মরিশাসে বাংলাদেশি শিল্পীর চিত্র প্রদর্শনী

মন্ত্রী পৃথ্বীরাজ সিং রূপণ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন
মন্ত্রী পৃথ্বীরাজ সিং রূপণ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন

মরিশাসের পোর্ট লুইস পৌর কাউন্সিলে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী মাকসুদুল আহসানের চার দিনব্যাপী একক চিত্র প্রদর্শনী। গতকাল বুধবার (৫ ডিসেম্বর) এ প্রদর্শনী উদ্বোধন করা হয়। প্রদর্শনী ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

মরিশাসের ৫০তম স্বাধীনতা বার্ষিকী উদ্‌যাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ হাইকমিশন দেশটির শিল্প ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পোর্ট লুইস পৌর কাউন্সিল ও আর্তা ইন্ডিয়ানওসেনিকা-কোডেপার যৌথ উদ্যোগে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দেশটির শিল্প ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী পৃথ্বীরাজ সিং রূপণ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পোর্ট লুইস পৌর কাউন্সিলের মেয়র ডেনিয়েল এরিক ক্লাইভ লরেন্ট। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মন্ত্রী পৃথ্বীরাজ সিং রূপণ। প্রদর্শনীতে অন্যদের মধ্যে মরিশাসে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার, দেশটির সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, শিল্পী, শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

আর্তা ইন্ডিয়ানওসেনিকা-কোডেপার প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ভূপেন দোবা তার সূচনা বক্তব্যে ইউনেসকোর মূলনীতি অনুসরণ করে মরিশাসের শিল্প সমুন্নতকরণ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে মরিশাসে গৃহীত গৃহায়ণ প্রকল্পের ন্যূনতম ১ শতাংশ সংরক্ষণের জন্য প্রস্তাব করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা

দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ তার বক্তব্যে উপস্থিত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে উল্লেখ করেন, মরিশাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ হাইকমিশন এ চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বাংলাদেশের শিল্প আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসের ওপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমসাময়িক শিল্প আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়েছে ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময়ে। যখন জয়নুল আবেদিন ও তার সমসাময়িক হাবিবুল্লাহ বাহার, শফিকুল আমিন, কামরুল হাসান, খাজা শফিক আহমেদ, সফিউদ্দিন আহমেদ, আনোয়ারুল হক ও আলী আহসান পশ্চিমবঙ্গ থেকে ঢাকায় এসে আর্ট ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সাম্প্রতিক শিল্প আন্দোলনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত শিল্পকলা একাডেমি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সহযোগিতায় বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতি সমুজ্জ্বলকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে।

পোর্ট লুইসের পৌর মেয়র উল্লেখ করেন, আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন।

বক্তব্য দিচ্ছেন রেজিনা আহমেদ
বক্তব্য দিচ্ছেন রেজিনা আহমেদ

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী পৃথ্বীরাজ সিং রূপণ চিত্র প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, মরিশাস সরকার নিজ দেশে ছাড়াও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও আফ্রিকায় মরিশাসের বিভিন্ন ধরনের শিল্প প্রদর্শন করে চলেছে। ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে। এ প্রসঙ্গে তিনি তার মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পরিকল্পনা ও উদ্যোগের ওপরও আলোকপাত করেন।

মাকসুদুল আহসান বাংলাদেশের আশির দশকের একজন চিত্রশিল্পী। যিনি পৃথিবীর বিভিন্ন যুগের প্রতিনিধিত্বশীল বিখ্যাত নারী-পুরুষের পোর্ট্রেট আঁকতে পছন্দ করেন। তাঁর কর্মে বাল্য বিবাহ, ধর্মীয় গোঁড়ামি, সামাজিক পশ্চাৎপদতা, কুসংস্কার, সামাজিক অবিচার, অসমতা, শোষণ ইত্যাদি চিত্রিত হয়েছে। তিনি তাঁর কর্মে ভাব ও বর্ণের সমন্বয় ঘটানোর বিষয়ে গভীর মনোযোগী। জয়নুল আবেদিন ও এস এম সুলতানের মতো শিল্পী তার শিল্পচর্চার অনুপ্রেরণা। উল্লেখ্য, এটি তাঁর ১৩তম একক চিত্র প্রদর্শনী। বিজ্ঞপ্তি

ছবি দেখছেন অতিথিরা
ছবি দেখছেন অতিথিরা