Thank you for trying Sticky AMP!!

নিউইয়র্কের পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে

দেহে করোনাভাইরাস আছে কি না পরীক্ষার জন্য কুইন্স বরোর এলমহার্স্ট হাসপাতালের বাইরে মানুষের লাইন। ছবি: রয়টার্স

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছুঁই ছুঁই। মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। আমেরিকার অবস্থাও ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আমেরিকায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছে। আমেরিকায় সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতি নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। অঙ্গরাজ্যটিতে এরই মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে। আর ২৬ মার্চ সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩৮৫।
আমেরিকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৯ হাজার ছাড়িয়েছে। সবচেয়ে ভয়ের কথা হলো, এর প্রায় অর্ধেকই শনাক্ত হয়েছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে, যেখানে এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৩৮৫ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৬ বাংলাদেশিও।
আমেরিকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি। এর পর বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও শহরের কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে লকডাউনের ঘোষণা দেয়। নিউইয়র্ক কর্তৃপক্ষও দ্রুত এমন পদক্ষেপ নিয়েছিল। কিন্তু তাতেও ভাইরাসটির সংক্রমণ থামানো যায়নি। বর্তমানে আমেরিকায় আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়ছে।

এরই মধ্যে বৈশ্বিকভাবে ছড়িয়ে পড়া এ মহামারিতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বিচারে আমেরিকা তৃতীয় অবস্থানে চলে এসেছে। চীন ও ইতালির পরই তার অবস্থান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২৪ মার্চই সতর্ক করেছিল এই বলে যে, মহামারির পরবর্তী কেন্দ্র হতে পারে আমেরিকা। আক্রান্তের সংখ্যা বিচারে এই সতর্কবার্তা সত্য হতে চলেছে বলেই মনে হয়। মৃতের সংখ্যা বিচারে আমেরিকার বর্তমান অবস্থান ষষ্ঠ। আমেরিকার চেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ইতালি, স্পেন, ইরান, চীন ও ফ্রান্সে।
ইতালিতে মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে সাড়ে সাত হাজার ছাড়িয়েছে। স্পেনের অবস্থাও ক্রমে খারাপের দিকে যাচ্ছে। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৬০০ ছাড়িয়েছে। আমেরিকায় মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়ানোর কারণে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গঠিত হোয়াইট হাউসের টাস্কফোর্সের সদস্য ও মহামারি সম্পর্কিত আমেরিকার সবচেয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসক অ্যান্থনি ফাওচি ২৬ মার্চ ট্রাম্প প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্রুত অর্থনীতিকে সচল করার পদক্ষেপ গ্রহণের ইচ্ছা পোষণ করায় তিনি এ সতর্কবার্তা দেন।
অর্থনীতি সচল করা বা আমেরিকানদের দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা হচ্ছে। অঙ্গরাজ্যগুলো নিজেদের মতো করে প্রতিরোধ পরিকল্পনা তেলি করছে। নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (এনওয়াইপিডি) যেমন মানুষকে সচেতন করতে নানা কার্যক্রম চালাচ্ছে। সর্বশেষ ২৬ মার্চ দেওয়া এক বিবৃতিতে এনওয়াইপিডি জানায়, নিউইয়র্ক নগরীতে মানুষকে সচেতন করতে ৬৬০ জন পুলিশ সদস্যকে নামানো হচ্ছে। তাঁরা মানুষকে পরস্পর থেকে অন্তত ছয় ফুট দূরত্ব রেখে চলাচল করতে প্রচার চালাবেন। না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে একই সঙ্গে তাঁরা আশা প্রকাশ করে বলেন, মানুষ বুঝবে এবং কাউকে গ্রেপ্তার করার প্রয়োজন পড়বে না বলে তাঁরা আশাবাদী। কঠোরভাবে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা শুরু হবে ৩০ মার্চ থেকে।
এদিকে করোনাভাইরাসের আতঙ্কের কারণে নিউইয়র্ক নগরীর বাসিন্দারা জরুরি নম্বরে (৯১১) অনেক বেশি ফোন করছেন বলে জানা গেছে। এই প্রেক্ষাপটে নগরীর দমকল কর্তৃপক্ষ ‘শুধু জরুরি প্রয়োজনেই’ জরুরি সেবা নম্বর ব্যবহারের জন্য মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন। এ সম্পর্কিত বিবৃতিতে এফডিএনওয়াই বলেছে, ‘যদি শ্বাসকষ্ট, উচ্চ মাত্রার জ্বরসহ গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়, তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যোগাযোগ করুন। ৯১১-এ ফোন করবেন তখনই, যখন আপনার পক্ষে হাসপাতালে পোঁছানোটাও সম্ভব হচ্ছে না।’