ওয়েব ডিজাইন শিখতে হলে...

হাতে হাতে এখন স্মার্টফোন। আর স্মার্টফোন মানেই তো ওয়েবসাইট। স্মার্টফোন মানে ওয়েবসাইট কেন বললাম জানেন? এই যে এখন আপনি লেখাটা পড়ছেন, এটা হয়তো আপনার স্মার্টফোনের পর্দায় পড়ছেন। প্রতিদিন এমন কত লেখা পড়েন। কত ওয়েবসাইট ভিজিট করেন। ফেসবুক চালান। ভিডিও দেখেন। লাইক, কমেন্ট, শেয়ার কত কি! এসব তো কোনো না কোনো ওয়েবসাইট ভিজিট করেই করতে হয়।
আপনি হয়তো গত চার দিনে কাজের ব্যস্ততার জন্য টিভি দেখেননি। কিন্তু ফেসবুক ঠিকই চালিয়েছেন। বিভিন্ন লিংকে গিয়ে করোনার খবরাখবর নিয়েছেন।
এই ওয়েবসাইটের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর ডিজাইন। মানে ওয়েবসাইটটা দেখতে কেমন হবে। এর মেনু কোথায় বসবে। সাইটবার হবে কি না। ওয়েবসাইটে ছবিগুলো কীভাবে প্রদর্শন করবে। কনটেন্টগুলো কেমন হবে। মানে তথ্যগুলো কীভাবে, কত সুন্দরভাবে প্রদর্শন করা যায়, সেই কাজটাই হচ্ছে ওয়েব ডিজাইনারের।

এই পেশায় আসতে হলে...
দেশীয় চাকরির বাজার বলেন আর ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লাস বলেন—দুই জায়গাতে ওয়েব ডিজাইন খুবই চাহিদাসম্পন্ন একটি পেশা। কারণ যোগাযোগ, লেনদেন, কেনাবেচা—সবকিছুই এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমেই হচ্ছে। তাই আপনিও চাইবেন আপনার পণ্য ও প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি দৃষ্টিনন্দন ওয়েবসাইট বানাতে। আর মাত্র কিছুদিন দিন অপেক্ষা করেন। চাকরির জন্য আপনার কাছে সিভি চাওয়া হবে না। চাইবে আপনার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটের লিংক।
ওয়েব ডিজাইন শিখতে হলে আপনাকে প্রথমে শিখতে হবে এইচটিএমল। এই এইচটিএমএলই হলো ওয়েব ডিজাইনের মেরুদণ্ড। একটা ওয়েবসাইটের যাবতীয় তথ্য, ছবি, লিংক নির্ধারিত থাকে এইচটিএমএল কোডের মাধ্যমে। এটি মূলত একটি মার্কআপ ল্যাংগুয়েজ। একসময় শুধু এইইচটিএমএল ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানানো হতো। এখন ওয়েবসাইটকে আরও সুন্দর করতে ব্যবহার করা হয় কেসকেডিং স্টাইল সিট। মানে সিএসএস। এটি একটি ওয়েবসাইটের কালার, কনটেন্ট, মেনুবার ও সাইটবার সুন্দর করে সাজানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এরপর আপনি যদি ওয়েবসাইটে অ্যানিমেশন ব্যবহার করতে চান, তাহলে আপনাকে জানতে হবে জাভা স্ক্রিপ্ট অথবা খুব সহজভাবে জাভা স্ক্রিপ্টের লাইব্রেরির ব্যবহার।

জানতে হবে রেসপনসিভ ওয়েব ডিজাইন
একটি ওয়েবসাইটের মূল্য লক্ষ্য হলো সহজভাবে তথ্য উপস্থাপন করা। একসময় ইন্টারনেট ব্যবহার করা হতো শুধু কম্পিউটার দ্বারা। কিন্তু এখন এটি কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট পিসির পাশাপাশি বিভিন্ন সাইজের অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়। আর এসবের স্ক্রিনের সাইজও আকারে ছোট–বড় হয়। তাই ওয়েবসাইটকে এসব ডিভাইসের পর্দার মাপে সুন্দরভাবে তৈরি করার নামই রেসপনসিভ ওয়েব ডিজাইন।

ডেভেলপমেন্ট জানা থাকা ভালো
একটি ওয়েবসাইট বানাতে দুই ধরনের কাজ করতে হয়। এক ফ্রন্টেন্ড ডিজাইন। দুই ব্যাকেন্ডের কাজ। সহজভাবে বলতে গেলে আপনি যখন আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে একটা ছবি আর কিছু লেখা পোস্ট করেন, সেটি ফ্রন্টেন্ড ডিজাইনে করে থাকেন। কিন্তু আপনার এই লেখাটা আপনার বন্ধুসহ বিভিন্ন ব্যক্তির দেয়ালে দেখায়। বিভিন্নজনের দেয়ালে দেখানোর জন্য নিশ্চয় এর পেছনে কিছু একটা প্রসেসিং হয়। আর এই কাজগুলোই করে থাকেন ওয়েব ডেভেলপার। তাঁরা কোনো একটা প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করে কন্ডিশন দিয়ে কিছু কোড লিখে রাখেন। আর তাতেই আপনার দেয়ালে লেখা আর ছবি আপনার বন্ধুর ফেসবুক দেয়ালে দেখায়। পেছনের এই কাজের নামই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট।

কর্মক্ষেত্র
দেশের চাকরির বাজারের পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করেও এই পেশায় খুব ভালো আয় করা সম্ভব। আপনি যদি খুব ভালোভাবে ওয়েব ডিজাইন অথবা ওয়েব ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট শিখতে পারেন, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং করেও গতানুগতিক চাকরির চেয়ে ভালো আয় করতে পারবেন। ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টে ফ্রিল্যান্সিং করার মতো বিশ্বস্ত ও জনপ্রিয় কিছু অনলাইন মার্কেটপ্লাসের লিংক নিচে দেওয়া হলো।

https://www.freelancer.com
https://www.upwork.com
https://www.peopleperhour.com
https://www.fiverr.com
https://themeforest.net


সভাপতি, সরিষাবাড়ী বন্ধুসভা
শিক্ষার্থী, ওয়েব ডিজাইন, ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউট, ধানমন্ডি, ঢাকা।