনি ‘স্টিল ডসিয়ে’ এফবিআই, ডেমোক্র্যাট ও তথ্যমাধ্যমের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও নির্বাচনে তাঁর বিজয় কেউ ঠেকাতে পারেনি।

জন ম্যাককেইনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অব্যাহত আক্রমণের সমালোচনা রিপাবলিকান পার্টির ভেতরেই হচ্ছে।

ম্যাককেইনকে একজন প্রকৃত নায়ক অভিহিত করে ট্রাম্পকে তাঁর সমালোচনা বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন সিনেটর ড্যান সালিভন।

একই কথা বলেছেন কংগ্রেস সদস্য স্টিভ কিং। সিনেটর জন আইজ্যাকসন বলেছেন, ম্যাককেইনকে যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, তা খুবই দুঃখজনক।

ম্যাককেইনের বিধবা স্ত্রী ও কন্যাও ট্রাম্পের এমন ব্যবহারে বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য করেছেন।

ট্রাম্পের আক্রমণের অন্য লক্ষ্য তাঁর অন্যতম উপদেষ্টা কেলিঅ্যান কনওয়ের স্বামী জর্জ কনওয়ে। ওয়াশিংটনের নামজাদা আইনজীবী ও রিপাবলিকান–সমর্থক কনওয়ে একসময় ট্রাম্পের পক্ষেই ছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি কঠোর ভাষায় ট্রাম্পের বিভিন্ন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁর রোষানলে পড়েছেন।

জর্জ কনওয়েকে মি. কেলিঅ্যান কনওয়ে নামে অভিহিত করে ট্রাম্প বলেছেন, এই লোকটা আস্ত অপদার্থ। তিনি তাঁর স্ত্রীর সাফল্যে ঈর্ষা বোধ করছেন। জর্জকে তিনি ‘নরক থেকে আসা এক স্বামী’ নামেও বিদ্রূপ করেছেন।

জবাবে জর্জ কনওয়ে এক টুইটে ট্রাম্পের মানসিক ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের কথা বিবেচনার সময় এসেছে বলে ইঙ্গিত করেছেন তিনি।

ট্রাম্প তাঁকে যেভাবে আক্রমণ করেছেন, সে কথা উল্লেখ করে কনওয়ে পাল্টা টুইটে বলেছেন, ‘আপনার সম্বন্ধে যে কথা বলেছি, আপনার টুইট থেকে সে কথা তো আপনি নিজেই প্রমাণ করছেন।’

আরেক টুইটে কনওয়ে লিখেছেন, ‘আপনি। আস্ত। পাগল।’