ভার্জিনিয়ায় প্রভাতি ও বৈশাখী মেলা
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার আর্লিংটন গেটওয়ে পার্কে হয়ে গেল মেট্রো ওয়াশিংটন ডিসির বৃহৎ বৈশাখী মেলা। ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলির উদ্যোগে ও আবু রুমির পরিচালনায় আয়োজিত বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে এবারের আকর্ষণ ছিল বর্ষবরণ প্রভাতি ও বৈশাখী মেলা। নববর্ষকে স্বাগত জানানোর জন্য পয়লা বৈশাখ আয়োজন করা হয় বর্ষবরণ প্রভাতি। নাচ, গান ও কবিতা নিয়ে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায় সংস্কৃতিপিপাসুদের।
উল্লেখ্য, আমেরিকায় নিউইয়র্কের পরে এই প্রথম ভার্জিনিয়ায় বর্ষবরণ প্রভাতি অনুষ্ঠিত হলো।
দুপুরে বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় মেরিল্যান্ড, ভার্জিনিয়ার ও ওয়াশিংটন ডিসির শিল্পীরা ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে আগত ও প্রবাসে বসবাসরত বিভিন্ন শিল্পী গানে গানে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন। তাঁদের পরিবেশনা ছিল অতুলনীয়। বাংলাদেশ থেকে আগত যেসব শিল্পী অংশগ্রহণ করেন, তাঁরা হলেন মেহের আফরোজ শাওন, শাহ মাহবুব, জিন্নাত আরা মুনা, আজিজুল হাকিম, জিনাত হাকিম ও অনিমা ডি’কষ্টা। মেলায় ছিল হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের একটি স্টল। সেখানে মেহের আফরোজ শাওন ক্রেতাদের বইয়ে অটোগ্রাফ দেন। এটা ছিল মেলার এক বিশেষ আকর্ষণ। একপর্যায়ে ভিড়ের কারণে শাওনের সুরক্ষার জন্য ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলি কর্তৃপক্ষ সেখানে সিকিউরিটি নিয়োগ করতে বাধ্য হয়।
বৈশাখী মেলাটিকে বাংলার পরিবেশ তৈরি করতে নাগরদোলা ও গ্রামবাংলার ঢেঁকি দিয়ে সাজানো হয়েছিল। যাতে এই প্রবাসের মাটিতে প্রবাসীদের যেন মনে হয়, তারা ছোট্ট এক বাংলাদেশে মাটিতে আছেন এবং বাংলার নববর্ষ উদ্যাপন করছেন। এর মাধ্যমে বৈশাখী মেলাকে মনে হয়েছিল যেন বাংলাদেশের এক টুকরো অংশ। এ ছাড়া রকমারি পোশাক, গয়না ও বাংলাদেশি হরেক রকমের খাবারের দোকানগুলোও ছিল মেলার অন্যতম আকর্ষণ।
স্থানীয় পুলিশপ্রধানসহ অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মেলায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বাংলা কমিউনিটিকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
আয়োজক সংগঠন ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলির প্রেসিডেন্ট আবু রুমি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা বৈশাখী মেলা এমনভাবে সাজাব, যা প্রবাসে আর কোথাও দেখা যায়নি। প্রবাসীরা যেন মনে করেন, দেশের বাইরে থেকেও বাংলাদেশের মাটিতেই তাঁরা নববর্ষ উদ্যাপন করছেন। তাঁদের যেন মনে হয়, সত্যিই এক টুকরো বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শুভেচ্ছা বাণী পাওয়ার পর আমাদের উদ্দীপনা আরও বেড়ে গেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুষ্ঠান করতে আরও উৎসাহিত করবে আমাদের।’
দীর্ঘ ১১ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভার্জিনিয়ায় ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলি প্রতিবছর সর্ববৃহৎ পিঠা উৎসব ও বৈশাখী মেলা আয়োজন করে আসছে। তাদের লক্ষ্য যাতে প্রবাসের মাটিতে আমাদের নতুন প্রজন্ম বাংলার সংস্কৃতি ধরে রাখতে পারে এবং ভুলে না যায় বাংলার সংস্কৃতি।