প্যারিসে বিসিএফের ঈদ উৎসব
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে দেশটির সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত বাংলাদেশি অনলাইন সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন ফ্রান্সের (বিসিএফ) উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদ উৎসব। গত মঙ্গলবার (৪ জুন) প্যারিসের একটি পার্কে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। উৎসবে প্রবাসী অনেক বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করেন। গত বছরও একই স্থানে সংগঠনটি ঈদ উৎসবের আয়োজন করে।
স্বজনবিহীন অসংখ্য বাংলাদেশির বসবাস এই প্যারিস শহরে। কর্মস্থল আর বাসা—এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ তাদের জীবন। স্বজন-বান্ধবের মধুর সম্পর্কে গড়া বাঙালিয়ানা প্রবাসে এসে মুখ থুবড়ে পড়ে। প্রবাসজীবন হয় একাকিত্বের।
ফ্রান্সে পরিবার নিয়ে বসবাস করা বাংলাদেশির সংখ্যা খুব বেশি নয়। এক যুগ আগেও এ সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। গত কয়েক বছরে এ অবস্থা পাল্টিয়েছে। বাংলাদেশিদের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, পরিবারের সংখ্যাও তেমনি বাড়ছে ধীরে ধীরে। ব্যাচেলরের পাশাপাশি পরিবারসহ থাকা বাংলাদেশির সংখ্যা কম নয়।
ঈদের দিন বিকেলের ঈদ উৎসবটি যেন আবহমান বাঙালির একটি বর্ণিল উৎসবে পরিণত হয়। বাসা থেকে রান্না করে আনা বিরিয়ানি, রোস্ট, রেজালা, সেমাই, নুডলস, মিষ্টি, পানীয়—কী ছিল না এই আয়োজনে। মায়ের মমতা আর বোনের স্নেহের পরশমাখা ঘরোয়া রান্নার আয়োজন দিয়ে উপস্থিত কয়েক শ অভ্যাগতকে আপ্যায়িত করা হয়েছে।
বৃষ্টিবিঘ্নিত বিকেলটি বাংলাদেশি আবালবৃদ্ধবনিতার কলকাকলিতে বাঙ্ময় হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানে ছিল নাচ, গান আর খেলাধুলার আয়োজন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন তুহিনা আক্তার।
বিসিএফের অ্যাডমিন ও নির্বাহী পরিচালক এম ডি নুর বলেন, ‘এ দেশে অসংখ্য বাংলাদেশি পারিবারিক পরিমণ্ডলের বাইরে বসবাস করে। তারা এখানে মেসের মতো করে ব্যাচেলর জীবনযাপন করে। তাদের ভেতরে একধরনের বান্ধববিচ্ছিন্নতার শূন্যতা বিরাজ করে। বাবা-মা-ভাই-বোন ও আত্মীয়পরিজন থাকে হাজার হাজার মাইলের দূরত্বে। এই শূন্যতাকে ক্ষণিকের জন্য হলেও আমরা একটি উপলক্ষকে সামনে রেখে ঈদ উৎসবের আয়োজন করেছি।’ এ অনুষ্ঠানে বিসএফের নির্বাহী সদস্য যাঁরা প্যারিসে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন, তাঁরা ঈদের আনন্দকে সবার মধ্যে সঞ্চালিত করার প্রয়াসে বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের খাবার রান্না করে নিয়ে এসে উৎসবমুখর পরিবেশে সবার মধ্যে আপ্যায়ন করেন।
এম ডি নুর আরও বলেন, ‘আসলে এখানকার পরিবারগুলো অপেক্ষা করে এমন একটি দিনের জন্য। আমরা যারা প্যারিস ও এর আশপাশে বসবাস করছি, তারা পারস্পরিক দেখা-সাক্ষাৎ, কুশল বিনিময়, সুখ-দুঃখের নানা ভাবের আদান-প্রদান করতে পারি। এ জন্য এটি একটি জনপ্রিয় উৎসবে পরিণত হয়েছে।’