সেমাই-চিনি ছাড়া কি আর ঈদ হয়!

লকডাউনের কারণে সংগঠনের সবাই যে যাঁর বাসায়। প্রতিবছর রঙিন জামা কর্মসূচি হলেও এবার হবে না শুনে একটু মন খারাপ ছিল আমাদের। কিন্তু জাতীয় পর্ষদের ঘোষণায় ‘সহমর্মিতার ঈদ’ কর্মসূচির কথা শুনেই মনটা ভালো হয়ে যায়। ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে ঠিক করি কীভাবে কী করা হবে। মাত্র ৫ দিনের মধ্যেই আমরা ১৪টি পরিবারকে সহযোগিতা করার মতো অর্থ সংগ্রহ করে ফেলি এবং যার প্রায় পুরোটাই সদস্যদের নিজস্ব অর্থায়নে।

বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার আশপাশে, সিরাজগঞ্জে ও রাজশাহীতে করোনা আক্রান্ত এক পরিবারসহ ১৪টি দুস্থ পরিবারকে খুঁজে বের করে অর্থ সহযোগিতা পাঠানো হয়। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর পর নিশ্চিত হওয়ার জন্য যখন ফোন দেওয়া হয়, তখন প্রত্যেকের যে আনন্দমাখা অভিব্যক্তি ছিল, সেটা সত্যিই অতুলনীয়। ঈদের ঠিক আগে সব ভুলে ৫ দিনের এই কর্মযজ্ঞ যেন সার্থক হলো এসব অভিব্যক্তিতেই।

গাজীপুরের আরিফের ভাষায়, ‘করোনার কারণে বড় ভাই কাজ করবার পারে নাই। ঈদে ভালো খাওন দূরে থাক, ডালভাত খাওনের ঠিক আছিল না। অন্তত এই টাকা গুলান ভাইরে দিতে পারুম, যেন বাজারেত থেকে সেমাই–চিনি আনে। সেমাই–চিনি ছাড়া কি আর ঈদ হয়!’

রাজশাহীর করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির বাসায় উপহারসামগ্রী পাঠানো হয়। উপহার পেয়ে তাঁদের অভিব্যক্তি, ‘করোনা হইছে শোনার পর কেউ কথাও কয় না আমাদের সাথে। সেখানে তোমরা খাবার, ঔষধ দিতে এসেচো। আল্লাহ ভালো করুক তোমাদের।’

বন্ধুসভার সব বন্ধু, গাজীপুর প্রথম আলো প্রতিনিধি মাসুদ রানাসহ উপদেষ্টামণ্ডলীকে ধন্যবাদ সার্বিক সহায়তার জন্য। বিশেষভাবে জাতীয় পর্ষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সবাইকে ধন্যবাদ ‘সহমর্মিতার ঈদ’ কর্মসূচির মতো সুন্দর একটি আয়োজন করার জন্য।

তানভীর আহম্মেদ: সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরকৃবি) বন্ধুসভা।