লন্ডনে বিক্ষোভের মুখে জিসিএমের বার্ষিক সভা

জিসিএমের বার্ষিক সভার সামনে বিক্ষোভের দৃশ্য
জিসিএমের বার্ষিক সভার সামনে বিক্ষোভের দৃশ্য

লন্ডনের ক্যাভেনডিস স্কয়ারে গ্লোবাল কোল ম্যানেজমেন্টের (সাবেক এশিয়া এনার্জি) বার্ষিক সাধারণ সভার সামনে এক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে প্রচণ্ড শীতের মধ্যে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ থেকে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

এক্সটিংকসন রেবেলিয়নের (Extinction Rebellion) কয়েকজন ভবনের মধ্যে প্রবেশ করে নিরাপত্তা পথে আঠা বা গ্লু দিয়ে নিজেদের গেটের সঙ্গে আটকে ফেললে পরিস্থিতি অস্থির হয়ে ওঠে। বিক্ষোভের কারণে নিরাপত্তা কর্মীরা ভবনের মূল প্রবেশ পথ পুরোপুরিভাবে আটকে দিলে অন্য শেয়ার হোল্ডারদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পক্ষে প্রক্সি শেয়ার হোল্ডাররাও বার্ষিক সভায় যোগ দিতে পারেননি। শেয়ার হোল্ডারদের দীর্ঘক্ষণ ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা যায়।

পরে স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশের বিশেষ দল এসে আঠা দিয়ে আটকানো তিনজনকে ছাড়িয়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গাড়িতে তুলে ভবনের পেছন দিক দিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়ি আটকে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকলে একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ তিনজন বিক্ষোভকারীকে চেরিংক্রস থানায় নিয়ে যায়।

বিক্ষোভে তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটি যুক্তরাজ্য শাখা, ফুলবাড়ী সলিডারিটি গ্রুপ, এক্সটিংকসন রেবেলিয়ন, রিক্লেইম দা পাওয়ার ও কেমব্রিজ জিরো কার্বন সোসাইটিসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন অংশ নিয়েছে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, জিসিএম বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কোনো প্রকার চুক্তি ছাড়াই ফুলবাড়ী কয়লা প্রকল্প দেখিয়ে লন্ডন শেয়ার মার্কেট থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে। বক্তারা জিসিএমকে একটা প্রতারক অফিস সর্বস্ব কোম্পানি হিসেবে আখ্যায়িত করে বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাদের সকল কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তারা ফুলবাড়ী প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতাদের নামে জিসিএম কর্তৃক মামলা দায়ের ও হয়রানির নিন্দা করেন। বক্তারা সম্প্রতি জিসিএমের সঙ্গে পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন অব চায়নার সমঝোতা চুক্তিকে বড় ভাইকে ডেকে এনে জোরপূর্বক প্রকল্প বাস্তবায়নের অপচেষ্টা বলে আখ্যায়িত করেন। তারা আরও বলেন, ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের মাধ্যমে ১ লাখ ৩০ হাজার পরিবারকে বাস্তুচ্যুত, ১৪ হাজার হেক্টর উর্বর কৃষি জমি ও ৫০ হাজার জলাশয় ধ্বংস করে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে দেওয়া যায় না। একই সঙ্গে বাংলাদেশের জন্য মাত্র ৬ শতাংশ অংশীদারত্বে ফুলবাড়ী চুক্তিতে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ নেই।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ড. আখতার সোবহান মাসরুর, মোস্তফা ফারুক, রুমানা হাশেম, শাহরিয়ার বিন আলী, ওয়ালি রহমান, গোলাম আকবর, মিজানুর রহমান, রিচার্ড সলি, সমরেন্দ্র দাস, রোমান প্যালুচ মাযাচনিক ও রহিমা খাতুন প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি