টরন্টোয় স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের অনুমোদনপ্রাপ্তি
কানাডার টরন্টোয় অচিরেই নির্মিত হতে যাচ্ছে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার। নানা প্রক্রিয়া অতিক্রম করে টরন্টো সিটির আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পেয়ে প্রকল্পটি এখন বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে। ‘রিদম অব অ্যালফাবেটস—ইন্টারন্যাশনাল ল্যাংগুয়েজ অ্যান্ড হেরিটেজ নাইটে’ এ ঘোষণা দিয়েছেন টরন্টোর সিটি কাউন্সিলর জ্যানেট ডেভিস।
অর্গানাইজেশন ফর টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজে ডে মনুমেন্ট ইনক্ (ওটিআইএমএলডিএম) এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। মূলত টরন্টোয় একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতিসহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য কমিউনিটির সকলকে অবগত করতে গত রোববার (১৯ আগস্ট) টরন্টোর রয়্যাল কানাডিয়ান লিজিয়ন হলে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জ্যানেট ডেভিস। তিনি বলেন, এখন শহীদ মিনার নির্মাণের সমাপ্তিটা নির্ভর করছে বাংলাদেশি-কানাডীয়দের ওপর। প্রকল্পটি সম্পূর্ণভাবে শেষ হওয়ার পর এটা হবে বাংলাদেশিদের জন্য একটি বিশেষ উপহার। শহীদ মিনার নির্মাণ শেষে এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকবে সিটির, কিন্তু বাংলাদেশিরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ছাড়াও তাদের অন্য অনুষ্ঠানেও এখানে করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তী নির্বাচনে তিনি অংশগ্রহণ করবেন না। তারপরও তিনি সকল প্রকার সহযোগিতা করবেন এই বিশেষ প্রকল্পটির জন্য। শহীদ মিনার নির্মাণে আর্থিক সহযোগিতার জন্য তিনি সকলকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন।
অনুষ্ঠানে তিনি আয়োজক সংগঠনের ২১ সদস্যের বর্তমান কমিটিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ করে সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। উল্লেখ্য, জ্যানেট ডেভিসের নেতৃত্বেই চার বছর আগে এ সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়। সংগঠনটির সঙ্গে তিনি ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ও প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ম্যাক আজাদ ও মহাসচিব রিজওয়ান রহমান প্রকল্পের প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে সকলের সামনে তুলে ধরেন। ম্যাক আজাদ জানান, শহীদ মিনার নির্মাণ করতে প্রয়োজন হবে প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার ডলার। আর্থিক সহযোগিতার জন্য তিনি সকলকে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেন।
অন্য অতিথিদের মধ্যে থেকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন অন্টারিও প্রদেশের সাংসদ ডলি বেগম ও রিমা বার্নস ম্যাকগাউন। তারা সকল প্রকার সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
এ ছাড়া বক্তব্য দেন দেবন্দ্রনাথ মণ্ডল। তিনি যুক্ত ছিলেন ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে। আরও বক্তব্য দেন আয়োজক সংগঠনের ফান্ড রাইজিং কমিটির প্রধান ব্যারিস্টার চয়নিকা দত্ত ও কমিটির সদস্যদের পক্ষ থেকে লেখিকা রুমানা চৌধুরী। চয়নিকা দত্ত তাঁর বক্তব্যে জানান, গত এক সপ্তাহে তাঁরা ২০ হাজার ডলার অনুদান পেয়েছেন। তিনি উপস্থিত সকলকে অনুরোধ করেন যেন তারা নিজেরাও এগিয়ে আসেন এবং তাদের পরিবার কিংবা পরিচিত বন্ধুদেরও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেন।
কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও সহজ ও মধুর হয়ে ওঠে যখন সেখানে মিলেমিশে থাকে সুর, ছন্দ ও তাল। হ্যাঁ, অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই কবিতা পাঠ, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন টরন্টোর গুণী শিল্পীরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন রিজওয়ান রহমান, অরুণা হায়দার ও সুমন সাঈদ। স্লাইড শো প্রদর্শন করেন সংগঠনের সহসভাপতি ফুয়াদ চৌধুরী। ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করে টরন্টো ফিল্ম ফোরাম।
খুরশীদ শাম্মী: টরন্টো, কানাডা।