মায়মুনার বয়স সাত বছর। দুচোখের একটিতে আবছা দেখে সে। চোখে তার জন্মগত রোগ। পাড়ার ছোট ছোট খেলার সঙ্গীদের সঙ্গে এসেছে ঈদের নতুন জামা নিতে। ছয় বছরের ফাহিমের বাবা নেই। মায়ের সঙ্গে থাকে। অভাবের সংসার। গামছা পরে খেলার সঙ্গীদের সঙ্গে সেও এসেছে রঙিন জামা পাওয়ার আশায়। তুমি কী রঙের জামা চাও? জিজ্ঞেস করলে ফাহিম বলল, ‘আপনারা যেইডা দ্যান, আমার তো নীল ভাল্লাগে!’
মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় এমনই চিত্র দেখা যায় রাজধানীর মিরপুর সাগুফতা হাউজিং লিমিটেডে। প্রথম আলো ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার ‘একটি করে রঙিন জামা’ উপহার অনুষ্ঠানে মায়মুনা ও ফাহিমের মতোই বেশ কিছু শিশু আসে নতুন পোশাক নিতে। সবার চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস।
অপেক্ষারত শিশুদের মধ্যে ছিল অসচ্ছল, শারীরিক প্রতিবন্ধী, কেউবা আবার পিতৃমাতৃহীন। ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার বন্ধুদের ঈদের কেনাকাটার টাকা বাঁচিয়ে সুবিধাবঞ্চিত ১১৮ জন শিশুকে উপহার দেওয়া হয় ঈদের নতুন পোশাক। নির্বাচিত শিশুরা ছিল ৩ থেকে থেকে ১২ বছরের। মহানগর বন্ধুসভার সভাপতি জান্নাতুল বাকের নন্দনের নেতৃত্বে এই আয়োজনে অংশ নেন প্রায় ৪০ জন বন্ধু। উপস্থিত ছিলেন বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী সভাপতি শাকিল মাহবুব, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন মাহফুজ, মহানগর বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক কামরুন্নাহার মৌসুমী, সহসভাপতি সায়মা আহসান, মোহতারিমা রহমান রিমা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী আনিস, সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ আলম প্রমুখ।
রঙিন জামা পাওয়া শিশুদের আনন্দে মুখর হয়ে ওঠে চারপাশ। বাঁধভাঙা সেই আনন্দকে ফ্রেমবন্দী করে রাখেন বন্ধুদের কেউ কেউ। সারা দেশে ১২৮টি বন্ধুসভার বন্ধুরা নিজ উদ্যোগে অসহায় ও দুস্থ শিশুদের উপহার দেবেন নতুন জামা। ৩১ মে পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। গত বছর এই আয়োজনে প্রথম আলো বন্ধুসভা ১১ হাজার জামা উপহার দিয়েছিল।