Thank you for trying Sticky AMP!!

'মানবাধিকারই নারী অধিকার'

জ্যাকসন হাইটসে ‘আমিই প্রজন্ম সমতা-নারীর অধিকার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত নারী দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: এম বি তুষার

মানবাধিকার নিশ্চিত হলেই নারীর অধিকার নিশ্চিত হবে। সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে নারীদের অধিকারের লড়াই চলমান। সভ্যতার আজকের বাস্তবতাতেও নারীদের সর্বক্ষেত্রে অধিকার ও সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলে নারীদের এগিয়ে চলার প্রতিটি ধাপ আজও মসৃণ হয়ে ওঠেনি। তাই মানবাধিকারই নারী অধিকার।

নারী দিবসকে সামনে রেখে নিউইয়র্কে এক আলাপ-সংলাপ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেছেন। ‘আমিই প্রজন্ম সমতা-নারীর অধিকার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ৫ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর জ্যাকসন হাইটসে জমায়েত হন নারী সংগঠক, লেখক, সাংবাদিক ও নানা কাজে সক্রিয় নারীরা। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা ও এসেনশিয়াল ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর আয়োজিত নারী দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন শিমু আফরোজ ও রূপা খানম। স্বাগত বক্তব্য দেন মনিজা রহমান।

নিউইয়র্কে নারী সংগঠকদের অন্যতম পথিকৃৎ নার্গিস আহমেদ আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, নারী অধিকারের সঙ্গে অধিকারসচেতন পুরুষদের কোনো বিরোধ নেই। নিজেদের যোগ্য করে তোলার মধ্য দিয়ে নারীদের এগিয়ে যেতে হবে। বিপত্তিগুলোকে চিহ্নিত করে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।

সাংবাদিক নিনি ওয়াহেদ তাঁর বক্তব্যে নারীর লড়াইকে চিহ্নিত করার জন্য নারী অধিকার নিয়ে সচেতনতাকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানান।

আলাপ সংলাপ আর সংগীতে নিউইয়র্কের আলোকিত নারীদের আলোচনায় উঠে আসে নিজেদের সংগ্রাম আর সাফল্যের কথা। রওশন হক, জাহেদা আলম, সানজিদা ঊর্মি ও মনজুরুল হকের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অনেকেই বক্তব্য রাখেন। কবিতা পড়েন জেবুন্নেছা জ্যোৎস্না, সেলিনা আক্তার, মাকসুদা আহমদ, নিনি ওয়াহিদ, আলেয়া চৌধুরী, নার্গিস আহমেদ, অ্যাকটিভিস্ট রোকেয়া আখতার, জুলি রহমান, সুতপা মণ্ডল, সুলেখা পাল, নিরু নিরা, এইচ বি রিতা, আইরীন রহমান, ভায়লা সালিনা, পিনাকী তালুকদার, মনীষা তৃষা, রওশন হাসান, কান্তা কাবীর, রাজিনা চৌধুরী, ফরিদা ইয়াসমীন, রওশন হাসান, চন্দা খান, শিরিন আখতার সাঈদা ও আফরোজা বেগম রোজি।

জ্যাকসন হাইটসে নারী সংগঠক, লেখক, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশার নারীরা হাজির হন। ছবি: এম বি তুষার

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বিশ্বাস, ইশতিয়াক রূপু, সাবরই সাবেরীন, আব্দুশ শহীদ, গোপন সাহা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন ফারহানা তুলি। কবি পাবলো নেরুদার কবিতা পাঠ করেন শাহ আহমেদ। নারী দিবসের অনুষ্ঠানে সাংবাদিক, লেখক মনিজা রহমানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান সমবেত নারী সংগঠক ও লেখকেরা।

জাতিসংঘ ১৯৭৫ সাল থেকে প্রতিবছর ৮ মার্চ তারিখে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে আসছে। দিবসটি উদযাপনের পেছনে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ে সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমেছিলেন তৎকালীন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯১০ সালে ডেনমার্কে অনুষ্ঠিত নারীদের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৮ মার্চকে নারী দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। জাতিসংঘ দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। এরপর থেকে পৃথিবীজুড়েই দিনটি নারী দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।