মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে বসন্ত উৎসব উদ্যাপন
মেলবোর্নের আবহাওয়ার কোনো ঠিক নেই। সকালবেলা শীতের ভারী জ্যাকেট পরে বের হলেন অফিসের উদ্দেশে, অথচ দুপুরেই কটকটে রোদ। হয়তোবা বিকেলে আবার একপশলা বৃষ্টি। যার তুলনা করা যায় কোনো এক অভিমানী কিশোরী মনের সঙ্গে। চার ঋতুর দেশ অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি গ্রীষ্মকাল। অপরদিকে ষড়্ঋতুর বাংলাদেশে আগমন ঘটেছে ঋতুরাজ বসন্তের।
বাংলাদেশে প্রতিবছর পয়লা ফাল্গুনে জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত হয় বসন্তবরণ উৎসবের। বাংলাদেশের শহরগুলোতে নাগরিক যান্ত্রিক কোলাহলের ভিড়ে বসন্তের প্রাকৃতিক শোভা অনুভূত না হলেও গ্রামবাংলায় কিন্তু ঠিকই বসন্তের আনাগোনা শুরু হয়েছে। পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচূড়ার রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে প্রকৃতি।
মেলবোর্নে ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক, বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব মোনাশের পক্ষ থেকে আমরা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আয়োজন করেছিলাম বসন্তবরণ উৎসবের। মোনাশ ইউনিভার্সিটির দেন ক্যাম্পাসে গতকাল শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বরণ করা হয় বসন্ত। রং-বেরঙের শাড়ি, পাঞ্জাবি আর দেশীয় পোশাকে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের কারণে মোনাশের সি-১ থিয়েটার প্রাঙ্গণ ছিল রঙিন। ছিল দেশি স্বাদের খই, মুড়ি-মুড়কি আর রকমারি খাবার।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আহা আজি এ বসন্তে’ গানের দলীয় পরিবেশনার মাধ্যমে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এ ছাড়া বসন্তের বিভিন্ন গান পরিবেশন করে অনিন্দিতা, তমালিকা, নাহিদ, আশিক, অর্ণব ও মাসুম। শ্রুতিনাট্য ‘পাকা দেখা’ পরিবেশন করে সাজ্জাদ ও জেবা। অনুষ্ঠানে স্বাগত জানানো হয় মার্চ সেমিস্টারে ভর্তি হওয়া নতুন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের। নাহিদ সুলতানার প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটি পায় ভিন্ন মাত্রা। এরপর ভোজনপ্রিয় বাঙালির জন্য ছিল নানা ধরনের খাবারের আয়োজন।
ফেব্রুয়ারির ২৫-২৮ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে মোনাশ ইউনিভার্সিটির ওরিয়েন্টেশন উইক। এতে থাকবে বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের স্টল। স্টলে নবায়ন করা হবে ক্লাবের সদস্যদের তালিকা। নতুন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্লাবের কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এ ছাড়া এ বছর এপ্রিলে আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা হবে বৈশাখী উৎসবের।
...
মো. আবুল হাসনাত নোমান: প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব মোনাশ ও পিএইচডি গবেষক, মোনাশ ইউনিভার্সিটি, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া। ইমেইল: <[email protected]>