অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ওন্টারিওর লেফটেন্যান্ট গভর্নর
টরন্টোয় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
কানাডার টরন্টো শহরে বাংলাদেশের নতুন কনস্যুলেটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করা হয়েছে। কনস্যুলেটের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি। গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) কনস্যুলেট উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে ওন্টারিওর লেফটেন্যান্ট গভর্নর এলিজাবেথ ডাউডসওয়েল সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
টরন্টোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদের স্বাগত বক্তব্যের পর শাহরিয়ার আলম আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কনস্যুলেটের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। বক্তব্য দেন এলিজাবেথ ডাউডসওয়েল ও দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান।
এলিজাবেথ ডাউডসওয়েল তাঁর বক্তব্যে টরন্টোতে বাংলাদেশের কনস্যুলেটের উদ্বোধনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, কোনো কনস্যুলেটের উদ্বোধন একবারই হয়ে থাকে। ফলে এমন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে তিনি আনন্দিত বোধ করছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের নতুন কনস্যুলেট ওন্টারিওতে ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশি অভিবাসীদের সঙ্গে কার্যকর সংযোগ সৃষ্টিতে অবদান রাখবে। তিনি বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশ ও উন্নত দেশে রূপান্তরিত হওয়ার প্রচেষ্টা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কার্যকর উদ্যোগ ও নারী ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের সফলতার বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দান ও মানবিক সাহায্য প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, টরন্টোতে বাংলাদেশের কনস্যুলেট স্থাপনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের একটি প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ঘটল। টরন্টোর বাংলাদেশ কনস্যুলেট ও এর কনস্যুলার অধিভুক্ত প্রদেশসমূহে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণ ও কনস্যুলার সেবা প্রদানের পাশাপাশি বাংলাদেশি-কানাডীয় নাগরিক বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ সৃষ্টি ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে কাজ করে যাবে। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই কনস্যুলেট চালু হওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং নবসৃষ্ট কনস্যুলেটের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিকতা ও পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ জানান।
শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, বাংলাদেশ ও কানাডার সম্পর্ক ঐতিহাসিক ও সময় পরীক্ষিত। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে কানাডার ভূতপূর্ব প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোকে ‘স্বাধীনতা সম্মাননা’ প্রদান করতে পারায় সম্মানিত বোধ করেন। তিনি মার্চ মাসকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যের মাস ঘোষণা করায় ওন্টারিও প্রাদেশিক সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়নের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কেক কাটা হয়। ওন্টারিও প্রাদেশিক সংসদের সদস্য, কূটনীতিক, প্রাদেশিক সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বুদ্ধিজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ব্যবসায়ী, ছাত্র ও বাংলাদেশ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে এলিজাবেথ ডাউডসওয়েল শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে এক একান্ত বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে তাঁরা বাংলাদেশ ও কানাডার দীর্ঘ বন্ধুত্ব, রোহিঙ্গা সমস্যা, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।
এ ছাড়া দিনের প্রথম ভাগে শাহরিয়ার আলম শেপার্ড অ্যাভিনিউ ইস্টে অবস্থিত বাংলাদেশের নতুন কনস্যুলেট অফিসে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার মিজানুর রহমান, কনসাল জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদসহ বাংলাদেশ হাইকমিশন ও নতুন কনস্যুলেটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সাংবিধানিক রাজতন্ত্র অনুযায়ী বৃটেনের রানি এলিজাবেথ ২ কানাডার রাষ্ট্রপ্রধান এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নর প্রদেশে রানির প্রতিনিধিত্ব করেন। সাংবিধানিকভাবে লেফটেন্যান্ট গভর্নর প্রদেশের প্রধান ও প্রিমিয়ার প্রাদেশিক সরকার প্রধান হিসেবে কাজ করেন। ওন্টারিও প্রদেশে রানি এলিজাবেথ ২-এর প্রতিনিধি ও প্রদেশের সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপনে লেফটেন্যান্ট গভর্নর এলিজাবেথ ডাউডসওয়েলের উপস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি বিরল সম্মান। বিজ্ঞপ্তি