Thank you for trying Sticky AMP!!

ট্রাম্প চান সরাসরি মঙ্গলে যেতে, নাসা চায় আগে চাঁদে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

মানুষের চন্দ্রজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী বা ৫০ বছর পূর্তি হলো গতকাল শনিবার। এ উপলক্ষে গত এক সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও গতকাল চন্দ্রজয়ের পূর্তি উদ্‌যাপিত হয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেপ ক্যানাভেরালে অবস্থিত কেনেডি স্পেস সেন্টারে সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এখান থেকেই ১৯৬৯ সালের ১৬ জুলাই স্যাটার্ন-৫ রকেটে করে অ্যাপোলো-১১ চন্দ্রযান উৎক্ষেপণ করা হয়। ওই চন্দ্রযানে করেই নাসার নভোচারী নিল আর্মস্ট্রং, বাজ অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা করেন। চার দিন পর ওয়াশিংটন সময় ২০ জুলাই বিকেল ৪টা ১৮ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দিবাগত মধ্যরাত ২টা ১৮ মিনিট) ইগল মডিউল অবতরণ করে চাঁদের বুকে। এর ৬ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট পর আর্মস্ট্রং প্রথম মানুষ হিসেবে তাঁর পা রাখেন চাঁদের পৃষ্ঠে। আর্মস্ট্রং তাঁর বাঁ পাটি প্রথম ফেলেছিলেন। চন্দ্রজয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টনে অবস্থিত জনসন স্পেস সেন্টারে। এই কেন্দ্র থেকেই নাসার মহাকাশে পাঠানো নভোচারীযুক্ত সব অভিযাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে আসছে।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স কেনেডি স্পেস সেন্টারে মানুষের সেই ঐতিহাসিক অগ্রযাত্রার স্মরণ করে এক ভাষণ দেন। মানুষের সেই অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বদানে গর্ব স্মরণ করেন তিনি। নাসার মহাকাশযাত্রা নিয়ে এই পেন্সই গত মার্চে সর্বশেষ ভাষণে প্রথম জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র চাঁদে মানুষ পাঠানোর সময়সীমা চার বছর এগিয়ে এনেছে। ফলে ২০২৮ নয়, ২০২৪ সালেই চাঁদের বুকে আবার মানুষের পদার্পণ ঘটাতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন।

গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যাপোলো-১১ চন্দ্রযানের জীবিত দুই কিংবদন্তি নভোচারী বাজ অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্সকে হোয়াইট হাউসে স্বাগত জানান। ট্রাম্প এদিন নাসার প্রধান জিম ব্রাইডেনস্টাইনকে বলেন, তিনি চাঁদের আগে মঙ্গলে যাওয়ার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। ব্রাইডেনস্টাইন অবশ্য ট্রাম্পকে বোঝান, মঙ্গলে যেতে হলে আগে যেতে হবে চাঁদে। চাঁদে লম্বা সময় মানুষ জীবিত থাকতে সক্ষম হলেই সৌরজগতের আরও গভীরে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হবে। 

ট্রাম্প অবশ্য এ কথায় সন্তুষ্ট হননি। তিনি এরপর তাঁর ডানে বসা কলিন্সকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনার মত কী?’ কলিন্স একমুহূর্ত চিন্তা না করে বলেন, ‘সরাসরি মঙ্গলে যাও “মঙ্গল” হবে।’ 

ট্রাম্প সঙ্গে সঙ্গে আবার নাসাপ্রধানকে চেপে ধরেন। এরপর ট্রাম্প অলড্রিনকেও জিজ্ঞেস করলে অলড্রিন বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, আমি গত ১০-১৫ বছরে কিছুটা হতাশ হয়েছি যুক্তরাষ্ট্রের এই মুহূর্তেই চাঁদে যাওয়ার সক্ষমতা নেই এ দেখে।’

চাঁদে মানুষ পাঠানোর ব্যয় যেনতেন ব্যাপার নয়। ১৯৬৯ সালের চন্দ্রজয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয় শুধু আটলান্টিক মহাসাগরের সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরকে যুক্তকারী কৃত্রিম পানামা খাল খনন প্রকল্প এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রথম পরমাণু বোমা বানানোর ‘ম্যানহাটন প্রকল্পের’ সঙ্গেই তুলনা করা যায়।

মহাকাশে এখন ইঁদুরদৌড় আরও বেশি

৫০ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র যখন চন্দ্রজয় করে, সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে তাদের জলে-স্থলে-অন্তরিক্ষে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে তখন। মহাকাশে এই লড়াইয়ের শুরুতে সোভিয়েত এগিয়ে গিয়েছিল। তারা মহাকাশে প্রথম স্যাটেলাইট পাঠিয়েছিল। তবে চাঁদের বুকে মার্কিন নভোচারী প্রথম পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই এই লড়াই পুরো নিজেদের করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে চন্দ্রজয়ের ৫০ বছর পর এসে দেখা যাচ্ছে, লড়াইয়ের ইঁদুরদৌড়ে সামনে লড়াই হবে চীনের সঙ্গে—ইঙ্গিত মিলছে তারও।