শিক্ষা-সহযোগিতা বিষয়ে প্রটোকল স্বাক্ষর

প্রটোকল স্বাক্ষর অনুষ্ঠান
প্রটোকল স্বাক্ষর অনুষ্ঠান

বাংলাদেশের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) ও তুরস্কের ইলদিজ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির মধ্যে শিক্ষা–সহযোগিতাবিষয়ক একটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইলদিজ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির কনফারেন্স হলে স্থানীয় সময় সকালে এই প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়।

ইলদিজ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির পক্ষে রেক্টর অধ্যাপক ড. বাহরি শাহিন ও মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির পক্ষে ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট কমোডর এম মুনির হাছান প্রটোকল স্বাক্ষর করেন। এ সময় ইস্তাম্বুলের বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, কনসাল, দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বাক্ষরের পর প্রটোকল বিনিময় করছেন বাহরি শাহিন ও এম মুনির হাছান
স্বাক্ষরের পর প্রটোকল বিনিময় করছেন বাহরি শাহিন ও এম মুনির হাছান

প্রটোকল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. বাহরি শাহিন বাংলাদেশের সফরকারী প্রতিনিধিদল ও ইস্তাম্বুলের বাংলাদেশের কনস্যুলেটের কর্মকর্তাদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যকার বিদ্যমান ঐতিহাসিক ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-সহযোগিতার মধ্য দিয়ে আগামী দিনগুলোতে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। বাহরি শাহিন ইলদিজ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, এটি ইস্তাম্বুলের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম এবং তুরস্কের তৃতীয় পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯১১ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানের। দুই দেশের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বিনিময়ের মাধ্যমে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান সাধনা ও গবেষণাচর্চাসমৃদ্ধ এবং পারস্পরিক সহযোগিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।

কমোডর এম মুনির হাছান বলেন, ইলদিজ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির সঙ্গে শিক্ষা-সহযোগিতাবিষয়ক প্রটোকল শুধু স্বাক্ষরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সহযোগিতার আরও সম্ভাব্য ক্ষেত্র চিহ্নিত করে এ প্রটোকলকে ফলপ্রসূ ও অর্থবহ করা হবে। তিনি মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, ১৯৯৮ সালে যাত্রা শুরু করা এ প্রতিষ্ঠানে সামরিক ও বেসামরিক দুই ধরনের শিক্ষার্থীরাই পড়াশোনা করতে পারেন। এখানে শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপ ও ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনা করেন। তিনি প্রটোকল স্বাক্ষরে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সহযোগিতার প্রশংসা করেন।

প্রটোকল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ইস্তাম্বুলের বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল, কনসাল, দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন
প্রটোকল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ইস্তাম্বুলের বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল, কনসাল, দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন

মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে প্রটোকল স্বাক্ষরের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এ প্রটোকল উদ্যোগের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অংশ হতে পেরে কনস্যুলেট ও ব্যক্তিগতভাবে তিনি গর্বিত। প্রটোকলের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান বিশ্বায়ন ও আত্মনির্ভরশীল যুগে জ্ঞাননির্ভর সমাজ, টেকসই উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা শিক্ষাবিষয়ক সহযোগিতা নিরন্তর ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে চলেছে। কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফল হিসেবে এ প্রটোকল স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-তুরস্কের বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও অটুট ও প্রসারিত করার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো।

উল্লেখ্য, শিক্ষা ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রটোকল দুই দেশের মধ্যকার শিক্ষা-সহযোগিতা গভীরতর করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে প্রযুক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং উদ্ভাবনী কৌশল বিনিময়ে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। বিজ্ঞপ্তি