মুম্বাইয়ে বাংলা বর্ষবরণ ও সাফল্য উদ্যাপন
নানা আয়োজনে বাংলা ১৪২৫ সালের প্রথম দিনকে বরণ করেছে ভারতের মুম্বাইয়ের বাংলাদেশ উপহাইকমিশন। দিনটিকে বরণ করে নেওয়ার জন্য উপহাইকমিশনের উদ্যোগে আজ পয়লা বৈশাখ আয়োজন করা হয় বর্ষবরণ উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ছত্রপতি শিবাজি বাস্তু সংগ্রহালয় মিউজিয়ামের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত সংগীতশিল্পী অণিমা মুক্তি গোমেজ ও নতুন প্রজন্মের সুফি ঘরানার শিল্পী মো. পারভেজ সাজ্জাদ। এ ছাড়া অংশ নেয় ভারতীয় খ্যাতনামা সাংস্কৃতিক সংগঠন নৃত্যাঞ্জলির একটি দল।
মুম্বাইয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার মো. লুৎফর রহমান তাঁর স্বাগত বক্তব্যে উপস্থিত ভারতীয় অতিথি ও কূটনৈতিক কোরের সদস্যদের কাছে বাংলার পয়লা বৈশাখের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলার ঐতিহ্যে ঘেরা বর্ণিল সংস্কৃতি বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবার জন্যই বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের এই প্রয়াস।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিল্পী ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা সমবেত কণ্ঠে ‘এসো হে বৈশাখ’ গেয়ে বরণ করে নেন নতুন বৎসরকে। অনুষ্ঠানটিকে সাজানো হয় বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকগীতি, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুল গীতি, লালনগীতি ও সুফি ঘরানার গান দিয়ে। এ ছাড়া ছিল রবীন্দ্রসংগীত ও বাউল গানসহ বিভিন্ন লোকায়ত ঐতিহ্যের গানের সঙ্গে বেশ কিছু নৃত্য পরিবেশনা। সকল শিল্পী তাঁদের পরিবেশনায় উপস্থিত সকলের প্রশংসা অর্জন করে।
অনুষ্ঠানে উপহাইকমিশনের সকল সদস্য ও তাঁদের পরিবার, স্থানীয় সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কূটনৈতিক কোরের সদস্য, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। নৃত্যগীতের মূর্ছনায় পুরো অনুষ্ঠানটি ছিল উপভোগ্য ও সমাদৃত। অনুষ্ঠানের শেষে বাঙালি খাবারে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়িত করা হয়।
বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের সাফল্য উদ্যাপন
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের অভিযাত্রা উদ্যাপন করেছে মুম্বাইয়ের বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন। এ উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের সহযোগী আয়োজক ছিল মুম্বাইয়ের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। ভাইব্রান্ট বাংলাদেশ: ট্রানজিশন ফ্রম এলডিসি স্ট্যাটাস শীর্ষক সেমিনারটি স্থানীয় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ভবনের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে উপহাইকমিশনার মো. লুৎফর রহমান উপস্থিত সকলকে বাংলাদেশের এই অর্জন সম্পর্কে অবহিত করেন। একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে তিনি বলেন, জাতিসংঘের এ ঘোষণার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যোগ দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এভাবেই বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় কালান্তরি। এ ছাড়া বক্তব্য দেন মুম্বাইয়ের কনস্যুলার কোরের ডিন নরবার্ট রেভাই বেরে, মুম্বাইয়ে শ্রীলঙ্কার কনসাল জেনারেল চামারি রড্রিগেজ ও এবি ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত সিইও মোহাম্মদ আল মামুন।
বক্তারা সকলেই উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হওয়ার এ বিষয়টিকে বহির্বিশ্বে গৌরবের ও গর্বের বিষয় হিসেবে তুলে ধরেন। পাশাপাশি তাঁরা আগামী তিন বছর এই ধারাবাহিকতা রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
দ্বিতীয় অংশে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট থ্রো ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ শীর্ষক একটি আলোচনা পর্বে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিয়োগকারী ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান টেক্সপ্রোসিল, রেমন্ড, টাটা মেমোরিয়াল হসপিটাল, এক্সিম ব্যাংক ও আমুলের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন। এ আলোচনা পর্বে তাঁরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অগ্রগতির প্রশংসা, বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তাঁদের অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যতে আরও ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা ও উপায় সম্পর্কে আলোকপাত করেন। বাংলাদেশের এ সাফল্যের জন্য তাঁরা বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে অভিনন্দন জানান। বিজ্ঞপ্তি