রিয়াদে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে ব্রিফিং

রিয়াদে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের ব্রিফিং
রিয়াদে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের ব্রিফিং

সৌদি আরবে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাজধানী রিয়াদের র‍্যাডিসন হোটেলে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ সহযোগিতা কামনা করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ। ব্রিফিংয়ে রিয়াদে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের প্রায় ৬০ জন রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন গোলাম মসীহ
ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন গোলাম মসীহ

রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, বাংলাদেশ প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে। কক্সবাজারের বিশাল এলাকায় তাদের জন্য আশ্রয়ণ ও তিন বেলা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিকতা প্রদর্শন করে তাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল দেশে ১২ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দেওয়া ও খাবারসহ অন্য সাহায্য–সহযোগিতা প্রদান বিরাট চ্যালেঞ্জের বিষয়।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনে রেজল্যুশন গ্রহণ করা হয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও বিষয়টি অনেকবার আলোচিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক আবাসিক প্রতিনিধি খালেদ খলিফা
ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক আবাসিক প্রতিনিধি খালেদ খলিফা

গোলাম মসীহ বলেন, মিয়ানমার ইতিমধ্যে তাদের দেশের নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করা সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না। দেশটি বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে চুক্তি বাস্তবায়ন দীর্ঘায়িত করছে এবং চুক্তি বাস্তবায়নে পরিষ্কারভাবে অনীহা প্রকাশ করছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ অসহযোগিতা করছে বলে মিয়ানমার অপপ্রচার চালাচ্ছে, যা কোনোভাবেই সঠিক নয়।

তিনি রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান। যার মধ্যে রোহিঙ্গাদের দ্রুত নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে নেওয়া এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশ পূর্ণ বাস্তবায়ন করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে।

ব্রিফিংয়ে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ
ব্রিফিংয়ে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ

গোলাম মসীহ অবিলম্বে সব রোহিঙ্গা নাগরিকদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান এবং এ ব্যাপারে সব কূটনীতিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

আরও বক্তব্য দেন জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক আবাসিক প্রতিনিধি খালেদ খলিফা। তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।

ব্রিফিংয়ে উপস্থিত রাষ্ট্রদূতেরা বাংলাদেশের উদ্যোগের বিষয়ে স্বাগত জানান এবং এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি