Thank you for trying Sticky AMP!!

নিখোঁজ খাসোগিকে নিয়ে বিপদে ট্রাম্প

ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার কলাম লেখক ও সৌদি রাজতন্ত্রের কঠোর সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাসোগি ১০ দিন আগে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর থেকে নিখোঁজ। ধারণা করা হচ্ছে, কনস্যুলেটে প্রবেশের পর তাঁকে হত্যা করে গোপনে সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তুর্কি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খাসোগি যে কনস্যুলেটে অবস্থানের সময় নিহত হয়েছেন, তার অডিও ও ভিডিও রেকর্ডিং তাদের কাছে রয়েছে। তারা এমন দাবিও করেছে, খাসোগির দেহ গোপনে স্থানান্তরের জন্য সৌদি আরব থেকে একটি বিমান এই ঘটনার ঠিক পরে পরেই ইস্তাম্বুলে অবতরণ করে ও কিছু সময় পরে ফিরে যায়।

ঘটনাটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর অবস্থার জন্ম দিয়েছে। সৌদি রাজতন্ত্র, বিশেষ করে এর রাজপুত্র প্রিন্স সালমানের সঙ্গে ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। মাত্র গত সপ্তাহেই ট্রাম্প বলেছেন মার্কিন সমর্থন ছাড়া সৌদি দুই সপ্তাহও টিকে থাকতে পারবে না। তা সত্ত্বেও ট্রাম্প নিজে এখন পর্যন্ত খাসোগির সন্ধান দিতে সৌদি বাদশার ওপর কোনো প্রত্যক্ষ চাপ প্রয়োগে সম্মত হননি।

সিনেটে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক উভয় দলের দুই শীর্ষস্থানীয় সিনেটর এক চিঠিতে এ ব্যাপারে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির রিপাবলিকান সদস্য সিনেটর বব কর্কার ও ডেমোক্রেটিক সিনেটর বব মেনেনদেজ তাঁদের যৌথপত্রে বলেছেন, মাগনিতস্কি মানবাধিকার দায় নামে পরিচিত আইনের ভিত্তিতে খাসোগির প্রশ্নটি তদন্ত হতে পারে। এই আইনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিশেষাজ্ঞা আরোপ করেছে। বব কর্কার বলেন, এই আইনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গৃহীত হলে সৌদি রাজতন্ত্রের প্রতি একটি কড়া বার্তা পাঠানো যাবে। এই নিখোঁজ হওয়ার পেছনে সৌদির হাত রয়েছে প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ট্রাম প্রশাসনের ওপর প্রবল চাপ আসবে বলে মনে করেন কর্কার।

কোনো কোনো সিনেটর সৌদির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি চুক্তি বাতিলের পক্ষে। ডেমোক্রেটিক সিনেটর টিম কেইন দাবি তুলেছেন, এই নিখোঁজের পেছনে কোনো সৌদি হাত নেই, সে কথা প্রমাণের দায়িত্ব সৌদি সরকারের। আর তা প্রমাণে ব্যর্থ হলে সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র বিক্রির যে চুক্তি করেছে তা বাতিল করতে হবে। কেইন সৌদি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি বাতিলেরও পক্ষে। একই কথা বলেছেন রিপাবলিকান সিনেটর র‍্যান্ড পল।

ট্রাম্প নিজে এই মুহূর্তে সৌদি আরবের ওপর কোনো রকম নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরুদ্ধে। ফক্স নিউজকে তিনি বলেছেন, মধ্য প্রাচ্যের কোনো দেশে অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিরুদ্ধে তিনি। এটি একটি ভুল পদক্ষেপ হবে। ট্রাম্প অবশ্য ঘটনার তদন্তের পক্ষে মত দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ফক্স টিভিকে তিনি বলেন, খাসোগির নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তাঁর মোটেই ভালো লাগছে না, কিন্তু এই মুহূর্তে সৌদি আরবের সঙ্গে স্বাক্ষরিত অস্ত্র বিক্রি চুক্তি বাতিলের বিপক্ষে তিনি।

স্মরণযোগ্য, গত বছর মে মাসে সৌদি আরবে এক সরকারি সফরকালে ট্রাম্প সে দেশের সরকারের সঙ্গে ১১০ বিলিয়ন ডলারের অত্যাধুনিক অস্ত্র বিক্রি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, যে অস্ত্র বিক্রির চুক্তি হয়েছে, তা যদি যুক্তরাষ্ট্র বাতিল করে, তাহলে সে চুক্তি লুফে নিতে আরও চার-পাঁচটি দেশ তৈরি হয়ে আছে।