মন্ট্রিয়েলে বাংলাদেশিদের কানাডা দিবস উদ্যাপন
গত সোমবার (১ জুলাই) উদ্যাপিত হলো কানাডার ১৫২তম জন্মদিন। প্রতিবছরের মতো এবারও দেশটির মন্ট্রিয়েলে বসবাসরত বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন কমিউনিটির নতুন প্রজন্ম যথাযথ মর্যাদায় উদ্যাপন করেছে কানাডা ডে। কানাডা সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশি সংগঠন ন্যাশনাল বাংলাদেশি কানাডিয়ান কাউন্সিলের (এনবিসিসি) উদ্যোগে মন্ট্রিয়েলের পার্ক এক্সটেনশনে দিবসটি উদ্যাপন করা হয়।
দিনটি কানাডাবাসীর জন্য ছিল সত্যিই আনন্দঘন মুহূর্ত। বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মের জন্যও ছিল সত্যিকার অর্থেই যেন নতুন কোনো কিছুর আবিষ্কার। বিশেষ করে বাংলাদেশি-কানাডীয়রা সপরিবার অংশগ্রহণ করে অনুষ্ঠানটিকে সার্থক করে তোলে। কানাডার মূল সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মদের নতুন দিগন্ত রচনা করার আশ্বাস দিয়ে একটি সময়োপযোগী দায়িত্ব পালন করে সব মহলেরই প্রশংসা কুড়িয়েছে।
পার্ক এক্সের মার্শে প্রভিগোর বিশাল মাঠে সব বর্ণ ও জাতির মিলনমেলা উৎসবে পরিণত হয়। মন্ট্রিয়েলের বিভিন্ন অঞ্চলের অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তির পদচারণে উৎসবটি যেন ভিন্ন মাত্রা পায়। বাংলা, হিন্দি ও কানাডীয় সংগীতের তালে উৎসবস্থল হয়ে ওঠে আরও প্রাণবন্ত।
ছোট মণি ও কিশোর–কিশোরীদের নিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় কানাডার জাতীয় সংগীত লাইভ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে দিনের অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। এরপর ছোট মণিদের সঙ্গে নিয়ে এনবিসিসির যুব দূত সামিহা হোসেন ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেরিত দূত কানাডা ডের কেক কেটে উৎসবের সূচনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন কমিউনিটির নতুন প্রজন্মের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখে উপস্থিত সবাই প্রশংসা করেন। ছোট ও বড়দের গালে ম্যাপল লিফের টাট্টু লাগানোর হিড়িক ছিল দেখার মতো। একদিকে গানের মূর্ছনা, অন্যদিকে হটডগের জন্য দীর্ঘ লাইন, ছোট ছেলেমেয়েদের চিত্রাঙ্কন ও কানাডা কুইজ পর্বের প্রতিযোগিতা। আর চারদিকে বিশাল আকারের কানাডার পতাকা ও ছোট–বড় সবার হাতেই লাল ম্যাপল পাতার পতাকার বাণী। ছোটদের হাতে লাল–সাদা বেলুন আর গালে ম্যাপল লিফের টাট্টু সত্যিকার অর্থেই পার্ক-এক্সকে করে তোলে কানাডার একটি প্রকৃত অংশীদার। সবকিছু মিলিয়ে অপূর্ব একটি পরিবেশ তৈরি হয়।
উপস্থিত অনেকই মন্তব্য করেন, এ ধরনের আয়োজন তাঁরা আর কখনো পার্ক-এক্সটেনশনে দেখেননি। তাৎক্ষণিকভাবেই বহু অতিথি এ ধরনের একটি পরিকল্পনা নেওয়ার জন্য এনবিসিসির উদ্যোগকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। আগামী বছরের একই দিনে এই দিবসটিকে আরও বড় পরিসরে পালন করার জন্য সহায়তা দেওয়ার আশা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। বাণী পাঠ করেন তাঁর প্রেরিত দূত। দিনটিকে সব কমিউনিটির সমন্বয়ে উদ্যাপনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এনবিসিসিকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। এনবিসিসির সভাপতি ও কানাডা ডে উৎসব পার্ক-এক্সের কো-অর্ডিনেটর মনির হোসেন সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামী বছর এই দিনটি আরও ব্যাপকভাবে পালনের আশা প্রকাশ ও এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
পার্ক-এক্সটেনশনে কানাডা দিবস উদ্যাপনের খবর বিশেষ গুরুত্ব সহকারে দেশটির সিটিভি টেলিভিশনসহ স্থানীয় মূলধারার পত্রপত্রিকা প্রচার করে।