লন্ডনের আদালতে মামলার শুনানি

আসামিদের সঙ্গে সংহতি জানাতে অনেক সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ী বিচারকক্ষের ভেতর ও বাইরে উপস্থিত ছিলেন
আসামিদের সঙ্গে সংহতি জানাতে অনেক সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ী বিচারকক্ষের ভেতর ও বাইরে উপস্থিত ছিলেন

জিসিএমের (সাবেক এশিয়া এনার্জি) বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে লন্ডনে তিনজনের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল (১০ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সিটি অব লন্ডন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে বিচারের কাঠগড়ায় তোলা হয় এক্সটিংশন রেবেলিয়নের এমি ও সুলামিথকে। অসুস্থতাজনিত কারণে এনজেলা হাজির না হতে পারায় বিচারক তাঁর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন।

শুনানি চলাকালে মামলার আসামিদের সঙ্গে সংহতি জানাতে অনেক সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ী বিচারকক্ষের ভেতর ও বাইরে উপস্থিত ছিলেন। বিচারকক্ষ পরিপূর্ণ হয়ে গেলে কেউ কেউ মেঝেতেই বসে পড়েন। শুনানি শেষে বিচারক জিসিএমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সমাবেশকে মানবাধিকারের সঙ্গে যুক্ত বলে মন্তব্য করে আসামিদের প্রতি সহানুভূতি দেখান এবং আসামিদের জামিন দিয়ে আগস্ট পর্যন্ত মামলা মুলতবি ঘোষণা করেন।

তেল–গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির যুক্তরাজ্য শাখার সদস্যসচিব ড. আখতার সোবহান মাসরুর, ইউরোপ শাখার আহ্বায়ক ও বাসদের (মার্ক্সবাদী) মোস্তফা ফারুক ও মিজানুর রহমান, সিপিবির শাহরিয়ার বিন আলী, ফুলবাড়ী সলিডারিটি গ্রুপের ড. রুমানা হাশেম ও এনসিবিডির জাহানারা রহমান প্রমুখ সংহতি জানাতে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সংহতিতে আরও অংশ নেয় এক্সটিংশন রেবেলিয়ন ও রিক্লেইম দ্য পাওয়ারসহ বিভিন্ন সংগঠন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রতিবাদে গত ২৮ ডিসেম্বর লন্ডনের ক্যাভেনডিস স্কয়ারে জিসিএমের বার্ষিক সাধারণ সভার সামনে বিক্ষোভ চলাকালে এক্সটিংশন রেবেলিয়নের তিনজন কর্মী নিজেদের হাত আঠা বা সুপার গ্লু দিয়ে প্রবেশপথের সঙ্গে আটকে দিলে জিসিএমের বার্ষিক সভায় শেয়ারহোল্ডারদের অনেকে ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। ফলে জিসিএমের বার্ষিক সভা পণ্ড হয়ে যায়। পরে পুলিশের বিশেষ দল তাঁদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

জিসিএম বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কোনো প্রকার চুক্তি ছাড়াই ফুলবাড়ী কয়লা প্রকল্প দেখিয়ে লন্ডন শেয়ার মার্কেট থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে। ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা হলে হাজার হাজার পরিবার বাস্তুচ্যুত হবে, ১৪ হাজার হেক্টর উর্বর কৃষিজমি ও হাজার হাজার জলাশয় ধ্বংস হবে। বাংলাদেশের জন্য মাত্র ৬ শতাংশ অংশীদারত্বে ফুলবাড়ী চুক্তিতে বাংলাদেশের কোনো অর্থনৈতিক স্বার্থ নেই। ২০০৬ সালে ফুলবাড়ীর জনগণের প্রতিবাদকালে ৩ জন নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে তদানীন্তন এশিয়া এনার্জি বাংলাদেশ থেকে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়। সম্প্রতি জিসিএম পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন অব চায়নার সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করে ফুলবাড়ী থেকে কয়লা তোলার চেষ্টা করছে। বিজ্ঞপ্তি