যখন ওদের বিচার হবে

বাংলা বছরের শেষ দিন 

চারদিকে প্রলয়
মিছিল হইচই আর্তনাদ
কাজে মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ নেই
বাঁধন, ইয়াসমিন, তনু, নুসরাত
মিছিলের প্রথম সারিতে
সঙ্গে লক্ষ কোটি নারী যোগ হয়েছে
আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেনের মতো
নারী স্বাধীনতার দেশের নারীরাও।

তাদের স্লোগানে কেঁপে উঠছে পানি
ফেটে চৌচির মাটি
এমন ভারী হয়েছে বাতাস
নিশ্বাস নেওয়া কষ্টকর।
স্লোগানগুলো কানের পর্দায় নয়
হৃদয়দুয়ারে শক্ত করে আঘাত হানে
প্রতিধ্বনিত হয় বারবার
আমরা ধর্ষিতা, আমরা নির্যাতিতা, আমরা শব।
আমরা বিচার চাই
ধর্ষকের বেঁচে থাকার অধিকার নাই
খুনিদের রক্তভেজা লাল হাত
মানবকল্যাণকর নয়, তাদের বিচার চাই।
তোমরা পিছে হেঁটো না নারী
ভয় পেয়ো না জানোয়ার
হোক ওরা ধর্ষক, খুনি
কিংবা নিকৃষ্টতম প্রাণী।
আমরা প্রাণ দিয়েছি তোমাদের মঙ্গলের জন্য
সুযোগ এখন তোমাদের হাতে
ব্যবহার করো
বিচারের দাবি নিয়ে এগিয়ে চলো
বিচার ওদের হতে হবেই
আজ হোক আর কাল হোক।
ওদের আঘাত করো
একবার, দুবার, তিনবার
প্রয়োজনে বারবার।
তারপরও
এ দেশ, এ সমাজ, এ বিশ্ব
নারীদের মানুষের সম্মান নিয়ে
বেঁচে থাকার উপযুক্ত করো।
ওদের বিচার করো।
ওদের বিচার করো।

রাত পোহালেই শুরু হবে নতুন বছর
তাকে বরণ করতে পথে পথে
হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা
নতুন বছরে আমাদের অঙ্গীকার
যেন হয় ওদের বিচার।

আমরা মানুষ
স্বপ্ন আঁকি, স্বপ্ন বেচি
আশায় বুক বাঁধি।
নতুন বছর নতুন আশা
বিচার হবে
সব অপরাধের
ফাঁসির দড়িতে ঝুলবে
সিরাজ তার
চামচিকাদের সঙ্গে নিয়ে।
মুক্ত হবে
জীর্ণশীর্ণ সমাজব্যবস্থা
থাকবে না কোনো
মৌলবাদ সাম্প্রদায়িকতা
দূর হবে মনের
সকল কুটিলতা।

শিকেয় তোলা বোধবুদ্ধিটা
আসবে নেমে
নিজে নিজে
পৌঁছে যাবে ঠিক
ঘরে ঘরে জনে জনে
বাসবে সবাই ভালো
কাছের দূরের সব মানুষকে।
যখন ওদের বিচার হবে।

(১৩ এপ্রিল ২০১৯)

খুরশীদ শাম্মী: টরন্টো, কানাডা।