প্রাণের সংঘ টাঙ্গাইল বন্ধুসভা

টাঙ্গাইলসভার নতুন জামা বিতরণ কর্মসূচি।
টাঙ্গাইলসভার নতুন জামা বিতরণ কর্মসূচি।


ডায়েরির তৃতীয় পাতায় ১৬ বছর ধরে রাখা এক কৃষ্ণচূড়া ফুল। শুকিয়ে গেলেও দেখে মনে হয় ডায়েরির শত পাতার চাপ সহ্য করে এখনো জীবন্ত এক ফুল। তৃতীয় পাতার এই ফুলের জীবনের গল্পের পর চতুর্থ পাতায় আমার জীবনের গল্প। শত সাদাকালো গল্পের মধ্যে লাল–নীল কালি দিয়ে লেখা ‘বন্ধুসভা’। থাকবে নাই–বা কেন, আমার জীবনের একটি রঙিন সফলতার কারিগর যে এই বন্ধুসভা।

নিজেকে ঘরের এক কোণে গুটিয়ে রাখা এই আমাকেই খুঁজে পেলাম এক নতুন আমিতে, খুঁজে পেলাম নিজেকে ১০টা মানুষের বন্ধু হিসেবে এই বন্ধুসভায়।

আজ শত মানুষের সামনে কথা বলতে পারি, অনেক বড় সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি, তবু প্রতি শুক্রবার বিকেল চারটা থেকে খুঁজতে গিয়ে অনুসন্ধানী চোখ খুঁজে পায় আমাকে এই বন্ধুসভায়।

শুরুতে বলা কৃষ্ণচূড়ার মতো ২০০০ সাল ১ জুলাই থেকে ১৮ বছর ধরে তানিয়া বখস, কামনাশীষ শেখর, জিনিয়া বখসের হাত ধরে সফলভাবেই বেঁচে আছে শত চাপ সহ্য করে। সময়ের স্রোতে গা ভাসায়নি বন্ধুসভা। প্রতিবছরই প্রথম আলোর নির্দেশনায় যেমন আয়োজন করা হয় পথশিশুদের নতুন জামা, শিক্ষার্থীদের জন্য ম্যাথ অলিম্পিয়াড, ঠিক একইভাবে নিজেদের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় মানুষকে সহায়তার জন্য নানা আয়োজন।

শত বছর পর হয়তো কোনো ইতিহাসবিদ তাঁর উপন্যাসে লিখবেন টাঙ্গাইল বন্ধুসভার কথা। অনেক বন্ধুর বিদায়ে বন্ধুসভাকে মৃত মনে হলেও জীবন্ত থাকবে বন্ধুসভা বন্ধুদের মনে।

যেমনটা কৃষ্ণচূড়া প্রাণ হারিয়েও বেঁচে থাকে আমার লেখা ডায়েরির পাতায়।

রাতের কোনো চাঁদের কোনো এক রূপকথা হয়ে তো বেঁচে থাকব না জানি, তবে নিস্তব্ধ রাতেও কোনো এক কোণে নিয়ন আলোর মতো আমি দাঁড়িয়ে। মেঘময় আকাশে যেমন মেঘ সরে গেলেও আবার আকাশের কাছেই তার ফিরে আসা আর সেখানেই বসবাস, ঠিক একইভাবে আমাদের ভালোবাসা ঘুরেফিরে এই বন্ধুসভার কাছেই।

পাঠচক্র সম্পাদক, টাঙ্গাইল বন্ধুসভা