মৃত্যুর মিছিল কোথায় গিয়ে থামবে?
করোনাভাইরাসে গ্রাস করা নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের মৃত্যুর মিছিলি কোথায় গিয়ে ঠেকবে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। দিনে গড় মৃত্যুর সংখ্যা নিউইয়র্কে কমলেও আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত আমেরিকায় ২১৯ বাংলাদেশির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
নিউইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর নগরের বাইরের কিছু হাসপাতালে নিয়মিত অন্যান্য মেডিকেল সার্জারি করার অনুমতি দিয়েছেন। এ ধরনের সার্জারি নিউইয়র্ক নগরকেন্দ্রের হাসপাতালে বন্ধ রয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সামাল দিতে হচ্ছে এখনো এসব হাসপাতালকে।
করোনা দুর্যোগে লকডাউনে থাকা নিউইয়র্ক নগরে অপরাধের ঘটনা বেড়ে গেছে। কর্মহীন হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। কর্মহীন ভাতার জন্য আবেদনের চার সপ্তাহ পরেও এখনো বহু আবেদনকারী কোন জবাব পাচ্ছেন না। রাজ্য কর্তৃপক্ষ থেকে অপেক্ষার কথাই বলা হচ্ছে শুধু। লোকজন সাপ্তাহিক ভাতা নিয়মিত না পাওয়ায় অসংখ্য পরিবারে অর্থনৈতিক সংকট শুরু হয়েছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণের অর্থের প্রথম দফা বড় ব্যবসায়ীরা নিয়ে গেছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেকেই আবেদনই করতে পারেননি। আবেদনের জন্য যেসব নথিপত্রের প্রয়োজন, তা অনেক প্রান্তিক ব্যবসায়ীর হাতে নেই। তাদের সাহায্য নিতে হচ্ছে অ্যাকাউন্ট্যান্ট বা অ্যাটর্নিদের কাছ থেকে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, নিউইয়র্কে বেশির ভাগ ১০৯৯ নিয়ে কাজ করা কর্মজীবী মানুষও পড়েছেন অর্থসংকটে। নগরের ট্যাক্সিক্যাব চালকদের ৯০ ভাগ মানুষ এখনো বেকারভাতা পাননি।
এ অবস্থায় কর্মহীন মানুষের মধ্যে বেড়েছে আতঙ্ক। বেকারভাতার জন্য যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁরা যদি কর্মস্থলে ফিরে না যেতে চান, সে ক্ষেত্রে বেকারভাতা প্রাপ্তি নির্ভর করবে সেই রাজ্যের পরিস্থিতির ওপর।
মার্কিন শ্রম দপ্তর বলছে, করোনাভাইরাসের কারণে শুধু বাড়িতে বসে থাকা এবং বেনিফিট সংগ্রহ করে চালিয়ে যাওয়ারও বিপক্ষে তারা। তবে কংগ্রেসের তৈরি একটি বিশেষ প্রোগ্রামের আওতায় শুধু কিছু লোক বেকারভাতা পাবে যাঁরা স্বাস্থ্য সেবাদানকারীর পরামর্শে পরিচালিত স্ব-কোয়ারেন্টিনে আছেন এবং কাজে যাওয়ার একেবারই উপযোগী নন।
বেশির ভাগ মানুষের অ্যাকাউন্টে করোনা সহায়তার অর্থ এসেছে। নানা জটিলতার কারণে অনেকেই পাননি এখনো। ফেডারেল সাহায্যের চেকও আসতে শুরু করেছে। যদিও অনেকেই এখনো পাননি। ডাকযোগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাক্ষর করা চেক আসছে। এরই মধ্যে ঘরের সামনের মেইলবক্স থেকে চেক চুরি হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। ২৪ এপ্রিল নিউইয়র্ক নগরের ব্রুকলিন থেকে ফেংগ চ্যান (৩১) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চেন নামের ওই ব্যক্তি ঘরে থাকা লোকজনের মেইল বক্স হাতিয়ে নিচ্ছিল। ফেডারেল থেকে আসা চেক চুরি করছিল। তার কাছে আরও কিছু চুরি করা ক্রেডিট কার্ডও পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিউইয়র্ক নগরীর কুইন্সে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি আমেরিকানের বসবাস। করোনাভাইরাসের আক্রমণও কুইন্সে হয়েছে সবচেয়ে বেশি। নগরের শুধু কুইন্স এলাকায় মারা গেছেন চার হাজারের বেশি লোক। আমেরিকায় করোনায় মারা যাওয়া দুই শতাধিক বাংলাদেশি আমেরিকানের মধ্যে কুইন্সে বসবাসরত প্রবাসীর সংখ্যাই বেশি।
কুইন্সের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ম্যালিন্ডা কার্টজ জানিয়েছেন, মহামারি সমস্যা শুরু হওয়ার পর কুইন্সে আত্মহত্যার সংখ্যাও বেড়ে গেছে।
আরও পড়ুন
-
ঢাকাসহ ৫ জেলা: মাধ্যমিক কাল বন্ধ হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলাই থাকছে
-
ঢাকাসহ ৫ জেলার মাধ্যমিক স্কুল–কলেজ কাল বন্ধ ঘোষণা
-
ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের নিয়ে দপ্তরে উপাচার্য, শিক্ষকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি
-
সাবেক স্ত্রীর করা ৩ মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান
-
কাজ না পেয়ে প্রকৌশলীর শার্টের কলার ধরলেন ঠিকাদার