ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বন্ধুসভার 'বিজয়গাথা'

মুক্তিযোদ্ধা গাজী মো. রতন মিয়া বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের নিয়াজ মুহাম্মদ ফারুকী পার্কে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়েও একটি ট্যাংক ছিল। এটি সরিয়ে এই স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফারুকী পার্কের স্মৃতিসৌধে বন্ধুসভার সদস্যরা বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ’বিজয়গাথা’ নামে একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মূলত তরুণ প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন।

মুক্তিযোদ্ধা গাজী মো. রতন মিয়া বক্তব্য রাখেন
মুক্তিযোদ্ধা গাজী মো. রতন মিয়া বক্তব্য রাখেন


এই অনুষ্ঠানেই প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত মুক্তিযোদ্ধা গাজী মো. রতন মিয়া এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত তরুণ প্রজম্মের কাছে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, যেখানেই কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে দেখবে, তাঁদের সম্মান করবে।

জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার সদস্যরা
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার সদস্যরা


এই অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা তোমাদের লাল–সবুজের একটা স্বাধীন পতাকা দিয়ে গেছি। এর সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব তোমাদের। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়েই আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম।

নৃত্য পরিবেশন করেন রুমি জান্নাত
নৃত্য পরিবেশন করেন রুমি জান্নাত


মুক্তিযোদ্ধা গাজী মো. রতন মিয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত তরুণদের উদ্দেশে মুক্তিযুদ্ধের তিনটি গল্প বলেন। কীভাবে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার খুলে পাকহানাদার বাহিনীর ট্যাংক ধ্বংস করেছেন, কীভাবে পাকিস্তানিরা নিরীহ বাঙালিকে নিমর্মভাবে হত্যা করেছে এবং কীভাবে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে জেলার বিভিন্ন উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়েছে—এসব গল্প শোনান।

গাজী মো. রতন মিয়া বলেন, যে জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি, বর্তমানে এটি একটি স্মৃতিসৌধ। কিন্তু ১৯৭১ সালে ঠিক এই জায়গায় একটি ট্যাংক ছিল। এটি সরিয়ে এখানে এই স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়।

নৃত্য পরিবেশন করেন রুমি জান্নাত
নৃত্য পরিবেশন করেন রুমি জান্নাত


বিজয়ের মাসে বিজয়গাথা। সেটিও আবার স্মৃতিসৌধে। স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধকে যথার্থভাবে স্মরণ করা হয়েছে। বক্তৃতা, নাচ, গান—সব আয়োজনই ছিল মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ৪টার দিকে বন্ধুদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

অনুষ্ঠানে বন্ধুসভার সহসভাপতি আকিল মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, উপসাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুদ্দিন রুবেল, বন্ধু মেহেদী হাসান ও প্রথম আলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি শাহাদৎ হোসেন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি মুক্তিযোদ্ধা গাজী মো. রতন মিয়াকে ফুল দিয়ে বরণ করেন বন্ধুসভার সদস্য মিম আক্তার। অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশন করেন হামজা আহমেদ, সমী পাল, পূজা চৌধুরী ও মুনিয়া আক্তার। নৃত্য পরিবেশন করেন বন্ধুসভার সদস্য রুমি জান্নাত। তবলায় ছিলেন বন্ধু মৃদুল পাল।

সহসভাপতি লিমন ভূঁইয়া ও বন্ধু নুসরাত জাহান মিম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার এ অনুষ্ঠান শেষ হয়।

বন্ধুসভার সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত তরুণদের উদ্দেশ্য করে বলেন, প্রতিদিন যেন শহীদ মিনার ও স্মৃতিসৌধের মর্যাদা রক্ষা করা

উপ-সাংগঠনিক সম্পাদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভা।