Thank you for trying Sticky AMP!!

স্বাস্থ্যবিমার আওতার বাইরে থাকা শিশুর সংখ্যা বাড়ছে

এক দশকের মধ্যে আমেরিকায় প্রথমবারের মতো স্বাস্থ্যবিমার আওতার বাইরে থাকা শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। এ ঘটনা বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। শক্তিশালী অর্থনৈতিক বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে যখন কর্মসংস্থান ও নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের দেওয়া স্বাস্থ্যবিমার আওতা বাড়ছে, তখন শিশুদের এই বিমার আওতার বাইরে থেকে যাওয়াটা দুশ্চিন্তার জন্ম দিয়েছে।

জাতীয়ভাবে স্বাস্থ্যবিমার আওতার বাইরে থাকা লোকের সংখ্যা না বাড়লেও শিশুদের সংখ্যা বেড়েছে। গত ২৯ নভেম্বর জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর চিলড্রেন অ্যান্ড ফ্যামিলিস প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে স্বাস্থ্যবিমার বাইরে থাকা শিশুর সংখ্যা বেড়ে ৩৯ লাখে দাঁড়িয়েছে। আগের বছরের তুলনায় এ সংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার বেশি। শতাংশের হিসেবে ১৮ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সীদের মধ্যে ৫ শতাংশই বর্তমানে স্বাস্থ্যবিমার আওতার বাইরে রয়েছে। আগের বছরে এ হার ছিল ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক জোয়ান আলকার সিএনএনকে বলেন, ‘আমেরিকার অর্থনীতি দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে। বেকারত্বের হারও অনেক কম। কিন্তু এমন ইতিবাচক অবস্থাতেও সত্য হচ্ছে শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিচারে আমাদের দেশ উল্টো পথেই যাচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এ বছরও এ ধারা (স্বাস্থ্য সুরক্ষার বাইরে থাকা শিশুদের সংখ্যা বৃদ্ধি) অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে।’
স্বাস্থ্য সুরক্ষার বাইরে থাকা শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধির সুনির্দিষ্ট কারণ চিহ্নিত করা না গেলেও জোয়ান এই ঘটনাকে বর্তমান ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত পদক্ষেপের ফলাফল হিসেবে দেখছেন। তাঁর মতে, ট্রাম্প প্রশাসন ও কংগ্রেস স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন (ওবামাকেয়ার) বাতিল ও মেডিকএইড (চিকিৎসা সহায়তা প্রকল্প) সংকুচিত করেছে। একই সঙ্গে শিশুদের দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্পের জন্য তহবিল বরাদ্দ দিতেও কয়েক মাস সময় ব্যয় করেছে। এই সময়ের মধ্যে বহু অঙ্গরাজ্যের কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা হয়তো আর এ প্রকল্প চালিয়ে নিতে পারবে না। এই পরিবারগুলো ২০১৭ সালে স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্প বাতিল বিষয়ক একের পর এক সংবাদ পেয়েছে। এরই ফল হিসেবে বহু শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থার বাইরে থেকে গেছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালে আমেরিকার মোট শিশুর সাড়ে ৭ শতাংশই ছিল স্বাস্থ্যবিমার আওতার বাইরে। ২০১৪ সালে মেডিকএইড প্রকল্পের পরিসর বাড়ানো হয়। একই সঙ্গে চালু করা হয় ওবামাকেয়ার। এতে শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়। ২০১৬ সালে স্বাস্থ্যবিমার আওতার বাইরে থাকা শিশুর সংখ্যা মোট শিশুর ৪ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে আসে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা খাত উল্টো যাত্রা শুরু করে। ওবামাকেয়ার বাতিলকে এর অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত কঠোর অভিবাসন নীতিকেও একটি বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত অভিবাসন নীতিতে সরকারি সহায়তা তহবিল গ্রহণকারীদের গ্রিনকার্ড আবেদন বাতিলের কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ধরনের পরিবারের সদস্যদের ভিসা আবেদন খারিজ করারও এক অঘোষিত নীতি নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অভিবাসন এজেন্টদের তৎপরতা বৃদ্ধি অভিবাসীদের মধ্য ভয়াবহ এক শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। ফলে অভিবাসী পরিবারগুলোর মধ্য স্বাস্থ্য সুরক্ষার মতো প্রকল্পে অংশগ্রহণের হার কমতে শুরু করেছে।
জোয়ান আলকার জানান, ২০১৭ সালে আমেরিকার কোনো অঙ্গরাজ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষার আওতার বাইরে থাকা শিশুর সংখ্যা কমেনি। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া। এ ছাড়া সাউথ ডেকোটা, ইউটা, টেক্সাসসহ নয়টি অঙ্গরাজ্যে এ ধরনের শিশুর সংখ্যা বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি অরক্ষিত শিশু রয়েছে টেক্সাসে। অঙ্গরাজ্যটির মোট শিশুর ১০ দশমিক ৭ শতাংশই স্বাস্থ্যবিমার আওতার বাইরে রয়েছে।