মরুর বুকে বাংলাদেশকে অনুভব

ওমানের সালালাহপ্রবাসী বাংলাদেশিদের ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
ওমানের সালালাহপ্রবাসী বাংলাদেশিদের ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন

‘প্রভাতফেরি, প্রভাতফেরি/ আমায় নেবে সঙ্গে,/ বাংলা আমার বচন,/ আমি জন্মেছি এই বঙ্গে।’—আল মাহমুদ।

বাংলাদেশের প্রবাসী মানুষগুলোর প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণের সুযোগ আসে না বললেই চলে। বুকের গভীরে কলকল ধ্বনিতে একটা ভালোবাসার নদী বয়ে চলে।

নদীটির নাম বাংলাদেশ।

ওমানের সালালাহপ্রবাসী বাংলাদেশিদের ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
ওমানের সালালাহপ্রবাসী বাংলাদেশিদের ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন

বিশেষ দিনগুলোতে বিদেশ-বিভুঁইয়ে বসে নিত্যদিনের কাজের ফাঁকে মন পড়ে থাকে সুদূরের সেই শ্যামলিমামাখা দেশটায়। যেখানে আগুনমাখা ফাগুন জাগে কৃষ্ণচূড়ার শাখে। যেখানে অশোক আর কিংশুকের ছোঁয়ায় প্রকৃতি এখন লাল। আর সেই লাল ছুঁয়ে যায় পলাশের ফুলে।

এমন সুন্দর এক দেশে জন্ম নিয়েও ভাগ্যগুণে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের ওমানপ্রবাসী। ২১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে আমরা সালালাহপ্রবাসী বাংলাদেশিরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী একত্র হই ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের উদ্দেশ্যে। মহতী এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হয় বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব সালালাহর উদ্যোগে।

বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব সালালাহ শাখার উদ্যোগে স্থানীয় সিরাজ ভিলার চত্বরে এই প্রথম সর্বস্তরের বাংলাদেশি প্রবাসীদের সাবলীল অংশগ্রহণে যথাযথ মর্যাদায় মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়।

ওমানের সালালাহপ্রবাসী বাংলাদেশিদের ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
ওমানের সালালাহপ্রবাসী বাংলাদেশিদের ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন

ক্লাবের কার্যকরী পরিষদের কর্মকর্তারা সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ ছাড়া স্থানীয় সম্মানিত ব্যক্তি, নারী ও শিশু এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় পরিবেশিত হয় একুশের গান ও কবিতা। কালো ব্যাজ ধারণ করে ভাবগম্ভীর পরিবেশে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ভাষা আন্দোলনে শহীদ ও ভাষাসৈনিকদের জন্য এবং বাংলাদেশের সার্বিক সমস্যার অবসান ও উন্নয়নের জন্য দোয়ার আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে যাঁরা প্রাণ হারান এবং আহত হয়েছেন, তাঁদের জন্য আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করে দোয়া ও নিহত লোকজনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।

ক্লাবের সম্পাদক ডা. মকসুদ ঈসা এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান পালন করে যাচ্ছে। মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এই প্রবাস জীবনে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সুস্থ চর্চা ও তা ধারণ করা। সবচেয়ে বড়কথা হলো, অনুষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে এই প্রবাসে অল্প কিছু সময়ের জন্য হলেও আমরা খুঁজে পাই বাংলাদেশকে। তিনি সামনের দিনগুলোতে এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত ও সবার সহযোগিতা কামনা করেন। ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মাদ আলম আগত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

ওমানের সালালাহপ্রবাসী বাংলাদেশিদের ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
ওমানের সালালাহপ্রবাসী বাংলাদেশিদের ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন

সবার আন্তরিক অংশগ্রহণে ও দেশি স্বাদের খাবারে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও মরুর বুকে বসে বাংলাদেশকে অনুভব করতে পারলাম। সবকিছুর জন্য বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাব সালালাহর সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।