বন্ধুসভার জন্মদিনে খাবার পেল সুবিধাবঞ্চিতরা
বন্ধুসভার জন্মদিন উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার উদ্যোগে যখন রাজশাহী রেলস্টেশনে খাবার বিতরণ করা হচ্ছিল, তখন সবাই দৌড়াদৌড়ি করে এসে খাবার নিচ্ছিল। কিন্তু একজন পারছিল না। কেননা, বয়স তো আর কম হলো না। ৭২ পেরিয়ে গেছে। ভিক্ষা করতে গিয়ে ট্রেন থেকে নামার সময় পড়ে গিয়ে দুটো পা-ই ভেঙে গেছে। কোমরে আবার বিশাল কুঁজ। এমন অবস্থায় যখন আসতে পারছিলেন না, তখন সোনাবানু নামের এই বৃদ্ধা কাঁদছিলেন, ‘বাবা রে বাবা রে, আমারেও চাট্টা খাবার দে।’ রাবি বন্ধুসভার সদস্যদের বুঝতে দেরি হলো না। তাই খাবারের প্যাকেট, পানি নিয়ে সোনাবানুর কাছে ছুটে গেলেন তাঁরা।
এ তো গেল সোনাবানুর কথা। এবার সবুজ আলীর (১৪) কথায় আসা যাক। সবুজ আলী এ পর্যন্ত জানেই না যে কে তার বাবা আর কে তার মা। মো. কামাল উদ্দীন (৪২) নামের আরেকজন বললেন, ‘সবুজ পুতিবন্দি হওয়াতে ওর বাপ-মাও স্টেশনে থুইয়া চলি যায়; আর কোনো খোঁজখবর নেয় না।’ সে আরও জানায়, সবুজ আলী প্রতিবন্ধী হওয়াতে ভালোমতো ভিক্ষাও করতে পারে না। তাই প্রায় দিন না খেয়েই থাকে। কথা বলতে না পারায় কাউকে বলতেও পারে না খাবারের কথা। সবুজ আলী যখন রাবি বন্ধুসভার দেওয়া খাবার খাচ্ছিল, তখন তার দুই চোখ বেয়ে পানি ঝরছিল।
আবুবক্কর সিদ্দিক (৫৮) নামের এক বৃদ্ধ চোখে দেখতে পারেন না। তাঁর হাতে যখন খাবার দেওয়া হলো, তখন তিনি বললেন, ‘দিন-রাতের ভেতর রাতে এক বেলা খেয়ে থাকি, যাক রে বাবা আজ দুপুরেও জুটল।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা বন্ধুসভার জন্মদিন উপলক্ষে সুবিধাবঞ্চিত শিশু, হতদরিদ্র ও দুস্থ মানুষদের মধ্যে ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার খাবার বিতরণ করে। রাজশাহী রেলস্টেশনে প্রায় ১০৩ জন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের ১০টি শিশুসহ মোট প্রায় ১১৩ জনকে খাবার বিতরণ করা হয়।
সদস্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়