Thank you for trying Sticky AMP!!

নৈতিক শিক্ষা হোক সন্তানের প্রথম পাঠ

জ্যাকসন হাইটসে ১২ এপ্রিল বিকেলে সাপ্তাহিক কোয়ান্টাম সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে এবারের বিষয় ছিল ‘নৈতিক শিক্ষা হোক সন্তানের প্রথম পাঠ’।
স্থানীয় মামুনস টিউটোরিয়ালে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে আলোচনা করেন কোয়ান্টাম মেডিটেশন সোসাইটি জ্যাকসন হাইটসের দায়িত্বরত শাহনাজ আলম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শামীম আহমেদ।
সেমিনারে আলোচক বলেন, প্রতিটি শিশুর মন বুঝে তাকে তার বোঝার মতো করে নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। আসলে নৈতিক শিক্ষা মানে এমন শিক্ষা যার ফলে শিশুটির মনে প্রেম, মমতা, ভালোবাসা, উদারতা জাগ্রত হয়। সন্তানের মাথা ভরা বুদ্ধি আমরা চাই, শরীরের পেশি ভরা শক্তিও আমরা চাই, কিন্তু সবচেয়ে বেশি চাই তার হৃদয় ভরা মমতা। যে মমতার সাহায্যে সে নিজেই ঠিক করতে পারবে কোনটি করা উচিত, কোনটি করা উচিত না, কখন কী বলা যায় আর কখন কী বলা যায় না। নৈতিক শিক্ষা সব সময় ছায়ার মতো তার পাশে থেকে ভালো কিছু করতেই তাকে উৎসাহিত করবে আর মন্দ কিছু করা থেকে বিরত রাখতে সব সময় তাড়িয়ে বেড়াবে।
শাহনাজ আলম বলেন, শিশুদের বড় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অভিভাবকেরা তাঁদের নিয়ে যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হন, তার মধ্যে সন্তানের মিথ্যা বলাও পড়ে। মনোবিদদের মতে, বকুনির ভয়ে মিথ্যা বলা দিয়েই এই অভ্যাস বাসা বাধে শিশুদের স্বভাবে। কোনো কোনো সময় মা-বাবা এই স্বভাবকে অবহেলা করে গেলেও তা পরে বড় আকার ধারণ করে। শুধু তাই-ই নয়, কথায় কথায় মিথ্যা বলার এই স্বভাব শিশুর জীবনেও নানা ক্ষতি করে, ছোট থেকেই তা রুখে না দিলে এই অভ্যাস খুব বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে।
আলোচক আরও বলেন, শাসন বা মারধরে না গিয়েও এই স্বভাব রুখে দেওয়া সম্ভব। মনোবিদদের মতে, শিশুকে প্রথম থেকেই গল্পের ছলে মনীষীদের জীবনী, ঈশপের নানা গল্প, নীতিকথা শেখান। বড় মানুষেরা কেউ মিথ্যা পছন্দ করছে না অথবা মিথ্যা বিষয়টা খুব একটা গ্রহণীয় নয়-এ ধারণা মনের মধ্যে প্রবেশ করান। শিশুদের সামনে যতটা সম্ভব মিথ্যা এড়িয়ে চলুন। তারা কিন্তু অভিভাবকদের থেকেই সবচেয়ে বেশি শেখে।
শাহনাজ আলম বলেন, স্কুল থেকে ফিরলে বা কোনো বন্ধুর সঙ্গে মিশলে, লক্ষ রাখুন তার চারপাশের বন্ধুরা কেমন। তাদের মধ্যে কারও মিথ্যা বলার প্রবণতা থাকলে তা যেন আপনার শিশুকে প্রভাবিত করতে না পারে, সে বিষয়ে যত্নবান হোন। দরকার হলে মিথ্যা বলা শিশুটির অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলুন। কোনো কারণে আপনার শিশু কী নিজের ওপর আস্থা হারাচ্ছে বা অবহেলিত হচ্ছে কোথাও, সেদিকে নজর রাখুন। এসব কারণ ঘটলেও শিশুরা মিথ্যার আশ্রয় নেয়। কোনটি মিথ্যা আর কোনটি কল্পনা, তা আগে নিজেরা বুঝুন। শাসনের বাড়াবাড়ি নয়, দরকারে কথা বলুন শিশুর সঙ্গে। কোনোভাবেই মিথ্যা রুখতে না পারলে শিশু মনোবিদ বা চাইল্ড সাইকোলজিস্টের সঙ্গে কথা বলুন।
উল্লেখ্য, সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় জ্যাকসন হাইটসের মামুনস টিউটোরিয়ালে জীবনের বিভিন্ন সমস্যা, সাফল্য ও সম্ভাবনা নিয়ে সেমিনার ও মেডিটেশনের আয়োজন করে কোয়ান্টাম।