বাংলাদেশ-তুরস্ক বাণিজ্য নিয়ে ইস্তাম্বুলে সেমিনার

বাংলাদেশ-তুরস্ক বাণিজ্য নিয়ে ইস্তাম্বুলে সেমিনার
বাংলাদেশ-তুরস্ক বাণিজ্য নিয়ে ইস্তাম্বুলে সেমিনার

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ‘বাংলাদেশ-তুরস্ক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। তুরস্কের বাংলাদেশ দূতাবাস ও দেশটির অন্যতম বৃহৎ পরিকল্পিত অর্থনৈতিক এলাকা হাসিয়াড শিল্পাঞ্চল কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে গত শুক্রবার (১২ এপ্রিল) এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে তুরস্কের ৫০টি কোম্পানির প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা অবকাঠামো নির্মাণ, জ্বালানি, গাড়ি নির্মাণশিল্প, টেক্সটাইল ও তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে শুরু করে আমদানি রপ্তানির সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যবসায় নিয়োজিত রয়েছেন।

উল্লেখ্য, পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চল হাসিয়াড তুরস্কের অন্যতম বৃহৎ শিল্পাঞ্চল। এখানে ছোট–বড় ১৩৫ কোম্পানিতে প্রায় ৮০ হাজার কর্মী কাজ করছেন। তুরস্কের বার্ষিক ১৬০ বিলিয়ন বাণিজ্যের ৬ শতাংশে হাসিয়াডের অবদান রয়েছে।

সেমিনারে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দীকী তাঁর বক্তব্যে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা এবং তার পেছনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত ভূমিকা সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি বাংলাদেশের ভৌগোলিক কৌশলগত গুরুত্ব, সাম্প্রতিক সময়ের আর্থসামাজিক অর্জন ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের স্বীকৃতি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে বিদ্যমান উষ্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য উভয় পক্ষের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান। বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হয়ে বিদ্যমান বাণিজ্যবান্ধব পরিবেশের সুযোগ নেওয়ার জন্য তিনি তুর্কি ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (রাজনৈতিক) মো. রইস হাসান সরোয়ার তাঁর সমাপনী বক্তব্যে অন্য উদীয়মান অর্থনীতির সঙ্গে বিনিয়োগ-সুবিধা ও প্রণোদনার আলোকে বাংলাদেশের অগ্রগামিতার কথা তুলে ধরেন। তিনি দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনার খাতগুলো চিহ্নিত করেন।

হাসিয়াড শিল্পাঞ্চলের সভাপতি হুসানই বোজদা শিল্পাঞ্চলের সক্ষমতা ও গুরুত্ব বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তিনি একটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ দল সঙ্গে নিয়ে দ্রুত বাংলাদেশ সফরের পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন। তিনি এ উদ্দেশ্যে সংগঠিত হওয়ার জন্য তাঁর সদস্যেদের প্রতি আহ্বান জানান।

সেমিনারে তুরস্কে এ বছর আইসিটি বিষয়ে একটি সেমিনার আয়োজনের বিষয়ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এ ছাড়া তুর্কি-বাংলাদেশ বিষয়ক ব্যবসা পরিষদের চেয়ারম্যান মিস লরা গোক বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রযাত্রার বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ-তুরস্কের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আগামী দিনে আরও শক্তিশালী হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সেমিনারে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন আশা প্রকাশ করেন, এই সেমিনার বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল বাজার ও অর্থনীতির বিষয়ে তুরস্কের বেসরকারি খাতের মনোযোগ আকর্ষণে সহায়ক হবে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে প্রত্যক্ষভাবে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত দুজন তুর্কি ব্যবসায়ী তাঁদের অর্জিত ইতিবাচক অভিজ্ঞতা সবার সামনে তুলে ধরেন। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অর্থনৈতিক অগ্রসরতা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিষয়ে ৩টি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

উল্লেখ্য, দূতাবাসের উদ্যোগে সামনের দিনগুলোতে তুরস্কের বিভিন্ন শহরে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ শীর্ষক আরও সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে, যা দুই দেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিকাশে সহায়তা করবে বলে আশা করা যায়। বিজ্ঞপ্তি