মুম্বাইয়ে নাচগানে জমজমাট বিজয় দিবস

মুম্বাইয়ে নাচগানে জমজমাট বিজয় দিবস উদ্‌যাপন
মুম্বাইয়ে নাচগানে জমজমাট বিজয় দিবস উদ্‌যাপন

পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, বাংলাদেশি খাবার ও শিল্পীদের নাচগানে জমজমাট ছিল মুম্বাইয়ে বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস। গত রোববার (১৬ ডিসেম্বর) সারা দিনব্যাপী নানান অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মুম্বাইয়ের বাংলাদেশ উপহাইকমিশন উদ্‌যাপন করে ৪৭তম বিজয় দিবস।

মুম্বাইয়ে নিয়োজিত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার মো. লুৎফর রহমান জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বিজয় দিবসের সূচনা করেন। এরপর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ, বিশেষ মোনাজাত, বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং এক আলোচনার সভা আয়োজন করা হয়।

অতিথিদের সঙ্গে শিল্পীরা
অতিথিদের সঙ্গে শিল্পীরা

আলোচনা সভায় মো. লুৎফর রহমান তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বাংলাদেশের নাগরিকদের বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ওপর ‘বঙ্গবন্ধু ফরএভার ইন আওয়ার হার্টস’ শীর্ষক এক স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

বিজয় দিবসের এ অনুষ্ঠান সন্ধ্যায় জমে উঠেছিল নাচগান ও রসনায়। কার্যত উৎসবের মেজাজ নিয়েছিল এই সন্ধ্যা। বিজয় দিবস উপলক্ষে মুম্বাইয়ের ঐতিহ্যবাহী জিমখানায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন আয়োজন করে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও খাদ্য উৎসবের। জিমখানায় এই রাতে এক টুকরো বাংলাদেশ যেন জন্ম নিয়েছিল।

এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন মহারাষ্ট্র সরকারে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুমিত মল্লিক। বাংলাদেশি শিল্পীদের নাচগানে এই সন্ধ্যাটি অন্য মাত্রা পায়। অনন্য বড়ুয়ার নৃত্য নির্দেশনায় সূচনা, প্রিয়ম, জয়া ও জোয়েদি হোসেনরা বাংলাদেশের গ্রামবাংলার নাচকে মুম্বাইয়ের মঞ্চে নিয়ে আসেন। নৃত্যশিল্পী অনন্য বড়ুয়া বলেন, এর আগে নেপালে বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান করেছি। তবে ভারতে এই প্রথম। বিজয় দিবসে মুম্বাইয়ের বুকে সকলকে আনন্দ দিতে পেরে দারুণ লাগছে।

বক্তব্য দিচ্ছেন মো. লুৎফর রহমান
বক্তব্য দিচ্ছেন মো. লুৎফর রহমান

গায়ক অপুর গায়কিতে বিজয় দিবসের উন্মাদনা ধরা পড়ে। তিনি বলেন, আজ সকালে যখন মুম্বাইয়ের বুকে বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন হচ্ছিল তখন চোখে জল আসে। আমি অত্যন্ত আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি। এই প্রথম বিজয় দিবসের দিন দেশের বাইরে গান গাইলাম। অনেক গুণী মানুষের সামনে গান গেয়ে খুবই ভালো লাগছে। এর পরিধি ও ব্যাপ্তি যেন আরও বৃদ্ধি পায়।

বাংলাদেশের গায়িকা সাবরিনা রহমানের গানে উঠে আসে বাংলার মাটির গন্ধ।

আগত অতিথিদের একাংশ
আগত অতিথিদের একাংশ

এ রাতের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশের বিশিষ্ট রন্ধনশিল্পী নয়না আফরোজের জিভে জল আনা বাংলাদেশি খাবার। বাংলাদেশি রসনার নানান খাবার থরে থরে সাজানো ছিল এই উৎসবে। ডালের পিঁয়াজি, চিকেন টিক্কা, সাদা ভাত, সিদ্ধ আটার রুটি, সবজি ভর্তা, চিংড়ি ভর্তা, বেরেস্তা পোলাও, বেগুন খুশি, পেঁপের মালাইকারি, মাখা ডাল, রুই মাছে কারি, পমফ্রেট মাছ ভাজা, মুর্গ মুসল্লম, টমেটো খাট্টা, ফিরনি, মুগ পকওয়ান পিঠা এই খাদ্য মেলায় ভোজন প্রেমিকদের আপ্যায়নের জন্য রাখা হয়েছিল। রন্ধনশিল্পী নয়না বলেন, মুম্বাইতে বাংলাদেশি খাবার পরিবেশন করে দারুণ লাগছে। আশা করি সকলের পছন্দ হবে।

রাতের এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্র সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, মুম্বাইয়প্রবাসী বাংলাদেশি, কূটনৈতিক কোরের প্রতিনিধি, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য, উপহাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মাচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।