Thank you for trying Sticky AMP!!

বাইডেনের প্রথম আন্তর্জাতিক পরীক্ষা

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এখনো তাঁর প্রশাসন গুছিয়ে উঠতে পারেননি। ঠিক এমন সময়ে তাঁর প্রশাসন প্রথম কোনো বড় আন্তর্জাতিক সংকটের মুখোমুখি হলো। মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের ঘটনা বাইডেনের সামনে প্রথম আন্তর্জাতিক পরীক্ষা হিসেবে হাজির হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে এ কথা বলা হয়।

গত ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসেন বাইডেন। গতকাল ১ ফেব্রুয়ারি ছিল তাঁর ক্ষমতার ১৩তম দিন। ঠিক এদিনই মিয়ানমারে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান করে দেশটির সেনাবাহিনী। তারা অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নির্বাচিত সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেছে। সেনা কর্তৃপক্ষ দেশটিতে এক বছরের জন্য জারি করেছে জরুরি অবস্থা। একই সঙ্গে তারা সু চিসহ এনএলডির শীর্ষ নেতাদের অন্তরীণ করে রেখেছে।

মিয়ানমারে এই ঘটনার পরই বাইডেন প্রশাসন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখায়। হোয়াইট হাউস বিবৃতি দিয়ে মিয়ানমারের সেনা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়, সু চিসহ আটক নেতাদের মুক্তি না দিলে মিয়ানমারের দায়ী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবস্থা নেবে। একই সঙ্গে হোয়াইট হাউস মনে করিয়ে দেয়, মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক উত্তরণ বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টার বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্র।

হোয়াইট হাউসের পর গতকাল প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিজেই মিয়ানমার ইস্যুতে বিবৃতি দেন। তাঁর বিবৃতিটি সরাসরি হুমকি। তিনি মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত জরুরি ভিত্তিতে পর্যালোচনা করবে তাঁর প্রশাসন।

মিয়ানমারের ক্ষেত্রে বাইডেনের সম্ভাব্য শাস্তিমূলক পদক্ষেপগুলো কী হতে পারে, তা উল্লেখ করেছে রয়টার্স। বার্তা সংস্থাটি বলছে, মিয়ানমারের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন বাইডেন। মিয়ানমারের অর্থসহায়তা কাটছাঁট করতে পারেন তিনি। গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে দেশটির জেনারেলদের কালো তালিকাভুক্ত করতে পারে বাইডেন প্রশাসন। এ ছাড়া সেনা পরিচালিত কোম্পানিগুলোর ওপরও বাইডেন নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন।

অং সান সু চি

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে মানবাধিকারের বিষয়টি ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছেন বাইডেন। পাশাপাশি মিত্রদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এই অঙ্গীকারের প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয়, তা বাইডেনের জন্য একটি প্রাথমিক পরীক্ষা।

অবশ্য বাইডেন তাঁর বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, তাঁর প্রশাসন গণতন্ত্রের পক্ষে থাকবে। বিশ্বে যেখানেই গণতন্ত্র আক্রমণের শিকার হবে, সেখানেই গণতন্ত্রের পাশে দাঁড়াবে তাঁর প্রশাসন।

প্রায় এক দশক আগে মিয়ানমারের সেনা কর্তৃপক্ষ গণতান্ত্রিক উত্তরণের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিলে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন ধীরে ধীরে দেশটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু মিয়ানমার আবার সেনাশাসনের কবলে পড়েছে। তাই দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের হুমকি দিয়েছেন বাইডেন।

মার্কিন অর্থ দপ্তরের সাবেক জ্যেষ্ঠ নিষেধাজ্ঞাবিষয়ক উপদেষ্টা পিটার কুকিক মনে করেন, বাইডেন নতুন করে মিয়ানমারের ওপর একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে তিনি তাঁর নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারেন।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে বাইডেন প্রশাসন স্পষ্ট করতে পারে, তারা সামরিক অভ্যুত্থানকে কোন চোখে দেখে, আর তারা দেশটিতে কীই-বা দেখতে চায়। তবে অতীতে মিয়ানমারের জেনারেলদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়ে বিতর্ক আছে।