Thank you for trying Sticky AMP!!

'রঙ্গে ভরা বৈশাখ আমার আইলো রে'

পয়লা বৈশাখ মানেই বাঙালির প্রাণের উৎসব। বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে বৈশাখ মাসের ১ তারিখ বাংলা নববর্ষ। যদিও আমেরিকায় কেউ বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে চলে না, তবুও পয়লা বৈশাখ বাঙালির চিরায়ত সার্বজনীন আনন্দ উৎসবের একটা দিন। তাই এই ভিন দেশে এসেও আমরা পয়লা বৈশাখ খুব ধুমধামে পালন করি। কারণ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা বাংলা নববর্ষ পালন করে আসছি বহুকাল ধরে। শেকড়ের সন্ধান খুঁজে পাই এই দিনটাতে। নিউইয়র্কের মতো এত ব্যস্ত শহরে থেকেও আমরা বাঙালিরা এই দিনটাকে পালন করি অনেকটা দেশীয় আমেজে। বৈরী আবহাওয়া তো আছেই, সঙ্গে কাজের চাপ ও দেশ ছেড়ে আসার দুঃখ, কষ্ট, গ্লানি বাঙালির মনে যে প্রভাব ফেলে, তা যেন নিমিষেই উড়িয়ে নিয়ে যায় এই দিনটায়। আমরা সমস্বরে গাই—
‘এসো হে বৈশাখ এসো,এসো
তাপস নিশ্বাসবায়ে,
মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক’
বাহারি রঙের পোশাক পরে, হাতে লাল রেশমি চুড়ি, কপালে লাল টিপ পরে, ঢাক ঢোল বাজিয়ে নাচে–গানে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করি সবাই। আমাদের দেশের মতো করেই বৈশাখী মেলা হয় এখানে। পান্তা–ইলিশ, মণ্ডা–মিঠাই কিছুই বাদ যায় না কিছুই। এ এক বিশাল আনন্দ আয়োজন! ঘরে ঘরে উৎসবমুখর পরিবেশ। মাসব্যাপী চলতে থাকে বৈশাখী অনুষ্ঠান।
আমাদের এই উৎসবে যেন শামিল হয় বরফে ঢেকে থাকা এই শহরও। প্রকৃতিতে শিহরণ জাগে, বাংলা নববর্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে জীর্ন গাছে বাহারি ফুলের সমাহার! থোকায় থোকায় ম্যাগনোলিয়া, আর চেরি ফুলে ছেয়ে গেছে সারা শহর। আমেরিকার বসন্ত যেন আমাদের বাঙালিদের বৈশাখী উৎসবে একাত্মতা প্রকাশ করছে। মনের অজান্তেই আনন্দে গাইতে থাকি, ‘ওগো বিদেশিনী তোমার চেরি ফুল দাও/ আমার শিউলি নাও/ দুজনে প্রেমে হই ঋণী।’