Thank you for trying Sticky AMP!!

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শপিং মল কোম্পানির দেউলিয়া ঘোষণার আবেদন

ওহাইওভিত্তিক শপিং মল কোম্পানি ‘ওয়াশিংটন প্রাইম গ্রুপ’ স্থানীয় সময় ১৪ জুন আদালতে এ আবেদন জানিয়েছে

করোনার বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কিছুই বদলে যাচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম ব্যবসা-বাণিজ্য। আলোঝলমলে শপিং মল কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রে যে ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে উঠেছে, তাতে পরিবর্তন আসছে। তার সবশেষ উদাহরণ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শপিং মল কোম্পানির নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করার আবেদন।

ওহাইওভিত্তিক শপিং মল কোম্পানি ‘ওয়াশিংটন প্রাইম গ্রুপ’ স্থানীয় সময় ১৪ জুন আদালতে এ আবেদন জানিয়েছে। দেউলিয়া ঘোষণার আবেদন করে কোম্পানিটি দেনা থেকে দায়মুক্তির আরজি জানিয়েছে। এ আবেদন গৃহীত হলে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নগরীতে থাকা কোম্পানিটির শতাধিক শপিং মল চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে।

ওয়াশিংটন প্রাইম গ্রুপ জানিয়েছে, করোনা মহামারি তাদের শপিং মল ব্যবসার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। তাই তারা দেউলিয়া ঘোষণার আবেদন করতে বাধ্য হয়েছে। এ আবেদন আদালতের অনুমোদন করতে হবে। সে পর্যন্ত তারা ব্যবসা চালিয়ে যাবে।

ওয়াশিংটন প্রাইম গ্রুপের শেয়ার গত এক বছরে অন্তত ৬০ শতাংশ নেমেছে। ওয়াশিংটন প্রাইম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী লি কনফর্টি বলেছেন, শপিং মলগুলো পুরোপুরি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য কোম্পানির অর্থনৈতিক কাঠামো পুনর্বিন্যাস করা হবে।

আমেরিকার শপিং মলনির্ভর খুচরা বাণিজ্যের এ পরিবর্তন দ্রুত ঘটছে। এখন আমাজন ও অন্যান্য অনলাইন ডেলিভারির গাড়ি সর্বত্র দেখা যায়। এ পরিবর্তনের ফলে শপিং মলনির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।

মার্কিন সমাজ ও জীবনধারার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে আলোঝলমলে শপিং মল। কিন্তু এখন তা একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ বাস্তবতার কথা অনেকে ভাবতেই পারছে না।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে শপিং মলনির্ভর খুচরা ব্যবসা-বাণিজ্যে দ্রুত পরিবর্তন ঘটতে দেখা গেছে। লোকজন ব্যাপকভাবে অনলাইন শপিংয়ের ওপর নির্ভর করছে। এতে ক্রেতা ঘরে বসেই পণ্য হাতে পেয়ে যাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি অনলাইন শপিংকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে।

করোনার কারণে প্রায় এক বছর যুক্তরাষ্ট্রের সব শপিং মল বন্ধ ছিল। শপিং মল পরিচালনার ব্যয়সহ অন্যান্য কারণে এ কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে। এ কারণে তারা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় শপিং মলে শুধু যে খুচরা ব্যবসার প্রতিষ্ঠান আছে, এমন নয়; এখানে বিনোদন ও সেবা খাতের নানা প্রতিষ্ঠান আছে। এ কারণে শপিং মল বন্ধ হলে এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসাও অনিশ্চয়তায় পড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের অন্য আরও দুটি শপিং মল কোম্পানি গত বছর নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার আবেদন জানায়। সে আবেদনে খুচরা বাণিজ্যে আসা পরিবর্তনের কথা জানানো হয়।

কোম্পানিগুলো বলছে, শপিং মলে ভাড়া দেওয়া বিভিন্ন বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া ভাড়া পড়ে আছে। ভাড়াটেরা এখন হ্রাসকৃত মূল্যে দোকান ভাড়া নিতে চায়। কিন্তু শপিং মল পরিচালনার ব্যয় বেড়েছে। ব্যয় অনুযায়ী ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

মার্কিন খুচরা বাণিজ্য বিশ্লেষক নেইল সাউন্ডার্স বলেছেন, করোনা মহামারি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে আসছে ঠিকই; কিন্তু এ মহামারি বেশ কিছু গভীর ক্ষত রেখে যাচ্ছে। এসব সামাল দিতে না পারলে সমাজ ও অর্থনীতির ক্ষতি চিরস্থায়ী হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বাণিজ্যের বিশ্লেষকেরা বলছেন, করোনা মহামারি খুচরা বাণিজ্যের ধরন পাল্টানোর কাজটিকে বেগবান করেছে। মানুষ এখন ই-কমার্সের ওপর নির্ভরশীল ও অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৮০ হাজারের বেশি খুচরা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। মহামারিপরবর্তী বাস্তবতায় আরও এমন বহু খুচরা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতে পারে।