Thank you for trying Sticky AMP!!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার

কিসিঞ্জারের মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পর শোক জানালেন বাইডেন

সময়টা ২০০৭ সাল। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তখন দেশটির সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির প্রধান। বর্ষীয়ান কূটনীতিক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার তখন ইরাকের ভবিষ্যৎ নিয়ে কংগ্রেশনাল কমিটির সামনে বক্তব্য দেন। ওই সময় কিসিঞ্জারের ভূয়সী প্রশংসা করেন বাইডেন।

বাইডেন তখন বলেছিলেন, ‘কার্যকর কূটনীতি, কার্যকর আমেরিকান কূটনীতির সমার্থক কিসিঞ্জার। দেশের অন্যতম সেরা কুশলী মস্তিষ্কের অধিকারী তিনি, এটা নিয়ে কেউ দ্বিমত করবে না।’

বাইডেন আরও বলেছিলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে একটি বিকল্প পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখতে হবে, আমি এটা কিসিঞ্জারের কাছ থেকেই শিখেছি।’ বাইডেনের এসব বক্তব্য তখনকার নথিপত্রে উল্লেখ করা আছে।

বাইডেনের এমন মন্তব্যের দেড় যুগের কম সময় পেরিয়েছে। গত বুধবার কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যে নিজ বাড়িতে মারা গেছেন হেনরি কিসিঞ্জার। বয়স হয়েছিল ১০০ বছর।

অথচ ‘কার্যকর আমেরিকান কূটনীতির প্রতিশব্দ’ কিসিঞ্জারের মৃত্যুতে বাইডেন যেন অনেকটাই ভিন্ন আচরণ করেছেন। কিসিঞ্জারের মৃত্যু নিয়ে একটি বিবৃতি দিতে প্রায় ২৪ ঘণ্টা সময় নিয়েছে হোয়াইট হাউস।

Also Read: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন

গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে কিসিঞ্জারের সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার স্মৃতিচারণা করেছেন বাইডেন। তিনি বলেন, ‘কিসিঞ্জার পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল। তখন আমি ডেলওয়ার থেকে নির্বাচিত তরুণ একজন সিনেটর ছিলাম। কর্মজীবনে আমাদের অনেক বিষয়ে দ্বিমত ছিল। তবে প্রথম সাক্ষাৎ থেকেই তাঁর প্রখর বুদ্ধিমত্তা আর কুশলী দৃষ্টিভঙ্গি নজর কেড়েছিল।’

Also Read: কখনো অনুশোচনা করেননি কিসিঞ্জার

সরকারি পদ ছাড়ার পরও কিসিঞ্জার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন, কাজ করেছেন। কয়েক প্রজন্ম ধরে তিনি তাঁর চিন্তাভাবনা ও দর্শনের কথা জানিয়েছেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন বাইডেন।

বাইডেন বলেছেন, ‘জিল (মার্কিন ফার্স্টলেডি) ও আমার পক্ষ থেকে হেনরি কিসিঞ্জারের স্ত্রী ন্যান্সি, তাঁর সন্তান ডেভিড ও এলিজাবেথ, তাঁর নাতি-নাতনি এবং যাঁরা তাঁকে ভালোবাসতেন—সবার প্রতি সমবেদনা।’

Also Read: বাংলাদেশে হেনরি কিসিঞ্জারের প্রথম সফর কেমন ছিল

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানান। গতকাল কিরবি বলেন, হেনরি কিসিঞ্জারের মৃত্যু একটি বিশাল ক্ষতি। তিনি বিশ্বজুড়ে আমেরিকার প্রভাব বাড়াতে ভূমিকা রেখেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও জেরাল্ড ফোর্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন কিসিঞ্জার। অনেকেই কিসিঞ্জারের নানা বিতর্কিত ভূমিকার জন্য তাঁকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলে অভিযুক্ত করে থাকেন।

Also Read: হেনরি কিসিঞ্জার: অভিবাসী থেকে ক্ষমতায়, বিতর্ক ছিল সঙ্গী

কম্বোডিয়া ও লাওসে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সম্প্রসারণ, চিলি ও আর্জেন্টিনায় সামরিক অভ্যুত্থানে সমর্থন, ১৯৭৫ সালে পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশিয়ার রক্তক্ষয়ী অভিযানের পক্ষে অবস্থান নেওয়া এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর ব্যাপক নৃশংসতার বিষয়ে চোখ বন্ধ রাখা—এসব অভিযোগ রয়েছে কিসিঞ্জারের বিরুদ্ধে।

তবে বিশ্বের নানা প্রান্তে যুদ্ধ-সংঘাতের ‘কারিগর’ কিসিঞ্জারকে কখনো সেভাবে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি। উল্টো শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সম্মানজনক জীবন কাটিয়েছেন। আর এসব নিয়ে বহু মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।

Also Read: কিসিঞ্জারের আলোচিত-সমালোচিত পররাষ্ট্রনীতি

Also Read: হেনরি কিসিঞ্জারের লজ্জিত হওয়া উচিত