কূটনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে সংবর্ধনা

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথিরা
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথিরা

ব্রুনেই দারুসসালামে উৎসাহ-উদ্দীপনায় উদ্‌যাপিত হয়েছে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। দেশটির বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদ্‌যাপন করা হয়।

এ উপলক্ষে গত ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানী বন্দর সেরি বেগওয়ানের এম্পায়ার হোটেলের ইন্দিরা সমুদ্র হলে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দেশটির যুব, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রী ইয়াং বারহোরমাট অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল দাতো পাদুকা সেরি হাজি আমিনুদ্দিন ইহসান বিন পেহিন ওড়াং কায়া সাইফুল মুলক দাতো সেরি পাদুকা হাজি আবেদিন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি, হাইকমিশনার ও তাঁর সহধর্মিণী কেক কাটেন
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি, হাইকমিশনার ও তাঁর সহধর্মিণী কেক কাটেন

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) মাহমুদ হোসেন তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ বিনির্মাণে আত্মত্যাগী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি পাওয়ায় উপস্থিত সবাইকে অভিনন্দন জানান। তিনি আরও উল্লেখ করেন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ও উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠা দেশের জন্য একটি মাইলফলক। এ ছাড়া তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অগ্রসরমাণ বাংলাদেশের রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে ব্রুনেই ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে শীর্ষ পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় ভ্রমণ সহযোগিতাসহ দূতাবাসের বিভিন্ন কর্মসূচির ওপর আলোকপাত করেন।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন বাংলাদেশ থেকে আগত ও আনিসুল ইসলাম হিরুর নেতৃত্বে পরিচালিত সৃষ্টি কালচারাল সেন্টারের শিল্পীরা। সংগীত পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী স্বপ্নিল সজীব। উপস্থিত অতিথিরা সাংস্কৃতিক দলের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা উপভোগ করেন।

বক্তব্য দিচ্ছেন মাহমুদ হোসেন
বক্তব্য দিচ্ছেন মাহমুদ হোসেন

অনুষ্ঠানে দেশটিতে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, ব্রুনেইয়ের পররাষ্ট্রসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় চার শ আমন্ত্রিত অতিথি এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সান্ধ্যভোজে দূতাবাসের আয়োজনে মুখরোচক বাংলাদেশি খাবার পরিবেশন করা হয়। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত সব অতিথির মধ্যে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এর আগে গত ২৬ মার্চ সকাল সাড়ে নয়টায় হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হাইকমিশনার মাহমুদ হোসেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে শুদ্ধ সুরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে দিনের কর্মসূচি সূচনা করেন।

পরে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে দূতাবাসের অভ্যর্থনা কক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ, মুক্তিসংগ্রামের দীর্ঘ পরিক্রমায় আত্মত্যাগী সব শহীদসহ বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের উত্তরোত্তর উন্নয়ন কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। এরপর হাইকমিশনের কর্মকর্তারা দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রেরিত বাণী পাঠ করেন। মুক্ত আলোচনায় হাইকমিশনার মাহমুদ হোসেন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ ও দিবসটির তাৎপর্য আলোকপাত করেন।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে গত ২৯ ও ৩০ মার্চ আরও দুটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সৃষ্টি কালচারাল সেন্টারের শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন। সংগীত পরিবেশন করেন স্বপ্নিল সজীব ও সংগীতশিল্পী সোমনুর মনির কোনাল। বিজ্ঞপ্তি